somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ক্যাম্পাস-জীবন + বাম পন্থিয় ডাইনোসরদের পরিচিতি।

২২ শে জুন, ২০১২ রাত ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জানি এ আর্টিকেল টি পড়ার পর ক্যাম্পাসে হয়তো খবর চলে যাবে। কিন্তু একটা কথা শুরুতেই বলে দেই ক্যাম্পাসের মুফতি আর বাইরের মুফতির ভেতরে তোদের চোখেই কিন্তু আকাশ-পাতাল তফাত। আর কিইবা করার আছে তোদের, আজ যে ইনফরমেশন এখানে দিবো তার পরেও যদি তোদের মুখ দিয়ে পক্ষপাতিত্বের কোন শব্দটিও বেরোয় তাহলে তোরা যে যারজ এর প্রমান হয়ে যাবে।
....................................................................................................


তবে ভার্সিটিতে আমি লীগ বা দলের চেয়ে ব্যাবহার ও অন্যান্ন আরও অনেক দিক থেকে বাম আই মিন, ছাত্র ইউনিয়ন কে বেটার মনে করি। কারন তারা ধুমপান কে নিরুৎসাহিত করে, বাজে আড্ডা দেয় না। এবং সৃষ্টিশীল কাজে নিজেদের সব সময় জরিয়ে রাখতে চেষ্টা করে। যেমন বিজ্ঞান মঞ্চ আন্দোলন, বা এরকম আরও স্টাডি সার্কেল তারা মাসিক, পাক্ষিক করে থাকে। যেগুলোর দ্বারা একজন ছাত্রের সময় যেমন সময় নষ্ট হওয়ার কোন চান্স নাই, তদুপরি এসব ওয়ার্কশপ ও স্টাডি সার্কেলে থাকার ফলে নলেজ অনেক ভাস্টলি ও ইলাবোরেটলি বৃদ্ধি পায়। যেই ভাবা, সেই কাজ। আমি আমার ভার্সিটিতে গেলে একমাত্র এদের সাথে থাকতে চেষ্টা করতাম।
এদের মধ্যে ভালো লাগতো ইকোনমিক্স ডিপার্টমেন্টের প্রিন্স ভাইয়া কে। যে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলো আর আমার সাথে তার খুবই হার্ট-টু-হার্ট রিলেশন ছিল।
আর কর্মে অক্লান্ত ও জামাত-শিবির আইমিন রাজাকার বিরোধী একজনকেই দেখেছি। সে হলো, জুবায়ের ভাই। ইনি, জামাত-শিবিরের গন্ধ পেলেই হয়েছে। এলাকা একেবারে গরম করে দিবে। তখন উনার শরীর দিয়ে আগুন বের হয় মনে হয়।
....................................................................................................

এখন আসল প্রসঙ্গে যাওয়া যাক।


সিনারি-১
ইউনিভার্সিটিতে সেদিন আমি প্রথম যাই। জাবি, সমাজবিজ্ঞান অনুষদ। দাঁড়িয়ে আছি ওই ফ্যাকাল্টির সামনে। আমার দাড়িগুলো তখন আরও একটু বড় ছিলো। তখন ফেব্রুয়ারি মাস আই মিন বাংলা একাডেমিতে বইমেলা চলছিলো। আমার সামনে-আশেপাশে অনেকগুলো পোষ্টার লাগানো। প্রকাশিত বইয়ের বিজ্ঞাপন, যার লেখক এই ভার্সিটিরই। পোষ্টারটিতে বই সহ ওই লেখকের নাম, কোন হলে থাকে, রুম নাম্বার, কততম ব্যাচ ইত্যাদি স্পষ্ট করে দেয়া ছিলো। আর বইটির নাম ছিলো "বাতাসে মাদকতা।"। পোষ্টারটি দেখে মনে হচ্ছিলো যে, আজকেই লাগানো হয়েছে। আর পোষ্টারে বইয়ের প্রচ্ছদের পাশি উপর-নিচ অবস্থায় লেখা ছিলোঃ "যে অল্প জানে, সে অহংকারি; যে মোটামুটি জানে সে___ (কি যেনো ছিলো, মনে নাই); আর যে অনেক জানে সে ঈমানদার" এখানে একটা কথা বলে নেই যে, ঈমানদার শব্দটা মোটা করে লেখা ছিলো।



সিনারি-২
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে আছি আর এদিক সেদিক বলদের মতো দাঁড়িয়ে আবোল-তাবোল অনেক কিছু ভাবছিলাম। হঠাৎ কোথেকে যেন ৭-৮ টা ছেলে-পেলে আসলো। এসে ওখানে আমার ঠিক সামনে গোল করে দাঁড়িয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে কথা বলতে লাগলো। তাদের মধ্যে থেকে একজন আশে-পাশের দেয়ালের পোষ্টার গুলোর দিকে আর আমার দিকে অনেকটা ভুরু কুচকে তাকাচ্ছিলো। ওই ভাইজানের অবস্থানও আমার সামনে আই মিন, মুখো-মুখি অবস্থায় ছিলো।
হঠাৎ করে লক্ষ করলাম সেই ভাইজানের মুখ মন্ডল কেনো যেনো হিংস্রতায় রূপ নিলো। আর সে চিৎকার করে বলতে লাগলো "ক্যাম্পাস টা কুত্তার বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা শিবির দিয়ে ভরে যাচ্ছে।" এরকম আরও অনেক কথা বলছে আর পোষ্টার গুলো দেয়াল থেকে ছিড়ে টুকরো টুকরো করছে। আর আমার দিকে আগুন চোখে তাকাচ্ছে। কিন্তু ভয় পেতে পেতে শুরুতেই কেনো যেন আমার মনে হলো এই ছেলেটা একটা আস্ত আবাল। আর আমার মনে হঠাৎ ক্ষোভ জন্মালো যে এর সাথে সখ্য করে ঢাকায় নিয়ে ইচ্ছা মতো ধোলাই দিবো
(আগেই জানতাম যে জাবি ক্যাম্পাসে কোন রকম ধর্মিয় এক্টিভিটিস চলে না। তবে, সামান্য ঈমানদার শব্দটার জন্যও যে এরকম হুলস্থুল কান্ড বেধে যাবে, তা কল্পনাও করিনি। বোঝাই যাচ্ছে, এর মাটির প্রতিটা কনাই ধর্ম-বিরোধি আন্দলোনে কতোটা সোচ্চার!!!)


পরবর্তি ঘটনা
আমি এরপর নিয়মিত ক্লাস করতে থাকি এবং উপরেই দেয়া বক্তব্য অনুযায়ি ছাত্র ইউনিয়নে পদচারনা বাড়াতে থাকি। তখনই জানতে পারি এই মটকু পোলাটা বামের একনিষ্ট কর্মি। এর নাম জুবায়ের হাসান, এনথ্রপোলজি ডিপার্টমেন্টের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
সবচেয়ে মজার কথা হলো, এর হল আর আমার হল একই। আর এর ফ্যাকাল্টি আর আমারটা সেইম, এছাড়াও এর বাসা ঢাকার মিরপুর-১৪ তে আর আমাদেরও ওখানে একটা নিজস্ব বাসা আছে।(ভাড়া দেয়া)
তবে অনেক আশ্চর্য হলাম, যেদিন জানতে পারলাম যে এর আপন ছোট ভাই জাহিদ আমার খুব ক্লোজ জুনিয়র ভাই-ব্রাদার। আর, আমি ভর্তির পর অনেক বারই জাহিদকে তার আপন বড় ভাইয়ের সাথে ক্যাম্পাসে দেখেছি লাম। তবে আসল মজাটা শুরু এখান থেকেই।


অবিশ্বাস্য মজা শুরুঃ
জুবায়ের ভাইয়ের ডিপার্টমেন্টের এক জুনিয়র ছেলে নাম "জাফর" যে কিনা আমি ও জুবায়েরে ভাই "জাহিদ" উভয়েরই ভালই পরিচিত।
তো, একদিন কথায় কথায় আমি আমার ফ্যাকাল্টির সামনে জাফরের সাথে বসে বললাম যে "জাহিদ কিন্তু জুবায়ের ভাইয়ের আপন ছোট ভাই।
এ কথা শোনার পরে মনে হলো যে জাফর আকাশ থেকে পরলো। তার আশ্চর্যের কারন জানতে পারলাম যে জুবায়েরের ভাই জাহিদ এলাকায় শিবিরের নেতা কর্মী। (জাফর আর ও আলীয়া মাদ্রাসায় উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যন্ত একসাথে পড়েছিলো।)
শুনে আমি জাফরের থেকেও বেশি শক খাই। কারন তখন আমার কেবলি প্রথম দিনের কথা মনে হচ্ছিলো। আর কানে বাজতেছিলো জুবায়ের হারামজাদার ডায়ালগ "কুত্তার বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা শিবিরে ক্যাম্পাস টা ভরে গ্যাছে।"

তবে ঘটনা কিন্তু এ পর্যন্ত হলে কথা ছিলো। এটা আরো ড্রামাটিক পর্যায়ে রুপ নিলো তখন, যখন জাফর জুবায়ের ভাইকে জিজ্ঞেস করলো যাহিদ তার আপন ভাই কি না? ---- :-*:-* ওমা...!!! :-* মুখের উপর সাথে সাথে উনি বলে দিলো যে "আমার কোন ছোট ভাইই নেই।"
শুনে রীতিমতো যেন বজ্রপাত হলো মাথায় ।



পরিশেষে যে ঘটনায় হাসতে হাসতে প্যাডের খিল গুলা সব লক হয়া গ্যালোঃ
জুবায়ের হারামজাদা এখন ক্যাম্পাস থেকে এম.এ. করে বের হয়ে গ্যাছে। এখন কি করে জানেন? এখন সে IDB(Islamic Development Bank)- থেকে প্রতি বছর যে IT-তে স্কলারশিপ টা দেয়, (যা ধার্মিক ও গরীব মুসলমান পরিবারের ছেলে-মেয়েদের জন্য প্রযোজ্য) ওটার গ্র্যাজুয়েশন শেষ করছে। :D :D :D =p~ =p~ =p~


হা হা হা, ভাই এখন আপনারাই বলেন, সারা জীবন একনিষ্ট ও গোড়া বাম দল করে, প্রচন্ড-রকমের জামাত-শিবির বিরোধি মানসিকতা ধারন করে, (আমাকে অযথা এভাবে অপমান করে) ক্যাম্পাসে যেরকমের বামিয় ডাইনসরে রুপান্তরিত হয়েছিলো সে জীবন-যুদ্ধের শুরুতেই এক ঠেলায় সমস্ত বাম-ইথিক্স ধুয়ে মুছে একেবারে আল্লার ওলিতে রুপান্তরিত হয়ে গ্যালো!!! ???????



এই হারামজাদারে একমাত্র এর ছোট ভাইয়ের সাথে আমার ভালো রিলেশনের জন্য মারি নাই। না হলে এই মিরপুরে হোক আর যেখানেই হোক, যাকে টার্গেট করেছি তাকে প্রকাশ্যে হাড্ডি ভাইংগা দিয়া আসছি।



...................................................................................................
সতর্কতাঃ
এ আর্টিকেল ক্যাম্পাসের যেই হ্যাডামই পড়ে থাকিস না কেন, ভুলেও কোন রকম লাফালাফি করবি না। এখন আর ক্যাম্পাস আমার কাছে আগের মতো না। আর ফাল পারা গুলারে ঢাকায় ঢুকা একদম বন্ধ হইয়া যাইবো। একবার শুধু চিন্তা কর ঠান্ডা মাথায় যে, ঐ ক্যাম্পাসের বাইরে তোর কি আর করার আছে? তুই ডাকলে হই হই কইরা কয়জন আসবো? সো, বার হয়ে সুস্থ দেহ আর সুন্দর মন নিয়া চাকরি-বাকরি করতে চাইলে ক্যাম্পাসের রংবাজি ওইখানেই রাইখা আসবি। আর নইলে মাইরও খাবি, থানায়েও যাবি।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১২ রাত ১:৩৬
৩৬টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×