এক নজরে ‘কাঁঠাল (Kathaal)’ মুভি
মুভি: কাঁঠাল (Kathaal)
ধরণ: Satrical Comedy drama
পরিচালক: Yashowardhan Mishra
গল্প: Ashok Mishra ও Yashowardhan
প্রযোজনায়: Shobha Kapoor, Ekta Kapoor
অভিনয় করেছেন: Sanya Malhotra, Anant V Joshi, Vijay Raaz, Rajpal Yadav, Brijendra Kala
স্ট্রিমিং প্লাটফর্ম: নেটফ্লিক্স (Netflix)
মুক্তি: ১৯ মে, ২০২৩
সময়কাল: ১১৫ মি.
আইএমডিবি রেটিং: ৬.৮/১০ (যখন লিখছি)
ব্যক্তিগত রেটিং: ৮/১০
‘কাঁঠাল (Kathaal)’ একটি লাইট ডার্ক কমেডি পাশাপাশি উচ্চ মাত্রার স্যাটায়ার। সাম্প্রতিক সময়ে বলিউড খুব কম মৌলিক গল্প নিয়ে কাজ করছে। সে বিবেচনায় ‘কাঁঠাল’ সিনেমা বেশ দীর্ঘ জায়গা কাভার করতে সক্ষম হয়েছে। বেশ কিছু বিষয় আমাদের চোখের সামনে এনেছে। রাজনৈতিক নেতাদের সৌখিন সমস্যার পেছনে ছুটতে ছুটতে পুলিশের মূল কাজে বিপত্তি ঘটা, মিডিয়ার ভূমিকা, নারী স্বাধীনতা, বর্ণবাদ, সম্পর্ক এবং বর্ণবাদে জড়িত সম্পর্কের জটিলতা সহ আরো অনেক উপাদান এই সিনেমায় খুঁজে পাবেন।
লুডো সিনেমায় ‘সানিয়া মালহোত্রা’ কে খুব অল্প সময়ের জন্য পেলেও অভিনয়ের দক্ষতা প্রকাশে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু এই সিনেমায় প্রধান চরিত্রে (একজন ইন্সপেক্টর) থাকায় তার অভিনয় নিয়ে দর্শকদের কোন সন্দেহ থাকবে বলে আশা করছি না। এছাড়া ‘রাজপাল যাদব’ কমিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন একজন সাংবাদিক হিসেবে। নিঃসন্দেহে তিনি তার শতভাগ দিয়েছেন। প্রচুর হাসি পাবে যদি তার চরিত্র বিশ্লেষণে মনোযোগ দেন।
এছাড়া মেথড অভিনেতা বিজয় রাজ অসাধারণ অভিনয় করেছেন একজন রাজনৈতিক নেতার চরিত্রে। সিনেমাটি দেখতে দেখতে সামান্যতম সময়েও যদি একঘেয়েমি আসে তাহলে বিজয় রাজের অভিনয় এবং তার চরিত্র দেখে এক ধরণের মুক্তি পেতে পারবেন। এছাড়া চিত্রনাট্য এত ফাস্ট যে আপনার একঘেয়েমির চিন্তা মাথাতেই আসবে না।
সিনেমাটির গল্প খুবই সাধারণ এবং খুব সহজেই বোধগম্য। এক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার কাঁঠাল গাছ থেকে ‘আংকেল হং ব্রিড’ এর দুইটি টমটমা কাঁঠাল চুরি হয়ে যায়। এরপর নাটকীয়ভাবে এই নিয়ে একটি পুলিশ কেস ফাইল করা হয়। এই রাজনৈতিক নেতা সাফ জানিয়ে দেয় যে, কাঁঠাল দুটো পেকে যাওয়ার আগেই যেন পুলিশ সেটা খুঁজে বের করে। এভাবে দিন দাহাড়ে এতবড় রাজনৈতিক নেতার ঘরে চুরি হলো কেমনে করে? এই হলো অভিযোগ। কারণ, এই কাঁঠালের খোঁজ পাবার ওপর নির্ভর করছে তার রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতি বা প্রমোশন।
এই রাজনৈতিক চরিত্রে দেখা যায় বিজয় রাজের মতো অসাধারণ অভিনেতাকে। আর এই কেস সমাধানের দায়িত্ব পড়ে ইন্সপেক্টর মাহিমার কাঁধে। এখন প্রশ্ন হলো, পুলিশ কি কাঁঠাল পেকে যাওয়ার আগে উদ্ধার করতে পারবে নাকি চোর কাঁঠাল বিক্রি করে দিয়েছে? এবং তা গ্রাহকের পেটেও চলে গেছে?
হাস্যকর বিষয় হলো, প্রধানমন্ত্রী, যিনি কাঁঠালের নানাপদ খুবই পছন্দ করেন, তাকে উপহার দিলে পরেই তার মন্ত্রীপদও কনফার্ম হবে। সমস্ত পুলিশ প্রশাসন তটস্থ এমপির দাপটে। দোষ যায় মালি এবং তার মেয়ের উপরে, যে মেয়েটা তিনদিন ধরে নিখোঁজ এবং তাকে সর্বশেষ দেখা গেছিল এমপির বাড়ির সেই কাঁঠালতলায়। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের নারী কর্তাটির (মাহিমা) মনে হয়, কাঁঠালের চেয়ে মালির হারানো মেয়েটাকে খুঁজে বের করা এই মুহুর্তের প্রধান কাজ হিসেবে নিয়েছেন।
রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিজয় রাজ, সাংবাদিক হিসেবে রাজপাল যাদব এবং ইন্সপেক্টর হিসেবে সানিয়া মালহোত্রা সবাই নিজের চরিত্রে ভালো পারফর্ম করেছেন। সবার কমেডি টাইমিংও ভালো ছিলো। আর কমেডি দৃশ্যগুলো এমন নয় যে, আপনাকে কষ্ট/জোর করে হাসতে হবে। খুবই সুন্দর ছিলো।
এই সিনেমার বিশেষত্ব হচ্ছে, সামান্য একটি বিষয় কীভাবে জাতীয় সমস্যায় পরিণত হতে পারে। সামান্য দুটো ‘কাঁঠাল’ কীভাবে কোন রাজনৈতিক নেতার পদোন্নতি আটকে দিতে পারে, অথবা, কারো বিয়ে পর্যন্ত আটকে যেতে পারে। তাই এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে সিনেমাটি আপনাকে দেখতে হবে। আশা করি হতাশ হবেন না। ধন্যবাদ