somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চরিত্রহীন ছেলের গল্প

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছেলেটির অভিভাবকের কাছে মেয়েটি অভিযোগ করেছে- ‘আপনার চরিত্রহীন ছেলেটা আমাকে ফেসবুকে ও ফোনে বিরক্ত করে, কুপ্রস্তাব দেয়। এগুলোর সব প্রমাণ আমার কাছে আছে।’

ব্যাস, এতেই ছেলেটির কপালে চরিত্রহীনতার তকমা লেগে যায়। লম্পট ছেলেকে অভিভাবক তিরস্কার করে বলে, তোমার বিরুদ্ধে অনবরত এসব অভিযোগ আসছে, তুমি কি কোনোদিন শুধরাবে না? যদি ভালো না হও তাহলে মনে রাখবে দুষ্ট গরুর চাইতে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো।

ছেলেটির মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। নিজের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মত কোনো যুক্তি প্রমাণই তার নেই। সবচেয়ে বড় কথা মেয়েটির সঙ্গে এখন আর তার কোনো যোগাযোগই নেই! ফোনে তার নম্বর নেই, ফেসবুকের ব্লকলিস্টে মেয়েটিকে রেখে দিয়েছে সে। ঠিক এই মুহূর্তে অভিযোগ!

আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখতেও ঘৃণা লাগছে তার। অথচ এই মেয়েটার জন্য সে কাঁচা হাতে কত গল্প ও কবিতা লিখেছে। মেয়েটি যতবার ফোন দিয়েছে ততবারই তা কেটে দিয়ে নিজে ফোন দিয়েছে।

ওহ, নিজের গল্পটা তার মনে পড়ে যায়। মেয়েটিকে প্রথম দেখায় পছন্দ করে সে। অনলাইনে সার্চ দিয়ে খুঁজে বের করে তাকে। বন্ধুত্ব হয়, কথা হয়। মেয়েটি ছেলেটিকে জানায়, তার এক বয়ফ্রেন্ড ছিল। ছেলেটি ভালো ছিল না। তাই তাকে ছেড়ে দিয়েছে সে।

সুযোগটা হাতছাড়া করতে চায়নি ছেলেটি। মেয়েটিকে সে জানায়, ‘আপনার আপত্তি না থাকলে পরিবারকে জানিয়ে বিয়েটা করে ফেলি।’

বেঁকে বসে মেয়েটি। রেগে বলে সব পুরুষই কেবল সুযোগ খোঁজে। সে থেকে প্রথম পর্যায়ের যোগাযোগ বন্ধ।

এরপর দ্বিতীয় পর্যায়। মেয়েটির প্রতি সমবেদনা ছিলই। তাই মেয়েটি একটি সমস্যায় পড়লে উপযাচক হয়ে তার কিছু উপকার করে দেয় ছেলেটি। ফের ভাঙা সম্পর্কটি জোড়া লাগে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা চ্যাট ও ফোনেও কথা হতো দু’জনের। যেহেতু মেয়েটি জানেই ছেলেটি তাকে পছন্দ করে তাই ছেলেটির ধারণা এবার তাকে ফেরাবে না সে। মেয়েটিও ঘর থেকে শুরু করে বাইরের নানা বিষয় ছেলেটিকে জানাতো পরামর্শ নিত। নিজের প্রায় সব কাজে ছেলেটির পরামর্শ নিত সে।

তার ইতিবাচক মনোভাব দেখেই এবার ছেলেটি বলে, ‘আমি আপনার অভিভাবকের কাছে যেতে চাই। বিয়ের জন্য আর সময় নেব না।’

মেয়েটি এবার চড়া মেজাজে বলে- আমি কেন আপনাকে বিয়ে করবো? আমিতো একজনকে ভালোবাসি।

ছেলেটিও রেগে বলে, আপনি না প্রথমে অন্য কথা বলেছিলেন। এটাও জানিয়েছেন লোকে বিরক্ত করে বলে সবার সামনে নিজেকে সিঙ্গেল বলে পরিচয় দেন। আর আপনি যদি আমাকে বলতেন যে, একজনকে পছন্দ করেন। তাহলেতো আমি আমার এত সময় আপনার পেছনে নষ্ট করতাম না! আমার আর কোনো প্রয়োজন নেই আপনাকে।

এই বলে সে তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে। কিন্তু কপাল খারাপ মেয়েটি তার অভিভাবকের কাছে তার বিরুদ্ধে নালিশ করেছে! এখন তার গায়ে লেগেছে চরিত্রহীনতার তকমা।

মেয়েটি হয়তো ভেবেছে যে জায়গাগুলোতে সে ছেলেটির মাধ্যমে উপকার পেয়েছে। সেগুলো হয়তো ভুণ্ডুল হতে পারে। তাই সে নিজের স্বার্থেই এ অভিযোগ করে বসেছে। সে তো জানেই- সমাজ পুরুষের বিরুদ্ধে করা নারীর অভিযোগকেই সবার আগে আমলে নেয়।

নিঃসঙ্গ ছেলেটির এখন একটা উপায় চাই, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের। না হলে অভিভাবকের কাছে পরিবারের কাছে আজীবন ছোট হয়ে থাকতে হবে।

এসময় সে প্রমাণটা পেয়ে যায়। প্রমাণের কাগজটা হাতে নিয়ে হাঁটা দেয় অভিভাবকের কাছে। কিন্তু পথে ঘটে যায় দুর্ঘটনা।

না, সিনেমাটিক মৃত্যু নয়। কাক তার গায়ে মলত্যাগ করে দিয়েছে।

তারপরও সে অভিভাবকে গিয়ে কাগজটা দেয়। গন্ধে বিরক্ত অভিভাবক বলেন, কি এটা?

ছেলেটি জানায়, আমার বিগত ছয় মাসের কললিস্ট। যদিও ঘটনা বছর খানেকের তারপরও এটা দেখলেই সব বুঝতে পারবেন। মেয়েটি আমার সঙ্গে কত ঘণ্টা কথা বলেছে। আর কয়টা কল সে দিয়েছে! দিন-রাতের কোন সময় কথা বলেছে।

অভিভাবক কাগজটা হাতে নিয়ে বললেন, যাও পরিষ্কার হয়ে আসো।

ছেলেটি গোসল করে এলে অভিভাবক তার গায়ে হাত বুলিয়ে বলেন, কাকের মল সহজেই ধুয়ে সাফ করলে কিন্তু মনে রেখ দাগ যদি চরিত্রে লাগে তাহলে সারাজীবনের কলঙ্ক হয়ে থাকবে। কোনোদিন তা মুছতে পারবে না। সতর্ক হও, সাবধান হও।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×