আমাদের গ্রামে গমের পাশাপাশি আর একটা ফসল উৎপাদন করা হতো তার নাম আমরা বলতাম পায়রা আর পায়রা থেকে উৎপাদন করা হতো ছাতু। ছাতু খেত গ্রামের গরীব লোকেরা। আগেরকার দিনে খাদ্যের আভিজাত্যের ক্রম ছিল ভাত-রুটি-ছাতু।
ছোট বেলায় বই পড়ার বদৌলতে জানতে পারি যব নামের একটা ফসল বহিঃবিশ্বে উৎপাদন করা হয় যা থেকে ওটস, বার্লি
, হরলিক্সসহ আরও পুষ্টিকর খাদ্য দ্রব্য প্রস্তুত করা হয়। অথচ কোন শিক্ষক বা অন্য কেউ শেখায় নাই আমাদের জমিতে উৎপাদিত পায়রার অপর নাম যব। কেউ বলেনি ওটস, বার্লি বা হরলিক্স থেকে ছাতু বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য। ভুলে ভরা বাঙ্গালী আমরা দেশি ঠাকুর পায়ে ঠেলে বিদেশী কুকুর কাধে নিয়ে ঘুরি। তাইতো আজ গ্রামের জমিতে পায়রা বা যব চাষ না করে থেতলানো পায়রা (ওটস), চিনি মাখা ছাতু(হরলিক্স) ও বার্লি উচ্চ মূল্যে আমদানী করে তৃপ্তিতে ঢেকুর গেলি।
সবশেষে বরিশাল এলাকার একটা গল্প বলি,
একজন বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে একটা দোকানে হালকা নাসতা চাইলে ছোলা-মুড়ি অফার করলে শহরের নতুন খাবার মনে করে তা গ্রহণ করে। খাওয়ার সময় সরবরাহকৃত খাবার দেখে বলে, ওরে উরুম তুই ঢাকায় আইসা হইয়া গেলি মুড়ি।
যেই লাউ, সেই কদু। যেই উরুম সেই মুড়ি। যেই আন্ডা সেই বয়জা বা ডিম। যেই পায়রা সেই যব। তবে যব বা পায়রা যে খুবই পুষ্টিকর খাবার সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তা যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন। ছাতু, ওটস, হরলিক্স , বার্লি সবই যব বা পায়রা থেকে প্রস্তুতকৃত।
আসুন আমরা সবাই গমের পাশাপাশি পায়রা বা যবের উৎপাদন বৃদ্ধি করি, আমদানী বন্ধ করি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:০১