কি অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন বাংলাদেশ তো ভারতের সাথে ম্যাচ খেলে ফেলেছে, তাহলে এই ম্যাচ আসলো কোত্থেকে। ভুল নয়, আজ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল প্রীতি ম্যাচ খেলেছে ভারত জাতীয় ফুটবল দলের বিরুদ্ধে ভারতের গোয়ায়। খেলাটি শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। ম্যাচটিতে বাংলাদেশ দূর্দান্ত খেলে ভারতের সাথে ২-২ গোলে ড্র করেছে। দেশের ফুটবলকে আমরা ভুলেই গেছি প্রায়। আমি বলবো এতে আমাদের দোষের কিছু নেই। খেলার মান আর পরিস্থিতিই হয়তো আমাদেরকে ভুলে থাকতে সাহায্য করছে।

মনে আছে যখন হাইস্কুলে পড়তাম তখন দেশীয় ফুটবলের বেশ জনপ্রিয়তা ছিল। রেডিওতে লাইভ খেলার ধারাভাষ্য শুনতাম। সুযোগ পেলে টেলিভিশন এ খেলা দেখতাম। গ্রামে টেলিভিশন দুর্লভ ছিল বলে সেই সুযোগ খুব কমই হত। আবাহনী-মোহামেডান অথবা মোহামেডান-মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ম্যাচ, সেকি উত্তেজনা! জাতীয় স্টেডিয়ামে গিয়েও আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ দেখেছি।

এখন যে কখন লীগ শেষ হয়, আর কখন শুরু হয় সে খবর মনে হয় শুধু আমি নই, অনেকেই রাখেননা। মাঝে মাঝে যাও দেখি, তাতে কিছুটা হযবরল অবস্থা মনে হয়। আর জনপ্রিয়তা তো এখন শূন্যের কাছাকাছি। কিন্তু মানুষ ফুটবলকে তো ভোলেনি। তার প্রমান আমরা পাই বিশ্বকাপ আসলে। আর ইউরোপিয়ান ফুটবল তো অনেকের দৈনন্দিন জীবনের অংশই হয়ে গেছে প্রায়। তাহলে আমাদের নিজের দেশের ফুটবল জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে কেন? আর কেনইবা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে খেলার মান?

আমার ধারনায় নিম্নোক্ত কারনগুলি মৌলিক হিসেবে আসতে পারে (খুবই সংক্ষেপে):
১) প্রত্যেক দেশের ফুটবলের উন্নতির প্রধান যায়গা হচ্ছে তাদের জাতীয় লীগ। অথচ আমাদের দেশের জাতীয় লীগ নিয়ম রক্ষার একটা আয়োজন বাদে বোর্ডের অন্য কোন ভিশন আছে বলে মনে হয়না।
২) আর প্রচার-বিজ্ঞাপনতো পত্রিকার খেলার পাতা আর কোথাও দেখা যায়না।
৩) আমরা বিদেশের খেলোয়ার আমদানি করি; অথচ আমাদের খেলোয়ার কোথাও রপ্তানী হয়না। শুধু বৈদেশিক মুদ্রা না, আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে খেলার মান উন্নয়নে এটা একটা অত্যাবশ্যকীয় উপায়।
৪) ধরাবাঁধা কয়েকটা টুর্নামেন্ট এর বাইরে জাতীয় দলের আর কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ খুব কমই হয়।

আশাকরি কর্তৃপক্ষের কাছে অফিসে প্রফেশনালিজমের চেয়ে মাঠে খেলার প্রফেশনালিজমটা বেশী গুরুত্ব পাবে। কিভাবে দেশের ফুটবলের উন্নতি হয় সে ব্যাপারে লোকদেখানো, এলোমেলো আর স্বপ্নভিত্তিক উদ্যেগ বাদ দিয়ে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ তারা নিবেন। আর দেশের ফুটবলের মান বাড়তে বাড়তে আন্তর্জাতিকভাবে একটা শক্ত ও সম্মানজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।