somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

জমি ক্রয়ে যেসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।

০৫ ই মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জমি ক্রয়ে লক্ষ্যনীয় বিষয়াবলীঃ
১. জমি কেনার সময় ক্রেতাকে অবশ্যই জরিপের মাধ্যমে প্রণীত খতিয়ান ও নকশা যাচাই করতে হবে।
২. জমির তফসিল (মৌজা, খতিয়ান ও দাগ নম্বর, দাগে জমির পরিমাণ) জানতে হবে।
৩. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিএস, এসএ, আরএসসহ সর্বশেষ জরিপের পরচা দেখতে হবে।
৪. বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে মালিক হলে তাঁর মালিকানার যোগসূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।
৫. বিক্রেতা উত্তরাধিকারসূত্রে মালিক হলে পূর্বমালিকানা ক্রমান্বয়ে মেলাতে হবে।
৬. উত্তরাধিকারসূত্রের জমির ক্ষেত্রে বণ্টননামা (ফারায়েজ) দেখতে হবে।
৭. জরিপ চলমান এলাকায় জমি কেনার সময় বিক্রেতার মাঠপরচা যাচাই করে দেখতে হবে। মাঠপরচার মন্তব্য কলামে কিছু লেখা আছে কি না তা ভালো করে দেখতে হবে। যেমন AD লেখা থাকলে বুঝতে হবে, অত্র খতিয়ানের বিরুদ্ধে তসদিক পর্যায়ে (Dispute in Attestation Stage) আপত্তি আছে। এ ক্ষেত্রে জরিপ অফিস বা ক্যাম্পে গিয়ে পরচাটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে।
৮. বিক্রেতার দেওয়া দলিল, ভায়া দলিল, খতিয়ান, পরচা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে গিয়ে স্বত্বলিপির (২ নম্বর রেজিস্টার) সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।
৯. নামজারি পরচা, ডিসিআর খাজনার দাখিলা (রসিদ) যাচাই করে দেখতে হবে। বকেয়া খাজনাসহ জমি কিনলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের সব দায় ক্রেতাকে বহন করতে হবে।
১০. জমিটি সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত কি না তা সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে জেনে নিতে হবে। কারণ সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রিযোগ্য নয়।
১১. জমিটি খাস, পরিত্যক্ত বা অর্পিত (ভিপি) কি না কিংবা অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশকৃত কি না, তা ইউনিয়ন ও উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের অফিসের এলএ শাখা থেকে জেনে নিতে হবে।
১২. বিবেচ্য জমি কোনো আদালতে মোকদ্দমাভুক্ত কি না তা জেনে নিতে হবে।
১৩. জমিটি সরেজমিনে দেখে এর অবস্থান নকশার সঙ্গে মিলিয়ে বিক্রেতার দখল নিশ্চিত হতে হবে।
১৪. সরকার-নির্ধারিত ফি দিয়ে স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এবং জেলা রেজিস্ট্রারের অফিসে তল্লাশি দিয়ে বিবেচ্য জমির হেবা, এওয়াজ ও বেচাকেনার সর্বশেষ তথ্য জেনে নিতে হবে।
১৫. প্রস্তাবিত জমিটি ঋণের দায়ে কোনো ব্যাংক বা সংস্থার কাছে দায়বদ্ধ কি না তা নিশ্চিত হতে হবে।
১৬. প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কি না তাও দেখতে হবে।

এছাড়া আরও যেসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলো হচ্ছে -
১৭। প্রস্তাবিত জমিটি সরেজমিনে গিয়ে দেখতে হবে। তাহলেই আপনি বুঝতে পারবেন জমিটি আসলে কেমন। আদৌ ভাল জমি নাকি ডোবা-নালা-পুকুর।
১৮। সংলগ্ন জমির মালিক বা এলাকাবাসীর নিকট হতে জমির বিষয়ে খোঁজখবর নিতে হবে। এরাই আপনাকে জমির বিষয়ে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দিতে পারবেন।
১৯। বিক্রেতার কাছ থেকে তার মালিকানার প্রমাণ স্বরূপ দলিলাদি ও অন্যান্য কাগজপত্রের ফটোকপি চেয়ে নিতে হবে। জমির দলিল, ওয়ারিশ সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), সিএস/ এসএ/ আরএস/ মহানগর/ মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর, খাজনার দাখিলা ইত্যাদির ফটোকপি সংগ্রহের চেষ্টা করতে হবে।
২০। এসি (ল্যান্ড) অফিস থেকে পূর্ব মালিকের অর্থাৎ বিক্রেতার নামে মিউটেশনের কাগজপত্র (মিউটেশন পড়চা, ডিসিআর) সঠিক আছে কি না তা যাচাই করে নিতে হবে। যে জমিটি কিনতে চাচ্ছেন তা বিক্রেতার নামে অবশ্যই মিউটেশন করা থাকতে হবে। বিক্রেতার নামে মিউটেশন না থাকলে জমি রেজিস্ট্রেশন হবে না।
২১। জমিটির কাগজপত্র যাচাইয়ে সন্তুষ্ট হয়ে কেনার বিষয়ে মনস্থির করলে বা বায়না করলে আপনার নাম, ঠিকানা, জমির দাগ-খতিয়ান উল্লেখ করে জমিতে একটি সাইনবোর্ড দিন। একইসাথে পত্রিকায় ছোট আকারের হলেও একটি বিজ্ঞাপন দিন। এতে পড়ে কোন সমস্যা হলেও আপনি আইনগত সুবিধা পাবেন। তাছাড়া, এই জমির অন্য কোন দাবীদার বা ওয়ারিশ থাকলে, মামলা মোকদ্দমাসহ অন্য কোন সমস্যা থাকলে তা প্রকাশিত হবে এবং আপনি ভবিষ্যতের একটি স্থায়ী ও জটিল সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন। প্রয়োজনে এবং অবস্থা বুঝে আপনার জমি কেনার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করুন।
২২। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রশিদ নেয়ার এবং সাক্ষী রাখার চেষ্টা করবেন। যতটা সম্ভব চেক বা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা-পয়সা লেনদেন করবেন।
২৩। জমি কেনার ক্ষেত্রে সরাসরি জমির প্রকৃত মালিকের সাথেই আলোচনা করা উচিৎ। মধ্যস্বত্ত্বভোগী বা ভায়া মিডিয়ার মাধ্যমে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের আলোচনা যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া ভাল। এতে যেমন জমির নিষ্কন্টকতার বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্ত হতে পারেন, তেমনি দাম- দরের ক্ষেত্রেও প্রতারণার শিকার হতে পারেন। মনে রাখবেন, জমি কেনার সময় কখনই তাড়াহুড়ো করবেন না। কম দামে কেনার আকর্ষণে ভালভাবে যাচাই না করে জমি কিনতে গিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

জনৈক হাজী সাহেব, আমার বন্ধু মানুষ। জমি কিনে বিপদে পড়েছেন। না ছাড়তে পারছেন, আর না রাখতে পারছেন। মিথ্যে প্রলোভনে জমি ধরিয়ে দিয়ে এখন তার রাস্তা আটকে দেয়া হয়েছে। দেন দরবার করেও শেষ হচ্ছে না। সুতরাং, জমি ক্রয়ে আগেই সাবধান না হলে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যায়।

শুভকামনা সকলের জন্য।

ছবিঃ অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×