৩৭ তম বি,সি,এস লিখিত পরীক্ষায় এই প্রশ্নটা আসবে নিশ্চিৎ।
পি,এস,সি(পাল সার্ভিস কমিশন) থেকে স্বপ্নযোগে দৈববাণী হয়ে আমার কাছে এসেছিলো।
সময় :- অসীম।
পূর্ণমান :- ১০০০।
পালীও(পোলিও নয়) রোগ বলতে আপনি কী বঝেন? এই রোগে আক্রান্তদের পাঁচটি সেরা বৈশিষ্ট্য লিখুন। রোগীদের স্বরুপ বিশ্লেষণ করুন।
ইতিবাচক এবং নিতিবাচক প্রভাব সমুহ লিখুন। উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে ভুলবেননা।
ভূমিকা :-
তারা পালদুম পালদুম বাজায়-
পালজানের ঢোল।
তারা পালদুম পালদুম বাজায়।
সব গিলে তারা শুধু গিলেনা--
পালিও রোগের ক্যাপসুল।
তারা পালদুম পালদুম বাজায়।
পালিও এক প্রকারের মারাত্মক ব্যাধি ইহা সংক্রামক রোগ তবে চোঁয়াছে রোগ নয়। এটা মস্তিষ্কে অতিরিক্ত সাজেশনমূলক স্বল্প জ্ঞানক্ষরণ জাতীয় রোগ। এই রোগের আবির্ভাব হয় আনুমানিক ২০১০ সালে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে ডাকা হয় pals বা people addicted to lul syndrom। মনে রাখবেন pals আর পাইলস কিন্তু এক নয়। একটা হয় পশ্চাৎ দেশে আরেকটা হয় মস্তিষ্কে। পাল নামের একটা ভাইরাসের আক্রমণেই এই রোগ হয়ে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে দেশের এক শ্রেণীর আজব তরুণ-তরুণীদের মস্তিষ্কেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশী। এই রোগে আক্রান্তরা পড়াশোনায় যতটা মনোযোগী তার ছেয়েও বেশী মনোযোগী এক ধরণের ফেইসবুক পোস্ট পড়ায়। একটা বিশেষ কিসিমের বক্তৃতাপটু মানুষের প্রতি এদের দরদ অতিরিক্ত বেশী। কম্বলের লোমবাছা এদের স্বভাব। এরা বোঝেনা যে গড্ডালিকাপ্রবাহ তেমন সুফল বয়ে আনেনা।
হাগার হাগার চিকিৎসা বিজ্ঞানী সম্মেলিত প্রচেষ্টায়ও পারেননি এই রোগকে যথাযথ রুপে সংজ্ঞায়িত করতে। প্রখ্যাত চিকিৎসাবিদ জনাব পিবনে পাব্দুল পাল এই রোগের অনেক যথাযথ সংজ্ঞা প্রদান করেছেন। উল্লেখ থাকা আবশ্যক তিনার নাম অনুসারেই এই রোগের নামকরণ করা হয়েছে।
""অনার্স শেষ বর্ষে পড়ুয়া তরুণ-তরুণী কতৃক ফেইসবুকে কাউকে অন্ধভাবে ফলো করার প্রবণতা এবং বই পড়া থেকে বিরত থেকে ফলোয়িং মেথোডের প্রতি অতিরিক্ত মনোনিবেশের কারণে মস্তিষ্কে একটা ভাইরাস ঢুকে যাকে সংক্ষেপে বলা হয়ে পাল ভাইরাস। ইহার প্রভাবে যে রোগ হয় তাহাকে বলা হয় পালিও রোগ"" জিকা ভাইরাস শরীরে ঢুকলে যেমন গর্ভবতী মায়ের গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্কের আকৃতি ছোট হয়ে যায়, তেমনই পাল ভাইরাস মগজে ঢুকলে চিন্তার পিরিধি কমে যায়।
আক্রান্তরা যে বৈশিষ্ট্যসমূহ ধারণ করে :-
১. এদের যন্ত্রণায় এই টাইপের রম্য লেখা পোস্ট করা যায়না সহি সালামতে। একেবারে তুঘলকি কাণ্ড বাধিয়ে দেয় পোস্টে এসে।
২. এরা যাকে ফলো করে উহার পোস্টে এসে ধুমাইয়া লাইক মারে আর কমেন্ট করে।
৩. উহারা নিজেদের অতিরিক্ত জ্ঞাণী ভাবে।
৪. ইহাদিগের মতে বি,সি,এস পাশ করা ছাড়া বংগদেশে আর কোনভাবেই ক্যারিয়ার গড়া যায়না।
৫. এদের সিংহভাগই অবশেষে সফল হয়না।
রোগীদের স্বরুপ বিশ্লেষণ :-
ডিয়ার খাতা নিরীক্ষক। এই অংশটা সাধু ভাষায় রচিত হইবে। এবার আমি লিখি আপনি একটু পড়িয়া ফেলেন।
এই রোগে আক্রান্তরা যাহার ভক্ত হইয়া থাকে তাহার সম্পর্কে কিছু বলিতে গেলেই উহারা গুষ্টি সহকারে আপনার উপর হুমড়ি খাইয়া পড়িবে আর বুঝিয়া না বুঝিয়া খালি গালি গালাজ করিবে। ইহাদের একটা প্রিয় শব্দ হইতেছে "পরশ্রীকাতর" একটায় আসিয়া কমেন্টে ইহা লিখিয়া যাইবে আর বাকিগুলো সুনিপুণ কারিগরের মতো এই শব্দখানাকে ফটোকপি করিয়া লইবে অতঃপর কমেন্ট বক্সে পুশ করিবে। ইহারা নিজেরাও জানেনা যে তাহারা যদি পালিও রোগ থেকে মুক্ত হইয়া শরীর থেকে পালের বাতাস সরাইয়া ঠিকঠাক নিজের বুদ্ধিতে পড়াশোনা করিয়া পরীক্ষা দিতো যাইয়া তাহা হইলে এতোদিনে নিশ্চই কিছু না কিছু হইয়া যাইতো। ইহাদের টাইপিং স্পিড বেশ চকাম হইয়া থাকে সচরাচর কারণ উহারা উস্তাদকে ফেইসবুকে ডিফেন্স করিতে করিতে সম্পূর্ণ কোয়ার্টি কিপেড ভালো করিয়া মুখস্থ করিয়া ফেল। তাহাদের বাড়িতে যদি কখনও পালন শাক রান্না করা হয় সাধারণত তাহারা রাঁধুনীকে ভৎর্সনা করিয়া থাকে। ইহারা জগৎের খাদ্যসম্ভারের মধ্যে পালন শাককে বড়ই অপছন্দ করে।
একজন সাধারণ মানুষ যেখানে রাতে মশারী টানিয়ে ঘুমায় সেখানে বড় মাত্রার পালীয় রোগীরা পাল টানিয়ে ঘুমায়।
পরিবারের মুরব্বীগণ তিনাদের লুংগীকে পালিও রোগীদের হাতের নাগাল থেকে অনেক দূরে রাখেন কারণ লুঙ্গী কাটিয়াই ইহারা পাল তৈরী করিয়া থাকে। ইহাদের একজন দুইজনের মাঝে মাঝে পাইলস হইতে দেখা যায় আসলে ফলো করিতে করিতে তাহারা [খাওয়া-ছাড়া] প্রক্রিয়ার কথা ভুলিয়া যায় ফলস্বরুপ পায়খানা কঠিন হইয়া পাইলস বাধাইয়া ফেলে।
ইতিবাচক প্রভাব :-
পালীয় রোগ এমন কিসিমের রোগ যার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই দিকই আছে। বলতে গেলে এই রোগটার ধর্ম অনেকটা দুমুখো সাপের মতো।
পৃথিবী বদলে গেছে, বদলেছে মানুষের পঠন পদ্ধতি। আপনি জানেন কী?এখন একটু আধটু কৌশলি না হলে কোন ধরণের প্রতিযোগিতায় আপনি টিকে থাকবেননা। দেখা গেলো আপনার হাতে সময় আছে ৬ মাস মাত্র কৌশল শিখতে শিখতেই লেগে গেলো ৪ মাস। প্রশ্নের ধরণ বুঝতেও সময় লাগে সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ আপনি নিলে লাভবান হবেন নিশ্চই।
অনুপ্রেরণা এমন এক বিশেষ্য যা সফলতার জন্য খুব বেশী দরকারি। একজন মানুষ; যে স্বপ্ন দেখাটা প্রায় ভুলে গিয়েছে তাকে স্বপ্ন দেখানোটা আবার শেখানো না গেলে সে পথভ্রষ্ট হবে। কিছু কিছু মটেভেটর মার্কা ভাইরাস আছে এরা স্বপ্নটা বেশ ভালো দেখায়।
নেতিবাচক প্রভাব :- ইহা একটি ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ধপাস ধপাস। এর প্রভাবটা প্রাথমিক ভাবেই ধরা পড়েনা তবে তিল তিল করে আপনার অনেক বিনাশ সাধন করে ফেলে অনেকটা আপনি টেরই পাননা। যখন টের পান তখন কাঞ্চনমূল্য পরিশোধ করেও ক্ষতিটা পোষাতে পারবেননা। ভাইরাসজনিত রোগগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো সে আপনাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করবে তারপর আপনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে চলে যাবে অন্যতে। এভাবে সে তার উদ্দেশ্যকে সফল করতে থাকে। ভাইরাসদের উদ্দেশ্য হলো রোগ সাধন করা মাগার এই ভাইরাসের উদ্দেশ্য যে কি! সেটা অজানা। অনেকেই মনে করেন বিয়ে শাদী টাইপের কিছু হতে পারে এর মুখ্যম উদ্দেশ্য। পাল ভাইরাসের আরেকটা সমস্যা হলো সে বাতাসের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে সহজে। শুধু যে প্রবাহিত হয় তাও কিন্তু নয় সেটা প্রভাবিতও করে খুব করে।
উপসংহার :- ইহা নিছকই একটা ফানপোস্ট। এখানে কাউকে ব্যাক্তিগত ভাবে হেয় করা হয়নি। রম্য লেখার বিষয় হতে পারে বারাকা ওবামা, হতে পারেন রবীন্দ্রনাথ। সুতরাং পালিও রোগে আক্রান্ত ভাই ও বোনেরা কমেন্ট করবেন বুঝে শুনে।
দেশ ও গাতির সমীপে মিনতি, এই রোগে আক্রান্তরা আমাদেরই ভাই আমাদেরই বোন এদের জন্য প্রার্থনা
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২৮