আলেক্সান্দ্রিয়া হল মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং এই শহরেই মিশরের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর অবস্থিত। আলেক্সান্দ্রিয়া উত্তর পশ্চিম মিশরে ভূমধ্যসাগরের উপরে এবং নিচে প্রায় ৩২ কিলোমিটার বা ২০ মাইল পর্যন্ত বিস্তিত। এই শহরের মিশরের বিখ্যাত গ্রন্থাগার বিবলিওথেকা আলেক্সান্দ্রিয়া অবস্থিত। এটি শিল্প এবং বাণিজ্য কেন্দ্র কারন এর সাথে সুয়েজ হয়ে আসা প্রাকৃতিক গ্যাস এবং তেলের পাইপলাইন রয়েছে। এই শহরটি গভর্ণর শাসিত এবং এই ধরনের শহরকে মিশরে মুহাফাজা বলা হয়।
রাচীনকালে এই শহরটি বাতিঘর এবং গ্রন্থাগারের যা প্রাচীন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার জন্য বিখ্যাত ছিল। সম্প্রতি আলেক্সান্দ্রিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় সামুদ্রিক নৃবিজ্ঞান এর উপর ভিত্তি করে পরিচালিত গবেষণায় । আলেক্সান্ডারের আগমনের পূর্বে যখন এই শহরের নাম ছিল রাকোটিস সেই সময় এবং টলেমীয় রাজত্বের সময়ের আলেক্সিন্দ্রিয়া সম্বন্ধে নতুন অনেক তথ্যই পাওয়া যাচ্ছে।
আলেক্সান্দ্রিয়ার নামকরণ করা হয়েছে এর প্রতিষ্ঠাতা আলেক্সান্ডার দি গ্রেটের নামানুসারে। আলেক্সান্ডারের মৃত্যুর পর তার অন্যতম সেনাপতি টলেমী আলেক্সান্ডারের সাম্রাজ্যের এই অংশের অধিকারী হন। এটি ছিল মিশরের টলেমীয় শাসকদের রাজধানী এবং হেলেনীয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম শহর যা আয়তন এবং সম্পদে একমাত্র রোমের থেকে পিছনে ছিল। মিশরের মধ্যযুগীয় মুসলিম শাসকগণ যখন কায়রো শহরের গোড়াপত্তন ঘটান তখনই আলেক্সান্দ্রিয়ার পতন ত্বরান্বিত হয় এবং উসমানীয় রাজত্বের সময় এটি নিছক একটি ছোট জেলেপাড়া হিসেবে পরিগণিত হয়।
আলেক্সান্ডার দি গ্রেট আলেক্সান্দ্রিয়া নগরী প্রতিষ্ঠা করেন আনুমানিক ৩৩৪ খৃস্টপূর্বাব্দের দিকে। সঠিক তারিখ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠার সময় এর প্রকৃত নাম ছিল Αλεξάνδρεια ,Aleksándreia। এই নগরী তৈরিতে আলেক্সান্ডারের প্রধান স্থপতি হিসেবে কাজ করেছেন রোডসের ডাইনোক্রেটস। এই সম্পর্কে প্রাচীন বর্ণনাসমূহ বেশ জটিল এবং বিভিন্ন কারন দ্বারা প্রভাবান্নিত। ইতিহাসবেত্তা অ্যারিয়ানের বর্ণনায় আলেক্সান্ডার কিভাবে শহর তৈরির প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছিলেন তা জানা যায়। আলেক্সান্ডারের ভবিষ্যৎ দ্রষ্টারা বিশেষ করে টেলমেসাসের অ্যারিস্টান্ডার কিছু পূর্ব লক্ষণ বিবেচনা করে বলেছিলেন যে এই শহর ব্যাপক উন্নতি করবে এবং বিশেষ করে শষ্যের দিক দিয়ে এই উন্নতি ত্বরান্বিত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:২৪