somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিক্ষিত

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তিনদিন ধরে টানা ঝিমিঝিমি বৃষ্টি হচ্ছে,চাইলেও উপায় নেই কারণ ছাতা নেই তাই এই তিনদিন ইচ্ছার গলা টিপে বদ্ধ ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলাম ., এই তিনদিন যে আমার শুধু বিরহে কেটেছে বাইরে না বেড়ানোর জন্য তা কিন্তু নয়, এই তিনদিন আমি চুটিয়ে স্বপ্ন দেখেছি , ভেবেছি অসংখ্য বার, তা দিয়েই বুনেছি বেশ কিছুটা কল্পনা,,,,লক্ষী পুজোর দিনে ঠিক যেমনটি ছিল তোমার আল্পনা .
হাহহাহাহা ওকে ওকে আর করছিনা না হেয়ালি, জানো তো আজ সকালে সূর্য্য উটেছে আহ কি সুন্দুর সেই আলো চারিদিকে যেন নতুন স্বপ্ন আবার ঝলমলিয়ে উটছে, গাছ গুলো বৃষ্টির ছোঁয়া ছেড়ে নতুন এই আলোকে রাঙিয়ে নিয়েছে নিজের সর্বাঙ্গে.নিস্তব্ধ চারিপাশ আবার যেন ফিরেছে বাস্ততায়,
আর একটু শুয়ে থাকলে ভালো হতো কিন্তু না সকাল ৮টা বেজে গিয়েছে, না চাইলেও এবার উটতে হবে , এই তিনদিন একটুও বইযে হাত দেয়নি .
উটে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম, কিন্তু একটা সমস্যা আছে লাইব্রেরিটে যখন ইংরেজি বই অনেক সময় ধরে পড়ি তখন না আমার খুব , না না খুবের থেকে অনেক বেশি ভীষণ ভাবে ঘুম পাই তাই আজ ঠিক করেছি বাংলায় লেখা বই গুলো নিয়ে যাবো .
সকালের টিফিন করে লাইব্রেরিতে পৌঁছালাম, এন্ট্রি খাতায় সই করে সটান ডুকে পড়লাম রিডিং রুমে,একধারে একটা টেবিল চেয়ার ফাঁকা পেয়ে বসে পড়লাম,চোখ পাশে যেতেই দেখলাম পাশের টেবিল এ এক সুদর্শনি মেয়ে মন দিয়ে মোটা একখানি ইংরেজি বই পড়ছে .
ইশশ এই আর একটা সমস্যা আমার , পড়ার সময় পাশে যদি কোনো সুদর্শনি মেয়ে থাকে মনে হয় একটু কথা বলি একটু পরিচিত হয় কিন্তু সেটা কোনদিন ও হয়ে ওঠেনি আজ অবধি .তাই সবার মত আমিও পড়ার মাঝে মাঝে একটু দেখার চেষ্টা করতে লাগলাম যদি ভাগ্যক্রমে তাকে আমার উপস্থিতা টা জানানো যাই, বেশ কয়েক বার ধরাও পড়লাম কিন্তু ছি বেহায়ার মতো তবুও বার বার তাকে দেখার ব্যথ চেষ্টা করছিলাম .
অনেক টা সময় পার হয়ে গিয়েছে খিদে ও পেয়েছে কিন্তু কেন জানিনা একদম যেতে ইচ্ছা করছে না আজ তাই না চাইলেও চুপচাপ পড়ছি আর তাকে দেখছি, হঠাৎ সে বই টা বন্ধ করে বেড়িয়ে গেল, মনে হয় দুপুরের খাবার খেতে গেল,আমিও তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে পড়লাম .
ধ্যাত এই সময়ই এ কি এই ভুলটা হওয়াটা খুব জরুরি ছিল আমি সাইকেল এর চাবিটা টেবিল এর উপর ফেলে এসেছি, উপায় নেই তাই আবার দৌঁড়ে চাবিটা আনতে গেলাম , চাবিটা নিয়ে তাড়াহুড়ো করে বাইরে এসে দেখি সামনে নেই , যা চলে গেল!
কি আর করবো মন খারাপ করে সাইকেল নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে এলাম কিন্তু হঠাৎই পিছু থেকে কে জানো ডাকলো ......
পিছু ফিরে দেখলাম সেই মেয়েটি বাইরে একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে
-Hey Mr.
- জি ! আমাকে ডাকছেন কি ?
-Yes! You come here
-জি বলুন ( ভিতরে ভিতরে আমি শেষ ভয়ে, পা গুলো কাঁপছে, বুকটা ধুপ ধুপ করছে স্বজরে স্বগতিতে )
-Your name?
-I am আহ আমার নাম রাতিন্দ্র , রাতিন্দ্র মুখার্জি
-What is your department and which session of you ?
-আমি Msc completed করেছি Anthropology তে ( এটা শুনেই যেন মেয়েটা আকাশ থেকে পড়লো )
-What ! Msc completed ! অথচ বাংলায় পড়ছ, বাংলায় any writter আছে নাকি,আমি তো সব foreing writter এর book পড়ি (কেমন যেন এক ব্যঙ্গচ্চলে আমাকে বললো মুখে হালকা বিদ্রুপের হাসি)
-অপমানে ততো সময়ে আমি মাথা নিচু করে আছি, কেন জানি না ওর মুখের দিকেই আর তাকাতে পারছি না .
- ও হ্যাঁ One more , Don’t look at me again, mind it ! যতসব কথা থেকে যে আসে এরা ( বলে সাইকেল চালিয়ে মেয়েটি চলে গেলো )
-হতভম্ব হয়ে পাথরের মত গাছের নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম, কথা গুলো যেন কোথাও গিয়ে লেগেছে ভীষণ ভাবে, সেই ক্ষত থেকে ঝরছে এই বিষন্ন ঘ্রিনাক্তক কষ্ট গুলো, বার বার চাইলেও বেড়িয়ে আসতে পারছিনা এই ঘৃনা অপমান থেকে,অনেক কষ্ট করে দুপুরের খাবার খেলাম বুঝতে পারছি না কি হয়ে গেলো , এখন কি করবো সেটাও বুঝে উটতে পারছি না, খাওয়ার পর সাইকেল নিয়ে একটি নির্জন বেদির উপরে বসলাম, চুপচাপ অনেক তা সময় বসলাম, ঘন্টা খানেক বাদে ফিরলাম আবার রিডিং রুম ফিরার একদম ইচ্ছা ছিল না, পড়ার প্রতি মন টাও যেন আজ উটে গেছে কিছুই ভালো লাগছিল না .
ফিরে ওর দিকে তাকাতেই দেখলাম এক অবহেলা এড়িয়ে যাওয়ার মুখ ভঙ্গিমা, ওর চোখে ছিল প্রচন্ড অহংকার শিক্ষিত হওয়ার মনে হলো যেন নিজেকে অনেক বেশি কালচারাল ভাবছে আর আমরা তো অনেক ছোট নগন্য !
এই অপমান আর সর্হ্য হলো না আমার , অনেক হয়েছে আর না ! ঠিক করলাম একে একটা শিক্ষা দিতেই হবে, সাথে সাথে খাতার একটি পৃষ্টা ছিড়লাম তাতে মাত্র একটি ব্যাক লিখলাম , লিখে ভাঁজ করে ওর টেবিল এ রেখে আমি বই নিয়ে বেড়িয়ে এলাম লাইব্রেরি থেকে .....
পৃষ্টাতে লেখিছিলাম .....
“তোর মত.....(ডাসের) শিক্ষিত ইংল্যান্ড আমেরিকার রাস্তায় ভো ভো করে ঘুরে বেড়ায়”
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ২:২৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×