
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (জোর পূর্বক অব্যহতিপ্রাপ্ত) আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমাদ বিন কাসেম (আরমান) দীর্ঘ আট বছর পর গতকাল ফিরে এসেছেন। এই দু'জনের জীবিত প্রত্যাবর্তনে অবশেষে গুমের মত ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা এত দিন ধরে যে চেপে রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ পেল। প্রমানিত হলো আয়নাঘরের অস্তিত্ব ও বাস্তবতা। একটি রাষ্ট্র কতটা দেউলিয়াত্বের শিকার হলে রাষ্ট্র কর্তৃক এই ধরণের গুমের ঘটনা ঘটানো হতে পারে- ভাবতেও গা শিউরে ওঠে। অথচ হাসিনা এবং তার চ্যালা আসাদুজ্জামান খান কামালসহ মিথ্যাবাদীদের অনেকগুলোকেই এতটা বছর ধরে বড় বড় গলা করে বারবার বলতে শোনা যেত যে, "কাউকে গুম করা হয়নি, রাষ্ট্র কাউকে গুম করেনি, যাদের পাওয়া যাচ্ছে না বলা হচ্ছে তারা স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করে সরকারের উপরে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে"। এই দু'জনের প্রত্যাবর্তনে আবারও প্রমানিত হলো, হাসিনা একজন মিথ্যাবাদী। এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরাও।
এসব মিথ্যুকদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। গুমের মত ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জড়িত টপ টু বটম প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি। গুমের শিকার বাকিদের অতি দ্রুততার সাথে, আজ এবং এই মুহূর্তে, এক্ষনই মুক্ত জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাই। অন্যথায়, কালক্ষেপনের সুযোগে গুমের শিকার অনেককে হয়তো চির দিনের মত সরিয়েও দেয়া হতে পারে, যাতে গুমের যাবতীয় প্রমান, চিহ্ন ও আলামত বিনষ্ট করে দেওয়া যায়। এমন রোমহর্ষক ঘটনাও ঘটানো হতে পারে পালিয়ে যাওয়া অপশক্তির রেখে যাওয়া কুশীলবদের দ্বারা। সুতরাং, গুমের শিকার ব্যক্তিদের দ্রুত মুক্তির বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠনসহ সকল মহলকে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাই।
উল্লেখ্য যে, ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে, তিন বিরোধীদলীয় নেতার সন্তানদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অজ্ঞাত স্থানে তুলে নিয়ে যায়। আলোচ্য দু'জন ছাড়াও তিন জনের মধ্যে আরেকজন ছিলেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী। আমান আজমিকে তার বাসা থেকে পরিবারের সদস্যদের সামনেই তুলে নেয়া হয়েছিল। মূলতঃ তিনটি ক্ষেত্রেই একাধিক সাক্ষী থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাদের গুম হবার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে। জাতিসংঘ এই তিন ব্যক্তির অপহরণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং শেখ হাসিনার সরকারকে দেশে ক্রমবর্ধমান গুমের ঘটনা তদন্ত করার আহ্বান জানায়। হুম্মাম কাদের চৌধুরী ২০১৭ সালের মার্চ মাসে ঘরে ফিরে আসেন এবং বলেন যে কারা তাকে গ্রেফতার করেছিল তা তিনি "মনে করতে পারছেন না"। সর্বশেষ গতকাল ফিরে এলেন আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও আহমাদ বিন কাসেম (আরমান)। -তথ্য নেয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া হতে।
আমরা চাই, গুমের শিকার প্রতিটি মানুষ ফিরে আসুক তাদের পরিবারের কাছে। এই কাজটি যত দ্রুত করা হবে ততই মঙ্গল। কারণ, এই ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপনের মানে হচ্ছে, আরও কোনো মায়ের বুক খালি হওয়ার আশঙ্কাকে বাড়িয়ে দেয়া। গুমের শিকার আরও কোনো ব্যক্তিকে চিরদিনের তরে পৃথিবী হতে সরিয়ে দিয়ে দুর্বৃত্তদের দায়মুক্তির সুযোগ করে দেয়া। অতএব, সোচ্চার হোন, আওয়াজ তুলুন। গুমের শিকার সকলের জীবিত ফেরত আসা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্তু আন্দোলন অব্যহত রাখুন।
আট বছর পর ফিরলেন আমান আযমী ও আরমান
এই ব্লগ তল্লাটে শেখ হাসিনার লড়াকু সৈনিক সোনাগাজী এবং হাকা'কে এই পোস্ট উৎসর্গ করছি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


