পর্ব ২৭:
আহমাদের মা ও ফারিহা আকাশ থেকে পড়ল মনে হলো। এমন কথা শুনে যে কেউ ঘাবড়ে যাবে। পরিবেশ এখনো শান্ত হয়নি, ডাক্তার বললেন, ফারিহা সুস্থ আছে। মা কোনা রকমে নিজেকে সামাল দিলেন। বাবাও আহমাদের এ কথা শুনে হতবাক হয়ে রইলেন। কিছুক্ষণ পর, ডাক্তার বললেন, আহমাদের জ্ঞান ফিরেছে আর মাকে দেখতে চাচ্ছে। মা ভেতরে গেলেন আর কথা বললেন। আস্তে আস্তে আহমাদের সকল কিছু মনে করতে থাকে কিন্তু কিছুই মনে করতে পারে না। পরক্ষণেই ফারিহার কথা জিজ্ঞেস করলে মা বললেন, ও এখন সুস্থ। এ কোন পরিস্থিতিতে পড়তে হল আহমাদকে। এবারে আহমাদ মাকে বলল, মা তুমি ওকে পাঠিয়ে দাও আর তুমি নাস্তা করে এসো। মা নাস্তা করতে গেলেন তখন সকাল ৭টা বাজে। রাজিয়া নামের ঐ মেয়েটি আহমাদের পাশে বসলো আর তাকে আগের ছবি দেখিয়ে মনে করাতে থাকল। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। রাজিয়া এও বললো,আহমাদের ২টি সন্তানের ১টি মেয়ে। আস্তে আস্তে আহমাদ শান্ত হলো আর বললো, আচ্ছা তুমি তাহলে এও জেনে থাকবে আমার ভুলে যাওয়ার রোগ আছে? রাজিয়া বললো, অবশ্যই আমি জানি। আহমাদ বললো, আপাতত তুমি আমাদের বাড়িতে উঠে মায়ের মন জয় করতে থাক। আর আমি বাব, মা ও আমার ফারিহাকে মানাতে পারি কী না? এদিকে মাও এসে পড়ায় তাদের সুবিধাই হলো, মায়ের সাথে পরামর্শ করে আহমাদ কখনো বিফলে যায় নি। একপর্যায় সমোঝতা হলো এভাবে যে, ছবি ও কাবিননামা যেহেতু সৎ বলে মনে হচ্ছে সেহেতু রাজিয়া আহমাদের স্ত্রী হিসেবেই আহমাদের বাসায় থাকবে। আর ফারিহা ও রাজিয়া ১দিন করে আহমাদকে পাবে। এভাবে মাই সমোঝতা করে দিলেন। আহমাদের হাসপাতালে থাকা প্রায় ৩দিন হয়ে গেল। এরপরে ডাক্তার তাকে ছেড়ে দিলেন। আহমাদকে বাসায় আনা হলে রাজিয়া ও ফারিহাও এলো। আহমাদকে এখনো চিন্তা করতে নিষেধ করে দিয়েছেন ডাক্তার। যা হোক সকলেই রাজিয়ার সাথে ভালো ব্যবহার করতে লাগলো। এই কয়েকদিনে রাজিয়া সকলের মন জয় করে নিয়েছে। এভাবে কেটে গেল আরো ১টি বছর। অসুস্থতার কারণে তার মাদ্রাসায় ক্লাস ঠিকমতো নিতে পারে না। তাই সে এখন ছুটিতে আছে। রাজিয়াকে আহমাদ এখনোও ওভাবে চিনতে পারে নি, কিন্তু তার অস্পষ্টতা কাটতে শুরু করেছে। ফারিহা এখন রাজিয়ার শুধু সতীনই নয় বরং ভালো অভিভাবক হয়ে গেছে। এখন সবাই রাজিয়াকে মেনে নিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৬