যখন সততার বুকে ঘুন চেপে বসেছে, সুন্দরের গায়ে জমেছে কালো মেঘের ছায়া, বিশ্বাসের খুঁটি যখন নড়বড়ে, হতাশা যখন সমাজের মসৃণ জমিতে বহুতল বিশিষ্ট ফাউন্ডেশন গড়েছে, যখন সর্বত্রই অন্ধকারের তান্ডব নৃত্য দেখছি; ঠিক সেই মূহুর্তে আমার এই লেখার প্রয়াশ।
বাংলাদেশের উন্নতির অন্তরায় সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয় এ দেশের অধিক জনসংখ্যা বা জনসংখ্যার বিস্ফোরন। কিন্তু আমরা জানি জনসংখ্যা কখনও একটি দেশের জন্য অভিশাপ নয় বরং আশীর্বাদ বলা যায়, যদি জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করা যায়। জনসংখ্যাকে আধুনিক শিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষীত করতে পারলে তা নিশ্চিতরুপে সম্পদে পরিনত হবে।
কৃষকের সঠিক সম্মান। কৃষককে যদি তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া যায় এবং তার ন্যায্য মূল্য সম্পর্কে নিশ্চিত করা যায় তাহলে তারা অধিক ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হবে। আর আমাদের খাদ্য ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। এজন্য তাদের উন্নত বীজ, ভাল সার এবং নামমাত্র সুদে ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনকে যদি নিরপেক্ষ দ্বায়িত্ত প্রদান থেকে দূরে রাখা হয় তাহলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে দেশে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, বাড়ি দখল ইত্যাদি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে। বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে দেশের দূর্নীতি এবং স্বজন প্রীতি বহুলাংশে কমানো সম্ভব। দূর্নীতি এবং স্বজন প্রীতি যে কোনো দেশের জন্য ক্যান্সার সরূপ। ক্যান্সারে আক্রান্ত মানুষ যেমন বেশিদিন বাঁচেনা, তেমনি দূর্নীতিগ্রস্থ দেশ কখনো উন্নয়নের মুখ দেখে না।
আমাদের নেতা নেত্রীদের মধ্যে দেশ প্রেম যদি না থাকে তাহলেও দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। দেশ-প্রেমকে শুধু সভা-সমাবেশে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটাতে হবে। হরতাল ও হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করে সাধারন মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।
প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার দেশের উন্নয়নের লক্ষে সমান গুরুত্তপূর্ণ। আমাদের দেশে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে উত্তোলনের ব্যবস্থা করে এর সঠিক ব্যবহার ও সুষ্ঠ বন্টন নিশ্চিত করতে হবে।
সুশীল সমাজ রাজনীতিতে না আসা পর্যন্ত এদেশের উন্নতি সম্ভব নয়। কারন আমরা আমাদের রাজনীতিতে যেসব নেতা-নেত্রীদের দেখে আসছি, তাদের বেশির ভাগই অসাধু এবং দূর্নীতিবাজ। তারা শুধু নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। দেশপ্রেম বিমুখ এসব নেতা-নেত্রীদের দিয়ে যে দেশের উন্নতি সম্ভব নয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। তাই সৎ, যোগ্য, আদর্শবান ব্যক্তিত্ত আজ দেশের বড়ই প্রয়োজন।
তাই আসুন সবাই মিলে দেশ থেকে দূর্নীতি, সন্ত্রাস, কালোবাজারি উৎখাতে স্বচেষ্ট হই। কেননা, সৎ ও যোগ্য মানুষই পারে দেশকে উন্নতির চরম শিখরে পৌছে দিতে।