somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীর মর্যাদা

০৮ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লজ্জা নারীর ভূষণ, অলংকার স্বরূপ। কিছু বেতিক্রম থাকা সত্ত্বেও বলবো, লাজুক বৈশিষ্ট্যতা একমাত্র বাঙালি নারীর মধ্যে দেখা যায়। আদর, সম্মান, মান-মর্যাদা এগুলো পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মের নারীর মধ্যে দেখা যায়না। বাঙালি নারী লজ্জা পায় প্রথম প্রপোজ পেলে, লজ্জা পায় প্রিয় মানুষটির চোখে চোখ রেখে কথা বলতে, তারা লজ্জা পায় বিয়ের প্রস্তাব পেলে এমনটি পৃথিবীর আর কোন নারীর মধ্যে দেখা যায়না। এই অপরূপ সৌন্দর্য আল্লাহ একমাত্র বাঙালি নারীকেই দান করেছেন, সেই সাথে তাদের অসীম ভালবাসার ক্ষমতাও দিয়েছেন। বাঙালি নারী সাহসী, দুর্বার, নির্ভীক। তারা সাহসী হয় তার ভালবাসার জন্য, পরিবারের জন্য, প্রিয় মানুষটির জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে।
.
বাঙালি নারীদের মন খুব নরম, সেই মন যখন কারো প্রেমে পড়ে তখন আরো নরম হয়ে যায়, কিন্তু তারা সেটা প্রকাশ করতে পারেনা, হয়তো করতে চায়না। অসীম ধৈর্য, ত্যাগ, কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা, আপনজনদের খুশী রাখার জন্য নিজের সবকিছুকে বিসর্জন দেয়ার ক্ষমতা আল্লাহ একমাত্র বাঙালি নারীদের দিয়েছেন।
.
আমাদের দেশের নারীদের জন্মের পর থেকেই ত্যাগ করতে হয়, মধ্যবিত্ত পরিবারে যদি ছেলে বড় হয়, আর মেয়েটি ছোট হয়, তাহলে চাওয়া পাওয়ার দিক থেকে অনেক বাবা-মা ছেলের আবদারগুলোকে আগে প্রাধান্য দেন। মেয়েটিকে এই বলে বুঝানো হয় যে, "তোর বড় ভাই সংসারের বড় ছেলে ওকে তাড়াতাড়ি বড় হয়ে সংসারের হাল ধরতে হবে, পরে তুই তোর ভাইয়ের কাছে ইচ্ছেমত আবদার করতে পারবি" মেয়েটিকে সবসময় আশার আলো দেখানো হয়, কিন্তু তা পূরণ করা হয়না। সে কোন বিষয় নিয়ে পড়ালেখা করতে চায়, তার কি করতে ভালো লাগে তা জিজ্ঞেস না করেই পরিবারের বড়দের বিশেষ করে বড় ভাইয়ের ইচ্ছাগুলো তার উপর চাপিয়ে দেয়া হয়।
.
একটি মেয়েকে জন্মের পর থেকে ত্যাগ করতে হয়। ত্যাগ করতে হয় তার ইচ্ছেগুলো, মনের অনুভূতিগুলো। ত্যাগ করতে হয় বয়ফ্রেন্ডকে, পিতার ঘর ত্যাগ করতে হয়, বিয়ের পর ত্যাগ করতে হয় তার নাম, সন্তান লাভের পর ত্যাগ করতে হয় তার রাতের ঘুম, খাওয়া-দাওয়া। সন্তান বড় হয়ে খারাপ আচরণ করলে ত্যাগ করতে সন্তানকে নিয়ে তার সমস্ত আশা-ভরসাকে। আবার ছেলের বউ যদি খারাপ হয়, তাহলে ত্যাগ করতে হয় তার আপন স্বামীর ঘর, মেয়েটির শেষ জীবনের ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রম, আর একমাত্র সঙ্গী বলতে থাকে চোখের জল।
.
মেয়েমানুষ আল্লাহ তায়ালার অপূর্ব সৃষ্টি গুলোর মধ্যে একটি। আল্লাহ বলেছেন, “যখন আমি কোন বান্দার প্রতি খুব খুশী হই তখন তাদের কন্যা সন্তান দান করি”
আমাদের নবীজী বলছেন, “মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত”
কথাগুলো একবার মন থেকে চিন্তা করে দেখুন নারীদের কত মর্যাদা, কত সম্মান দেয়া হয়েছে। এখন আপনার বিবেকের কাছে আমার প্রশ্ন, আমরা কি নারীদের সেইভাবে সম্মান করছি?? আমাদের বর্তমান সমাজে নারীদের অবস্থান কোথায়??
.
ইসলাম নারীকে অনেক অনেক অনেক সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে নারীদের উচিত ইসলামিক আদর্শ অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত করা, আর আমাদের সমাজের উচিত নারীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর।
.
► পরিশেষে একটা কথায় বলবো, মেয়েরা আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টি। একটি মেয়ে হয় কারো মেয়ে, কারো বোন, কারো স্ত্রী, কারো মা। মেয়েদের মন খুব নরম, সেই মন শুধু একটা জিনিস চায় সেটি হল প্রিয় মানুষটির কাছ থেকে অফুরন্ত ভালবাসা। বাবা-মা, ভাই, স্বামী, সন্তান, সন্তানের বউ, শ্বশুর, শাশুড়ি সমস্ত আপন জনদের কাছ থেকে ভালবাসা চায় একটি মেয়ের মন। মেয়েদের সেই নরম মনে কখনো আঘাত করোনা বন্ধু, কখনো কষ্ট দিয়ো না। শুধু তাকে আপন করে ভালবাসা দিয়ে দেখো, সমস্ত পৃথিবীর সাথে লড়াই করবে শুধু তোমার জন্য। সেই তুমি হতে পারো তার বয়ফ্রেন্ড, তার স্বামী, কিংবা তার ছেলে।
মেয়েদের বুঝতে শিখুন, তাদের সাথে কখনো খারাপ ব্যাবহার করবেন না, আমরা তো মানুষ, তাহলে আমরা কেন পশুর মত হিংস্রতা প্রকাশ করি?? এটা কি আমাদের শোভা পায়?? হে সমাজ নারীদের সম্মান যদি দিতে না পারো তাহলে অন্তত অসম্মান করোনা, করোনা, করোনা, করোনা..
.
লিখাঃ নাহিদ হোসাইন (NHD)
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×