১
ভাঙা আয়নার তলপেটে সমুদ্র দৃশ্য
নর্তকীর ফুলবাগান
দুবলাচরের হরিচরণ
দেহমাপের খাট থেকে তারও উড়ে গেছে
মশলাবনের পাখি
ফোল্ডিং চেয়ারের পাশে
ত্বকফর্সা ক্রিমের বিজ্ঞাপনে হেসে উঠছে
মুচড়ানো টাই
নাভিহরণকারীর জিভ
দেহমুগ্ধ জাহাজের খোল থেকে উঠে এসেছে
গোলাপী খরগোস
সত্য মিথ্যের মাংসস্তূপ পার হয়ে গেছে
যে নদীর বাঁক
তার কণ্ঠস্বরে ছিল গভীর খনির আওয়াজ
নিমজ্জিত ঘ্রাণ ঠেলে উপর দিকে উঠে গেছে
শস্যসন্ধ্যার সিঁড়ি
ধাপে ধাপে গড়ানো আলতার ছাপ
ছোট জঙ্গলের মতো
ধসে যাওয়া দেওয়ালের পাশে নর্তকীদের বাস
২
মৃত ঘোড়ার পাশে জলন্ত মুখোশ
দূরে টুকরো টুকরো দেহের সারি সারি ফলের গাছ
কোমর নুয়ে পড়া
পাতার আড়াল
আলোর আভায় অস্পষ্ট পায়ের ছাপ দেখে দেখে
খুঁজে পেয়েছি
ধুলোর ভেতর মুছে যাওয়া উদ্ভাসিত
চোখ
তাকে জলের ভেতর দেখি অনেক নীলের ভেতর দেখি
গলন্ত মাংসপিণ্ডে
ছুরি ঢুকানো
বাঁশপাতার মচমচ শব্দ শোনা যায়
ঝাউবাগানের মধ্যরাত নদীর কিনার ছুঁয়ে থাকে
দূরে একচক্ষু বোধন
মশলাবাটা স্মৃতি
ইশারার কপাট খুলছে
৩
সুরকি ধসে যাওয়া দেওয়ালে চুপ হয়ে আছে
মনোজঙ্গল
সাধু সত্য বলে এজগতে কিছু নাই
সবই দেহ চিহ্ন
এক এক দেহ এক এক রকম কদম গাছ
এক এক রকম
পাতালের সিঁড়ি ঘর
বিউটিপার্লার থেকে ফিরছে গোপন ক্যামেরা
চারিদিকে বৃদ্ধ গাছের গুড়ি
ঘুমিয়ে রয়েছে কোমলতার ধ্বংসস্তূপ
খড়িমাটির নৈঃশব্দ্যত্বক
মাটির সতেজ ঘ্রাণে অনেক কচি সবুজ
খুলে পড়ছে ইশারা গম্বুজ, বাতিঘর
৪
খুট করে শব্দ হইলো
তারপরই জ্বলে উঠলো বাতিঘর জ্বলে উঠলো সিঁড়ির পাশে নিভানো মোম
শুকনো পাতার ভেতর লুটানো দেহখানা থেকে ফিরে এলো
মনসন্ধ্যা
বেড়ালের লোমের মধ্যে লুকিয়েছিল যেইসব গভীর বেদনা তারাও
পরক্ষণেই নিভে গেলো
মনের জঙ্গলে
দেখা হইলো না তার সাথে দেখা হইলো না বহুকাল পড়ে থাকা গাছের গুড়ি
থেকে জন্ম নেওয়া কচিশিশুগাছ কচিকচি পাতার স্বাদ নেওয়া হইলো না আর
সে যখনই পাশে আসে
পানির বোতলের দিকে ফিরে যায় দৃষ্টি
ছুরির ফলা যেন
অনেক রাতের নিরবতা ভেঙে চুপ হয়ে যাওয়া মুখের দিকে
তাকিয়ে থাকে অবাক জানালার শিক
সরে যায় বাহুলগ্ন থেকে করোটির পাশ থেকে চিনচিন ব্যথা
ফিরে আসে নৃশংসতা
মাথার পিছনে
হেসে ওঠে ত্রিশূল
শহরের ফ্লাটবাড়িগুলির দিকে তাকিয়ে থাকি আর মনের ভেতর দিয়ে বয়ে যেতে যেতে
ভাবনা আসে
ভাবনার মধ্যে
উঠে আসে অনেক নদীর দেশ অনেক কাঁঠালের পাতা
মচমচ আওয়াজ মাথার পিছন থেকে সরাতেই পারি না
৫
যখন ভাবি হয়তো আজই ঘুমের মধ্যে মিথ্যে দিয়ে গড়া টিলাগুলো
ভেঙে পড়বে
জানালা টপকিয়ে দেওয়াল টপকিয়ে আহত বেড়ালগুলি
খোলা ময়দানের দিকে ছুটে যাবে
নিরীহ লোভ
টুকরো হয়ে যাওয়া অতীত
ছাইমাখা হাতের ঘ্রাণ তখন ঠিকই গভীর রাত্রিকাচে ভেসে উঠবে
আমাদের সংশয়ভরা মুখের চামড়া
ক্রেডিট কার্ড
রূপচর্চা দালানের সিঁড়ি
পড়ে থাকবে
আমার মুখের দিকে তাকানো অনেক রাতের তারকারাশি
ক্ষীণ আলোর বিন্দু
চুপ হয়ে থাকা কালো রুমালে গড়ে তুলবে অনেক মানুষের কান্না
কফিনের মাপ
ছিটকে যাবে বৃষ্টির ফোটা
ভাবনার মধ্যে বেড়াল টপকানো দেওয়াল. মধুলোভীর দুখানা ক্রাচ
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১১ রাত ১০:৩১