somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

মুদ্রাদোষ; কখনও হয়ে উঠতে পারে চরম বিরক্তির বিষয়

০৯ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মুদ্রাদোষ; কখনও হয়ে উঠতে পারে চরম বিরক্তির বিষয়

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

প্রথমেই আমাদের জেনে নেওয়া প্রয়োজন মুদ্রাদোষ জিনিষটা কী? আমরা জানবো তবে তার আগে একটা উদাহরণ দিই। একবার তাবলিগের এক সাথী কোনো একটি মসজিদে মাগরিব বাদ বয়ান করছিলেন। তিনি তার বয়ানে একটি কথা এত অধিক পরিমানে বলছিলেন যে, শেষ পর্যন্তু আমার সেখানে বসে থাকাই সম্ভব হচ্ছিল না। তিনি প্রত্যেক কথার আগে পরে বলেই চলেছিলেন, "বলেন যে"। এই এক যন্ত্রণা। তীব্র মাথা ব্যথার মত যন্ত্রণা। "বলেন যে", "বলেন যে" করতে করতেই তার জান কুরবান অবস্থা। আমার বুঝেই আসছিল না, কেন তিনি এমন "বলেন যে", "বলেন যে" করছিলেন। যাক, শেষমেষ কিছুক্ষণ এই শ্রুতি বিড়ম্বনা সহ্য করার পরে একপর্যায়ে মসজিদ হতে বেরিয়ে গিয়ে সে যাত্রায় নিষ্কৃতি মিলেছিল।

চলুন, এখন দেখে নেয়া যাক, মুদ্রাদোষ কাকে বলে?

দৈনন্দিন কথাবার্তা কিংবা চালচলনে অনেকের বিশেষ বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট প্রকাশের অভ্যাস দেখা যায়। সেই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট প্রকাশের মাত্রাটা খুব বেশি হলে প্রকাশক ব্যক্তি আরাম পেলেও শ্রোতা কিংবা দর্শকের তাতে শান্তি হারাম হতে পারে। এগুলোকে বাংলায় 'মুদ্রাদোষ' বলে সংজ্ঞায়িত করা যায়।

মুদ্রাদোষের রকমফেরঃ

মুদ্রাদোষের আকার প্রকার কিংবা রকম ইত্যাদি ঠাহর করা কঠিন। ভাব ও লক্ষণে বুঝে নিতে হয় কোনটা কোন ধরণের মুদ্রাদোষ। কেউ নাক বাঁকা করে তো কেউ চোখ পিট পিট করেই চলে। আবার, বিনা কারণেই কারও চোখ বড় বড় হয়ে যায় তো কারও ভুরু কোঁচকানো বা টানার প্রবণতা দেখা যায়। কেউ অপ্রয়োজনেই পুরো মুখাবয়ব এমনভাবে কোঁচকাতে থাকেন, দেখলে মনে হয় প্রচণ্ড ব্যথা লাগছে। কিন্তু ব্যথা নয়, আসলে এটাই হয়ে গেছে তার অভ্যাস। কারও আবার কাঁধ তুলে ঘাড় বাঁকানোর অভ্যাস। এমনও হয় অনেকের বার বার জিভ বের করে ঠোঁটে কিংবা গোঁফে লাগানো নিয়মিত স্বভাব। আবার, দাঁত দিয়ে নখ কাটা, বারবার হাত-পা কিংবা মাথা ঝাঁকানো, অযথাই সবার সামনে নাক অথবা কান পরিষ্কার করা, অপ্রয়োজনীয় কিংবা একই কথা বারবার বলতে থাকা - এর সবই মুদ্রাদোষ। এসব মুদ্রাদোষের অধিকাংশের শুরুটা হয়তো ছোটবেলাতেই হয়ে থাকে। তবে, বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে পরেও মুদ্রাদোষ শুরু হতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে। এছাড়া, বার বার গলা পরিষ্কার করার চেষ্টা করা, জোরে কিংবা আস্তে একটা অদ্ভুত আওয়াজ বা শব্দ গলা দিয়ে বের করা, বা কথায় কথায় গালাগালি করার প্রবণতাকেও মুদ্রাদোষের মধ্যেই ধরা যায়।

এ তো গেল অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মুদ্রাদোষের ব্যাপার। কথাবার্তায়ও মুদ্রাদোষের অদ্ভূত প্রকাশ দেখা যায় অনেকের ক্ষেত্রে। একজনকে দেখা গেছে, তিনি কথায় কথায় বলেন, "হলো গিয়া"। তার প্রতিটি বাক্যে অন্ততঃ কয়েকবার "হলো গিয়া" থাকতেই হবে। "হলো গিয়া", "হলো গিয়া" করতে করতে তার আসল কথা বলাই কঠিন হয়ে যায়। ছোট বেলার স্মৃতি। এক স্কুল শিক্ষক ভদ্রলোককে দেখেছি, তিনি সাঙ্ঘাতিকভাবে "মোট কথা"য় বিশ্বাসী। তার সকল কথাতেই স্থান পায় "মোট কথা"। অন্যভাবে বললে, "মোট কথা" ছাড়া তিনি কোনো কথাই বলতে পারেন না। "মোট কথা", "মোট কথা" বলতে বলতে তার জীবন বিসর্জনের দৃশ্য ভাবতেই আজও আনমনা হয়ে যাই।

তবে এই স্কুল শিক্ষক ভদ্রলোককেও ছাড়িয়ে যেতে দেখেছি আরেক ভদ্রলোককে। ইনি নিরক্ষর লোক। ইনি স্কুল শিক্ষক ভদ্রলোকের চেয়ে আরেককাঠি সরেস। ইনিও "মোট কথা"রই ভক্ত। তবে, এর কন্ঠে "মোট কথা"রও বারোটা বেজেছে। এই বেচারা "মোট কথা"কে আওড়াতে আওড়াতে "মোক্কথা"য় নিয়ে ঠেকিয়েছেন। কথায় কথায় বলেন "মোক্কথা"। "মোক্কথা", "মোক্কথা" বলতে বলতে এর মুখে ফেনা তুলতে দেখেছি আমি। তাকে ঝগড়া বিবাদের মধ্যেও "মোক্কথা" ত্যাগ করতে দেকা যেত না কখনোই।

এমন কত মানুষের কত বিচিত্র মুদ্রাদোষের ঘটনা যে জীবনে দেখেছি, তার ইয়ত্তা নেই। আরেকদিন সময় পেলে আরও কিছু অদ্ভূত ঘটনা পত্রস্থ করবো ইনশাআল্লাহ।

মুদ্রাদোষ কি কাটিয়ে ওঠা যায়?

আসলে অধিকাংশ মুদ্রাদোষ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সমস্যা তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সমস্যা গুরুতর হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা শারীরিক ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। এমন অবস্থায় প্রয়োজন অনুসারে মনস্তত্ত্ববিদ বা সাইকিয়াট্রিস্ট বা উপযুক্ত অন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

শুভকামনা সকলের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:০১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×