somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অবনি মণি
অনেক বছর হলো ; তবুও নিঃসঙ্গ বৃক্ষের মতো নির্জন নিস্তব্ধ মৌন পাহাড়ের মতোই একা পড়ে আছি আজও। একাই আছি এই দীর্ঘশ্বাসের মতো! তোমারও কি শুধু দীর্ঘশ্বাস,গ্রীলে বিষন্ন গোধূলী?

ছবি ব্লগ______৪

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
এবারের ছবি ব্লগে থাকছে আমার প্রথম বান্দরবান ভ্রমণের কিছু ছবি। নভেম্বর ২০১৫।











বান্দরবান শহরের সবচেয়ে সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র সম্ভবত নীলাচল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬শ’ ফুট উঁচু এই জায়গায় বর্ষা, শরৎ কি হেমন্ত— তিন ঋতুতে ছোঁয়া যায় মেঘ।এছাড়া এখানে দাঁড়িয়ে দূর থেকে দেখা যায় বান্দরবান শহর আর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নদী। বান্দরবান জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা মনোরম এই পর্যটন কেন্দ্রে সাম্প্রতিক সময়ে নতুন যোগ করা হয়েছে একটি রিসোর্ট। এখন থেকে তাই এখানে বেড়ানোর পাশাপাশি পর্যটকরা রাত যাপনের সুযোগ পাবেন।

বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে টাইগারপাড়া এলাকা। সেখানকার পাহাড়ের চূড়ায় বান্দরবান জেলা প্রশাসন গড়ে তোলে আকর্ষণীয় এই পর্যটন কেন্দ্র। নাম দেয় নীলাচল পর্যটক কমপ্লেক্স। এখানে পাহাড়ের গায়ে গায়ে পর্যটকদের জন্য আছে নানান ধরনের ব্যবস্থা। শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে।








নীলগিরি । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উচ্চে অবস্থানের কারণে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র সর্বদা মেঘমণ্ডিত আর এটাই এই পর্যটন কেন্দ্রের বিশেষ আকর্ষণ। একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে নীলগিরি ধীরে ধীরে দেশব্যাপী মানুষের কাছে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত লাভ করতে শুরু করে।এই পুরো পর্যটন কেন্দ্রটিই প্রতিষ্ঠা করেছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং তারাই এর পরিচালনা করে থাকেন। এই পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে কাফ্রুপাড়াসংলগ্ন পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত।বান্দরবানের আলীকদম থেকে থানচীগামী রাস্তা ধরে পাহাড়ী পথে নীলগিরি পৌঁছানো যায়।



বগালেক এর পথে ।





বগালেক হচ্ছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লেক যা সমুদ্র পৃষ্ট থেকে প্রায় ১২০০ ফুট উপরে অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ১৫ একর এবং গভীরতা প্রায় ১৫০ ফুট। বান্দরবান শহর থেকে চান্দের গাড়ীতে রুমা বাজার প্রায় ৪৫ কিমি যেতে ২ ঘন্টার মত সময় লাগে। রুমা বাজার থেকে গাড়ী চেঞ্জ করে জীপ নিয়ে বগালেকপাড়া যেতে হয় আর যেতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা । সেখান থেকে আরো তিন ঘন্টা পাহাড়ি উঁচুনিচু পথ প্রায় ১২/১৩ কিলোমিটার হেটে পৌঁছাতে হয় এই লেকে ।
বগালেক সৃষ্টির রহস্য সম্পর্কে জানা যায়,বর্তমান বগালেক ছিল উপজাতি অধ্যুষিত ৬০ পবিারের একটি পাড়া। পাড়ার একজন রাজা ছিলেন। রাজার একটি মেয়ে ছিলো। মেয়েটি তার পাড়ার এক যুবককে ভালোবাসতো। এমতবস্থায় রাজার মেয়ে মারা গেল। তখন রাজা ঘোষনা দিলেন তার মেয়েকে যে পুনঃজীবীত করতে পারবে রাজা তাকে তার অর্ধেক সম্পদ দিয়ে দিবেন এবং রাজার মেয়েকে তার সাথে বিয়ে দেবেন । এ ঘোষনার পর আবির্ভাব ঘটলো পুর্ব নায়কের। পুর্ব নায়কের নাম ছিল খুয়াইতাহামতন এবং তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত কবিরাজ। রাজার ঘোষনা শুনে তিনি এলাকায় এসে রাজার মৃত কন্যাকে ভালো করবেন বলে জানালেন। ঠিকই খুয়াইতাহামতন রাজার মৃত কন্যাকে ভালো করে তুললেন। কথামতো রাজা পুর্ব নায়ক খুয়াইতাহামতনের সাথে তার কন্যার বিয়ে দিলেন এবং অর্ধেক সম্পদ দিয়ে দিলেন। এর একপর্যায়ে রাজার মেয়ের পুরনো প্রেমিকের আর্বিভাব ঘটলো। রাজার ময়েও তার পুরনো প্রেমিকের সাথে গোপনে পুনরায় প্রেম করতে লাগলো। তারা দুজনে পুর্ব নায়ক খুয়াইতাহামতনকে মেরে ফেলার চিন্তা করলো। এ উদ্দেশ্যে রাজার মেয়ে একদিন ভান করলো সে বন্য শুকুরের কলিজা খাবে। তার স্বামী খুয়াইতাহামতন স্ত্রীর আবদার রাখতে গিয়ে বনে গিয়ে একটি বন্য শুকর মেরে তার কলিজাটা নিয়ে আসলো। কিন্তু তা স্ত্রীর পছন্দ হলোনা। বলে আরো বড় কলিজা লাগবে তার। পরের দিন পুর্ব নায়ক আবার জঙ্গলে গিয়ে একটি বড় শুকর মরতে গেলে তার মৃত্যু হয়। পরে তাকে পাড়ার ভেতরে একটি বাড়ির নীচে কবর দেয়া হয়। সে কবর একটি গর্তে পরিণত হয়। গর্তের ভিতর খুয়াইতাহামতন একটি বিশাল আকৃতির ড্রাগনে রুপান্তরিত হয়। পরে এলাকায় একদিন মানুষ হারিয়ে যায়। অন্যদিন পশু হারিয়ে যায়। রাজা এর কারণ খুঁজতে গিয়ে কবরের গর্তে বিশাল আকৃতির ড্রাগনের সন্ধান পান। পরে এই ড্রাগনটি হত্যার জন্য সিদ্ধান্ত হলো। একদিন একটি বড় বড়শিতে একটি মুরগি গেঁথে গর্তের মুখে দেয়া হলো। ড্রাগনটি মুরগিটা খেতে গেলে বড়শির সাথে আটকে গেলো। আর পাড়ার সব লোকেরা ড্রাগনটিকে টানতে টানতে অর্ধেক পর্যন্ত টেনে এনে কেটে ফেললো। আর সেই অর্ধেক ড্রাগন পাড়ার সবাই মিলে ভাগ করে রান্না করে খেলো। কিন্তু পাড়ার এক বুড়ি ড্রাগনের মাংস খাওয়া থেকে বিরত ছিলো। খাওয়ার পর সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাতে বুড়িকে স্বপ্নে দেখানো হলো এই পাড়া ধ্বংস হয়ে যাবে তুমি সরে যাও। ঠিক ঠিক বুড়ি সরে পড়লে পাড়াটি পানির নীচে তলিয়ে যায়। সেই থেকে বগালেকের সৃষ্টি। এ লেকের গভীরতা আড়াইশ মিটার বলে জানা যায়। তবে সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি। বগালেকের পানি বছরে একবার শীত মৌসুমে লালছে হয়ে যায়। এর কারণ জানা যায়নি। লেকে রয়েছে অনেক বড় রড় মাছ।বর্তমানে এলাকায় বম ও মার্মা সম্প্রদায় বসবাস করে। এলাকায় রয়েছে একটি সেনা ক্যাম্প। সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা এলাকায় অসুস্থ লোকদের সেবাদানসহ উপজাতীয়দের বিরোধ মীমাংসা এবং জুমের উৎপাদিত ফসল টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে কিছুটা হলেও স্থানীয় উপজাতি সম্প্রদায়ের অর্থাভাব লাঘব করার চেষ্টা করে থাকেন বলে জানা যায়। লেকের পাশে গড়ে তুলেছে দোকান,হোটেল ও বসতি। এলাকায় সরকারীভাবে রয়েছে রেষ্ট হাউস।


বগালেক এর রেস্ট হাউস গুলোর একটি। এই ধরণের রেস্ট হাউসেই থাকতে হয় সেখানে।মাচার উপর নির্মিত বাঁশের রেস্ট হাউস এগুলো। লেকের পাড়ে অবস্থিত এই হাউসে এক রাত কাটানোর অনুভুতিই ছিল অন্য রকম।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×