এই শীতে সর্বাধিক আলোচিত শব্দটি হচ্ছে তাপমাত্রা। চলুন প্রথমে জেনে নিই তাপমাত্রা কী? তাপমাত্রা হচ্ছে গরম বা ঠান্ডার পরিমাণ। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে গরম আর কমে গেলে ঠান্ডা অনুভূত হয়। এই তীব্র ঠান্ডা/শীতকে কাবু করার জন্য আমি আপনাদের জন্য বিনামূল্যে নিয়ে এসেছি সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে কোনরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই মহামূল্যবান কিছু পদ্ধতি।
পদার্থবিজ্ঞানে তাপগতিবিদ্যার তিনটি সুত্র আছে।এই সূত্রগুলো দিয়ে পদ্ধতিগুলো ব্যাখ্যা করছি-
তাপগতিবিদ্যার প্রথম সূত্রটিকে সাধারণত বিবৃত করা হয় এভাবে যে, কোন বদ্ধ ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ শক্তির পরিবর্তন বস্তুটিতে প্রয়োগকৃত তাপ ও ব্যবস্থা কর্তৃক কৃত কাজের বিয়োগ ফলের সমান।
যারা বিজ্ঞান কম বুঝেন তাদের জন্য লেপ/কম্বল দিয়ে ব্যাপারটা আরো সহজ করে বলছি-
বদ্ধ ব্যবস্থা মানে হচ্ছে লেপ/কম্বল দিয়ে আপনি খাটের ওপর যে ব্যবস্থাটা তৈরি করেন সেটা। অভ্যন্তরীণ শক্তি হচ্ছে আপনার কম্বলের নিচের অবস্থা। অর্থাৎ বিজ্ঞান বলছে যে, লেপ/কম্বলের ব্যবস্থায় অভ্যন্তরে শক্তির পরিবর্তন হবে। ফলে আপনি ধীরে উষ্ণতা অনুভব করবেন।
তাপগতিবিদ্যার দ্বিতীয় সূত্রটি হচ্ছে: ‘তাপ কখনও নিজে থেকে শীতল বস্তু হতে গরম বস্তুতে যেতে পারে না।’
ব্যাখ্যা: আপনার শরীর যখন ঠান্ডা হবে তখন সেই ঠান্ডা কিন্তু নিজে নিজে গরম বস্তুতে চলে যেতে পারবে না। আপনাকেই এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ১ম সূত্রে বর্ণিত ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। অতএব, ২য় সূত্র থেকে ১ম সূত্রটি প্রমাণিত হয়ে গেল।
তাপগতিবিদ্যার শূণ্যতম (৩য়) সূত্রটি হচ্ছে,যদি A ও B দুটি বস্তু হয় এবং এদের মধ্যস্থতাকারী একটি বস্তু M হয়,তাহলে A ও B সমতাপীয় অবস্থায় থাকলে A ও M এবং B ও M সমতাপীয় অবস্থায় থাকবে।।
(অপ)ব্যাখ্যা: সূত্রের A হচ্ছে আপনার লেপ/কম্বল এবং B হচ্ছেন আপনি নিজে। এখন লেপ/কম্বল দিয়েও যখন আপনার শীত মানাচ্ছে না তখন মধ্যস্ততাকারী হিসেবে M নামক একটি বস্তু নিতে হবে। সেটি হতে পারে বৈদ্যুতিক হিটার। এটিকে A ও B এর মাঝখানে রাখলে গ্যারান্টি সহকারে আপনি উত্তাপ পাবেন। হিটার না থাকলেও সমস্যা নাই। আপনি আপনার পেট নিঃসৃত প্রাকৃতিক গ্যাসকে এক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন। এটি কম্বলের অভ্যন্তরে উষ্ণতা বৃদ্ধি করবেই।
আবার পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম উপশাখা ক্যালিরিমিতির মূলনীতিই হলো-
ভিন্ন উষ্ণতার দুটি বস্তুকে পরস্পরের সংস্পর্শে রাখলে তাপীয় সাম্যাবস্থায় আসার জন্য তাদের মধ্যে তাপের আদান-প্রদান হয় । উষ্ণ বস্তুটি তাপ বর্জন করতে থাকে এবং শীতল বস্তুটি তাপ গ্রহণ করতে থাকে । তাপের এই গ্রহণ ও বর্জন চলতে থাকবে যতক্ষণ না উভয়ের উষ্ণতা সমান হয় ।
ব্যাখ্যা: মনে করুন মোবাইল টিপতে টিপতে আপনার মোবাইলের তাপমাত্রা হয়ে গেল ৪৯ ডিগ্রি সে. আর আপনার পায়ের তাপমাত্রা -২ ডিগ্রি সে.। এই মূহূর্তে মোবাইলটারে পায়ের লগে ঘষাঘষি করানো শুরু করুন। অতএব, আপনার পদযুগল ততক্ষণ পর্যন্ত মোবাইলের সংস্পর্শে রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তাপীয় সাম্যাবস্থায় না আসে। একেবারে পদার্থবিজ্ঞানের বাস্তবিক প্রয়োগ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬