somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যযুগের সেই বরবর ও ভয়ঙ্কর মৃত্যুদণ্ডগুলো

০২ রা মে, ২০১৬ সকাল ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এটা এক অন্যরকম পদ্ধতি ছিল বেস্টিয়ারাই মৃত্যুদণ্ড আদি রোমান সাম্রাজ্যের একটি ক্রীড়া।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে হিংস্র প্রাণির সঙ্গে লড়াইয়ে নামিয়ে দেওয়া হতো।
ক্ষুধার্ত হিংস্র প্রাণিগুলো ওই ব্যক্তিকে খেয়ে ফেলতো। এই বীভৎস মৃত্যু দেখতে যাওয়া দর্শক উল্লাসে ফেটে পড়তো।
অনেক সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্রও দেওয়া হতো।
হিংস্র পশুদের সঙ্গে লড়াইয়ের সময় নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করতো ওই ব্যক্তি। এতে দর্শকদের উল্লাস আরো বাড়ত।
কিন্তু মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেত না ওই ব্যক্তি।


মৃত্যুদণ্ডের এই পদ্ধতিটি প্রথম চালু হয়েছিল আমেরিকায়। কিন্তু আমেরিকাতে এই পদ্ধতিটি নিষিদ্ধ হলেও
এখন ইরানে এই পদ্ধতিতেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে গলায় দড়ি পরিয়ে দড়িটি উপরে
দিকে টেনে তোলা হয়। দড়িটি তোলার সময় খুব জোরে একটি ঝাঁকি দেওয়া হয় যেন আসামির ঘাড় ভেঙ্গে যায়।
দড়িটি তুলতে ক্রেন ব্যবহার করা হয়।


গিলোটিনে মুণ্ডচ্ছেদ বা শিরকর্তন পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর চালু হয় ১৭০০ শতকে। ওই সময়য়ের বিশেষজ্ঞদের মতে, এ পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে- দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির কষ্ট কম হয়! তাই তখন অনেক দেশ এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে থাকে। শিরোশ্ছেদ করার ধারালো যন্ত্রটিকে বলা হতো গিলোটিন


রিপাবলিকান বিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার এক অদ্ভূত ও অন্যরকম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একজন পুরুষ এবং একজন নারীকে নগ্ন অবস্থায় মুখোমুখি করে একসঙ্গে বেঁধে দেওয়া হতো। তারপর ওই দুজনকে নদীতে ফেলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো।
শুধু ফ্রান্সে এই পদ্ধতি চালু ছিলো। মৃত্যুদণ্ডের এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেন জঁ-কেরিয়ার।


এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত জ্বলন্ত কয়লার বিছানার উপর চাপ দিয়ে ধরে রাখা হতো।
এই পদ্ধতিতে মৃত্যু হতো অনেক দেরিতে। শরীরের চামড়া পুড়ে সম্পূর্ণ কালো হয়ে যেত।
মারা যাওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি নরক যন্ত্রণা ভোগ করতো।


এই পদ্ধ্যটি মৃত্যুদণ্ড ছিল অন্যরকম বরবরতা । মধু মাখানোর ফলে বন্দির শরীরের প্রতি কীটপতঙ্গ আকৃষ্ট হতো।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির গায়ের চামড়া ভেদ করে বাসা বাধতো কীটপতঙ্গ। এভাবে ডায়রিয়া গ্যাংগ্রিন এবং মরণঘাতী রোগে
আক্রান্ত হয়ে অনাহারে দীর্ঘ যন্ত্রণায় মারা যেত দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি। পার্সিয়ানদের মধ্যে স্কাফিজম মৃত্যদণ্ড প্রচলিত ছিলো।


মাজাটেল্লো এক অত্যন্ত বীভৎস মৃত্যুদণ্ড ছিল। যা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তকে শহরের একটি উঁচু মঞ্চে হাত পা বেঁধে রাখা হতো।
তারপর তার মাথায় কাঠের তৈরি হাতুড়ি দিয়ে জোরে আঘাত করা হতো। আর এভাবে আঘাত করে দণ্ডপ্রাপ্তের মাথা থেতলে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো। এই আইন অষ্টাদশ শতকের দিকে পোপের আইন চালু হওয়া দেশগুলোতে এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতো।


বাঁশের ব্যবহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের কষ্টদায়ক এ পদ্ধতিটি এশিয়ার দেশগুলোতে প্রচলন ছিলো। এ পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে একটি বাঁশ বনে বেঁধে রাখা হতো। নতুন বাঁশ গজাচ্ছে এমন স্থানে হাত-পা শক্ত করে বেঁধে রাখা হতো দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে। বাঁশ দ্রুত বৃদ্ধি পায় (দৈনিক সর্বোচ্চ এক ফুটের মতো), তাই ধীরে ধীরে বাঁশ দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির দেহ ফুঁড়ে বের হয়ে যেত। এটি খুব ধীর প্রক্রিয়া। একারণে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিটি মারা যাওয়ার আগে অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করতো।

ছবিতথ্যঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৬ সকাল ৯:১৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×