somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অব্যক্ত ভালোবাসা-পর্ব-৯

০৪ ঠা জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট্ট বেলায় আকাশ একটা র্যা প গান শুনেছিলো যার প্রথম লাইন হলো, “উপায় নাই গো উপায় নাই, মায়ে বাপে চায় গো শুধু লন্ডনী জামাই”। গানের কথা সত্য প্রমাণিত করে নুশরাত বিয়ে করে লন্ডন চলে গেলো। নুশরাতের স্বপ্ন ছিলো দেশে থেকে পড়ালেখা শেষ করে নিজের পায়ে দাড়াবে। স্কুলে পড়ার সময় শ্রেণি শিক্ষক একবার বলেছিলেন, তোমরা বড় হয়ে কে কি হতে চাও কাগজে লিখে দেও। নুশরাত তখন লিখেছিল সে বড় হয়ে ওকিল হবে। আসলে ছোট্ট বেলায় শিক্ষক বা অভিভাবক জীবনের লক্ষ্য বা Aim in Life রচনা লেখা যখন শেখায় তখন বাস্তবতার নিরিখে যোগ্যতার ভিত্তিতে জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করা না শিখিয়ে গাইড বইয়ের লেখা মুখস্ত করা শেখায়। সে কারণে বেশির ভাগ ছাত্র-ছাত্রী জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে না পৌছানো তো পরের কথা। যা হোক আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে। নুশরাতের পরবাসের বিয়েতে নিশ্চয়ই মঙ্গল নিহীত আছে। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দিনে দিনে নিম্নমূখী হচ্ছে। তাই অনেকেই বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেলে হাত ছাড়া করতে চায় না। এ দিকে আকাশ ছোট্ট বেলা থেকেই দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশীয় শিক্ষা নিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং দেশের সমস্যা দূর করবে এবং সকল সমস্যার মাঝে সম্ভাবনা খুঁজে বের করবে এ রকম মনোভাব পোষন করে। বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় একই ধাচের শুধু সার্টিফিকেট সরবরাহ করে তাই আকাশ ভর্তি পরীক্ষার কঠিন লড়াইয়ে মনোনিবেশ না করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকার একটা ক্যাম্পাসে পছন্দ মতো সাবজেক্ট (বিজ্ঞান বিভাগের সবচেয়ে কঠিন বিষয়) এ ভর্তি হয়। অন্য দিকে ইশরাত সিলেটের একটা মহিলা কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি হয়। আকাশ ঢাকায় থাকলেও মন পড়ে থাকে সিলেটে। সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও বিভিন্ন জনের সহযোগিতায় ইশরাতের সকল খবরই আকাশের নিকট পৌছে যায়। পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না, সারাদিন ইশরাতের কথা মনে পড়ে আর মনে মনে গাইতে থাকে রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর গান, “ ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখো”। বাস্তবে আকাশের ঠিকানায় কেউ চিঠি লেখে না। আসলে আকাশের আপনজন বলতে একমাত্র মা। মাকে মাঝে চিঠি লিখলেও আকাশের লেখার অভ্যাস খুবই কম। তবে স্নাতক পড়াকালীন প্রথম দিকে একটা বাসায় লজিং থাকার সময় বিভিন্ন অভিজ্ঞতার আলোকে আকাশ একটা উপন্যাস লিখতে চেয়েছিল যার নাম নির্ধারণ করা হয় “বুড়িগঙ্গার চড়ে চৌদ্দ মাস”।
নিয়মিত ক্যাম্পাসে হাজির হয় আকাশ কিন্তু পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারে না। তেরে নাম সিনেমার নায়ক শালমান খানের মতো স্টাইলে ক্যাম্পাসে চলতে ভালো লাগে আকাশের । তবে খুটির জোড় কম থাকায় এবং ক্যাম্পাস মেয়ে শুন্য হওয়ায় সিনেমার স্টোইলে না চললেও আকাশ কিছু সংখ্যক বন্ধুবান্ধব/সহপাঠী নিয়ে দলবদ্ধভাবে চলতে এবং নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করে আকাশ। সামাজিক নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করতে পড়ালেখার পাশাপাশি আকাশ বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট এর সাথে সম্পৃক্ত হয়। ফলে সমাজ সেবা ও সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ সেবায় নিজেকে উদ্বুদ্ধ হয়।
এতা কিছু করার পরও আকাশের মন পড়ে থাকে ইশরাতের কাছে। পড়ালেখার মনোযোগ নাই, বেশি পড়ালেখা করা হয় না বা পড়া লোখায় বেশি সময় ব্যয় হয় না ফলে আকাশের হাতে পর্যাপ্ত সময় থেকে যায় । তাই ক্যাম্পাসে এলোমেলো না ঘুরে ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত হয়। এমনিতেও পড়ালেখা না করার কারনে ফলাফল বেশি ভালো হওয়ার সুযোগ নেই তারপর ছাত্ররাজনীতিকে খারাপ ফলাফলের কারন হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ তৈরী হলো মনে করে আকাশ তৃপ্তির ঢেকুর গেলে আর রাজনীতির পাঠ থেকে দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। তার এক রাজনৈতিক সহযোদ্ধা তপন বলে যারা ছাত্র রাজনীতি করে তাদের কোন মেয়ে মানুষের প্রেমে পড়া উচিৎ নয় বা কারো সাথে প্রেম করে সময়/জীবন নষ্ট করা উচিৎ নয়। ছাত্র নেতাদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে, দেশের সাথে প্রেম করতে হবে। তার কথাগুলো ভালো লাগলো আকাশের এবং সে দেশের প্রেমে পড়লো। দেশটা আমাদের দেশ গড়ার দায়িত্বও আমাদের এই নীতি হ্রদয়ে ধারণ করে আকাশ দেশের জন্য কাজ করবে পণ করে শুধ্ধ ধারার রাজনৈতিক চর্চার দিকে মনোযোগ দিল। আকাশের অনেক শুভাকাঙ্খী বুঝালো যে বর্তমানের নষ্ট রাজনীতিতে সময় দিয়ে জীবন নষ্ট করার মানে হয় না। আকাশ তাদের বলে, আমি কলুষিত রাজনীতির মধ্য থেকে ভালো অংশটুকু গ্রহণ করে শুদ্ধধারার রাজনৈতিক চর্চা করে যাচ্ছি আর ভালো ছেলেরা রাজনীতিতে যুক্ত না হলে খারাপ ছেলেরা ঐ যায়গা গুলো দখল করে ফেলবে। তাই যারা নিজেদের ভালো ছেলে মনে করে ঘরের কোনে বসে রাজনীতির সমালোচনা করে তাদের উচিৎ রাজনীতি যুক্ত হয়ে রাজনৈতিক পরিবেশ সুন্দর করা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খাম্বার পরবর্তী অধ‍্যায় ,নাকি ১০% বদল হবে‼️অমি খোয়াব ভবনে ঘুমিয়ে , হাওয়া ভবনের আতঙ্কে আতঙ্কিত॥

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৮



খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাটক ছিল তারেক জিয়ার দেশে ফেরার রাজনৈতিক ট্রাম্পকার্ড। কথায় আছে,' দুষ্টু লোকের মিষ্টি ভাষা '। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দূর্নীতিবাজ ও মাফিয়া গডফাদার তারেক রহমানের দেশে ফেরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

খালেদার ১টি প্ল্যান ছিলো, মহা-ডাকাতের ১টি প্ল্যান আছে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:২৩



২০১৪ সালের ভোটের আগে খালাদা বলেছিলো যে, তার কাছে ১টা প্ল্যান আছে, যা ১ বছরের মাঝে বেকার সমস্যা ও বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করে দিবে। তিনি প্ল্যানটি প্রকাশ করেননি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোর কথা তুই লিখে সত‍্যতা প্রমান কর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১



ব্লগ মনে হয় কারো কারো বাপ দাদার জমিদারি হয়ে গেছে। সব পোস্ট দালাল , রাজাকার, জঙ্গিদের অথবা লালবদরদের স্বপক্ষে হোতে হবে। সত‍্যের আগমনে মিথ্যা বিস্মৃতির অবসান হয় ।আদর্শের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৯

বাংলাদেশে গুমের ঘটনা: শেখ হাসিনার শাসনকালের একটি কালো অধ্যায়

গুমের শিকার ব্যক্তিদের অতি ক্ষুদ্র কক্ষের ছবিটি বিবিসি ডটকম থেকে নেওয়া।

পরিচিতি

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষি স্যাটেলাইট পাঠিয়ে সার্ক দেশগুলোর মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি?

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩১



ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস তাঁর নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার দিনে ভাষণ দান কালে বলেছিলেন - দারিদ্রতা দূর করলে জাতিগুলোর মাঝে শান্তি ফিরে আসবে। গত কয়েক বছর ধরে আমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×