somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্র রাজনীতির সেকাল ও একাল !

০৯ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছাত্র রাজনীতি উপমহাদেশের প্রাচীন ঐতিহ্যধারা ! ইতিহাস বলে এই ছাত্রদের হাতেই উপমহাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও রচিত হয় ! এক্ষেত্রে আজকের রাষ্ট্র ও রাজনীতি মূলত ছাত্রদের হাতেই রচিত হয়েছিলো যা এখন এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ! এই উপমহাদেশে অনেক বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্ব তৈরী হয়েছিল এই ছাত্র রাজনীতির হাত ধরেই যাদের নাম আলাদা করে না লিখলেও চলে !

তখনকার ছাত্ররা খুন, ধর্ষণ, দখলবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষকদের লাঞ্চিত অপমান করতো কিনা জানি বা ইতিহাসেও খুঁজে পাইনি ! আমার এ লেখাটিও মূলত ছাত্র রাজনীতির সেকাল ও একাল নিয়ে !

একটা সময় ছাত্র রাজনীতি নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকতো ! বিশেষ বিশেষ কারণে (ছাত্রদের প্রয়োজনীয় দাবী-দাওয়া নিয়ে) রাস্তায় নেমে আসতো ! আর এখন ?

অধিকাংশ ছাত্র রাজনীতিকরা থাকে বিভিন্ন বাজার স্ট্যান্ড, উপজেলা চত্বর, টেন্ডার অফিস, ভূমি সাবরেজিট্রি অফিস এবং অন্যান্য ইনকাম সোর্স পয়েন্টে ! নিয়মিত কাজ হিসেবে নেতাদের বাসায় গিয়ে দোয়া লওয়া, নেতা এলাকায় কখন আসবে সেই মতো প্রস্তুতি লওয়া, সবার আগে গিয়ে নেতাকে নিজের মুখশ্রীখানা প্রদর্শন পূর্বক করমর্দন করাটা যেন এখন প্রতিযোগিতা ! নেতার পিছনে কে কতজন নিয়ে হাজিরা দিয়েছেন, স্লোগান দিয়েছেন, মারামারিতে অংশ নিয়েছেন উপরোক্ত নেতা মহোদয়গণ তো এসবই দেখে দেখে হিসেবে রাখেন অতঃপর নুতন কমিটি গঠনের সময় এলে ছাত্রদের এসব প্রোফাইল চেকইন করে পদমর্যাদা দিয়ে থাকেন ! এরফলে কারো ভাগ্য খুলে যায় আবার কারো কপালে ফুটে উঠে হতাশা ক্ষোভের রেখা ! কেউ কেউ তো পাল্টা গ্যাং চালু করে বসেন !

অনেক ছাত্র নেতা তো নিজেই অনেক সময় মনে করে বলতে পারে না যে, সে কোন ক্লাসের অথবা কোন সাবজেক্টের ছাত্র ! তবে হ্যা ! এসকল ছাত্র নেতা ভাইয়েরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঝে মাঝে প্রবেশ করে; তবে বিশেষ কোনো কাজের জন্য !

আগে ছাত্ররা শিক্ষকদের শ্রদ্ধা-সম্মান, ভক্তি-ভয় করতো ! কিন্তু এখনকার শিক্ষকেরা ঘাড় মটকানি খাওয়ার ভয়ে তটস্থ থাকেন ! আগেরকার ছাত্র নেতাদের পকেটেও কলম থাকতো আর এখনকার ছাত্র নেতাদের পকেটে থাকে গোল্ড লিফ, বেনসন........... ইত্যাদি !

সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে অতি সহজে জাতির এসকল সাহসী মেধাবী নেতাদের চিনতে পারে সেজন্য ডিজিটাল পোস্টার ব্যানারে ছাপিয়ে এরা কত রোদ-বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে গাছে গাছে, তারের খাম্বা খুঁটিতে ঝুলে থাকে বছরের পর বছর ধরে !
ছাত্রদের অবিভাবক তো পিতা-মাতা, শিক্ষক গুরুজনদের হওয়ার কথা কিন্তু এসকল ছাত্র নেতাদের অবিভাবক রাজনৈতিক নেতারা !

সরকারী কিংবা আধা সরকারী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্ররা ছাত্র রাজনীতির সুফল হাড়ে হাড়ে ভোগ করে থাকেন ! এছাড়া এই সংগঠনটার শেকড় এখন তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত !
অতএব এটাকে এখন বৃহৎ নেতাদের হাতিয়ার বা লেজুড়বৃত্তি সংগঠন বললে ভুল হবে বলে মনে করি না ! কেননা ছাত্র শিক্ষকদের প্রায় সকল দাবিই সরকার কতৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করে দিয়েছে এবং দিচ্ছে !

তাই এই সংগঠনটির হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া বা নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা জানিনা ! অথচ জাতির মেরুদন্ড হিসেবে এই সকল ছাত্রদের নিজস্ব গৌরব ও আত্মসম্মানবোধ হারিয়ে কোনো ক্ষমতাবানদের লেজুড়বৃত্তি না করে কেবল নিজস্ব শিক্ষা নিয়েই ভাবা উচিত ছিলো ! তাহলে এরা জাতির অহংকার হিসেবেই পুরোনো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারতো !
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৫৯
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×