somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান: দায়িত্ববোধের একটি সরল স্বীকারোক্তি

১৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান: দায়িত্ববোধের একটি সরল স্বীকারোক্তি

সূরা আন নাহল -এর ১২৫ নং আয়াতের প্রথম অংশ, যার সরল বঙ্গানুবাদ: "আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও উপদেশ শুনিয়ে উত্তমরূপে", অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

প্রিয় পাঠক,

যখন আমি “.................... ইসলামের হৃদয়ছোঁয়া আহ্বান” শীর্ষক চিঠিটি লিখেছিলাম, তখন থেকে একটি প্রশ্ন আপনাদের অনেকের মনে ঢেউ তুলেছে—“কেন তাকে এই আহ্বান জানালেন?” কেউ কেউ বিস্ময় ভরা চোখে তাকিয়েছেন, কারণ অতীতে আমার ও তার মধ্যে ছিল তীক্ষ্ণ মতবিরোধের কাঁটাতার। এমনকি, আমার কলম তার সমালোচনায় তুলে ধরেছিল শাণিত বাক্যের ধার। তাই আপনাদের এই প্রশ্ন অত্যন্ত স্বাভাবিক, যেন শান্ত নদীতে হঠাৎ উঠেছে তরঙ্গের ঝিলিক।

হ্যাঁ, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া আমার দায়িত্ব। এই পরিবর্তনের পেছনে কোনো কূটকৌশল নেই, নেই কোনো স্বার্থের ছায়া বা নাটকীয়তার রঙিন পর্দা। এটি হৃদয়ের গহীনে জেগে ওঠা এক নিঃশব্দ ডাক, যেন ভোরের কুয়াশায় ফুটে ওঠা শিশিরের মতো স্বচ্ছ, যেন নক্ষত্রের আলোয় পথ খুঁজে পাওয়া পথিকের উপলব্ধি। এটি এক গভীর টান—যেখানে সদিচ্ছা, দায়বোধ, আর পরকালের ভয় একত্রে মিলে রচনা করে অন্তরের এক অমলিন সুর।

আমরা এই ব্লগের আঙিনায় বহু বছর একসঙ্গে পথ চলেছি। একে অপরের লেখা পড়েছি, তর্কের উত্তাপে মত বিনিময় করেছি, কখনো হৃদয়ের সেতু বেঁধেছি, কখনো বা বিরোধের কাঁটায় রক্ত ঝরেছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন আমার অন্তরকে কুরে কুরে খায়—আল্লাহর তাওহিদের আহ্বান, রাসূল (সা.)-এর মমতাময় বার্তা, সেই অমৃতময় সত্য কি আমি তার কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি? তার মত বিশেষ বিশেষ আরও যারা রয়েছেন, তাদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি? এই প্রশ্ন আমার হৃদয়ে বেদনার স্পন্দন জাগায়, যেন কোনো প্রিয়জনের হাতছাড়া হওয়ার শূন্যতা।

রোজ হাশরের সেই মহামুহূর্তে, যদি আল্লাহ তাআ'লা জিজ্ঞাসা করেন, “যাদের সঙ্গে এত বছর ভার্চুয়াল জগতে কাটিয়েছ, আমার বাণী কি তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলে? তাদের হেদায়েতের জন্য কি তুমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলে, নাকি নিজের সীমানায় বন্দি ছিলে? নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলে?”—তখন আমি কী উত্তর দেব? আমার কণ্ঠ কি তখন নীরব হয়ে যাবে, নাকি লজ্জায় মাথা নত হবে?

শুধুমাত্র নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকা স্বার্থপর বান্দা তো আল্লাহ তাআ'লা চাননি। তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন এই ধরাধামে তাঁর খলিফা হিসেবে—যারা নিজে ন্যায়ের পথে চলবে, অন্যকেও আহ্বান জানাবে সেই পথে, আর অন্যায়ের অন্ধকার থেকে ফিরিয়ে আনবে মানুষের হৃদয়। তিনি এমন এক মহান রাসূল (সা.) আমাদের জন্য পাঠিয়েছেন, যিনি বিরুদ্ধবাদীর দ্বারে বারবার গিয়েছেন তাওহিদের সুমধুর বার্তা নিয়ে। এমনকি, একজনের দরজায় গিয়েছেন ছয়শত বার! আমি তাঁর উম্মত হয়ে কীভাবে নির্লিপ্ত থাকতে পারি? কীভাবে আমার হৃদয় নিশ্চুপ হয়ে থাকবে?

এই লেখা, এই আহ্বান কারও ব্যক্তিত্ব পরিবর্তনের দুঃসাহস নয়। এটি আমার দায়িত্ব পালনের এক বিনীত প্রয়াস, হৃদয়ের দরজায় মৃদু করাঘাতের কোমল স্পর্শ। সত্য কখনো জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায় না, তবে ভালোবাসার আলোয় তাকে আহ্বান করা যায়। যদি আল্লাহ কাউকে হেদায়েত দান করেন, আর আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সেই পথে একটি পুষ্পের পাপড়ি হয়ে পড়ে, তবে তা আমার জীবনের পরম সৌভাগ্য।

আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবার অন্তরকে কোমল করুন, যেন তা তাঁর নূরে ভরে ওঠে। সত্যকে গ্রহণযোগ্যভাবে উপস্থাপনের তৌফিক দিন, সত্য গ্রহণের সাহস দিন। ভালোবাসার পথে একে অপরের হাত ধরার শক্তি দিন, যেন আমরা এক কাফেলায় চলি তাঁর দিকে। আমাদের হৃদয় যেন তাঁর আলোয় উদ্ভাসিত হয়, আর আমাদের পথ যেন ধাবমান হয় তাঁরই রহমতের কাছে, যেন নদী ছুটে যায় সাগরের বুকে।

শুভ কামনা সকলের জন্য,
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:০৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ইরানের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা অসম্ভব: ইসরায়েল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ১:২০




ইসরায়েলের পক্ষে ইরানের ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করা অসম্ভব। এটি করতে পারে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেই এটি করা সম্ভব- এমনটা জানালেন ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত ইয়েচিয়েল লিটার।

সোমবার ( ১৬ জুন) মেরিট... ...বাকিটুকু পড়ুন

somewherein blog টিম এর দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই জুন, ২০২৫ দুপুর ২:৫৪


ব্লগ ব্যবহারের শর্তাবলী ২খ. যেকোন ধরণের মন্তব্য, যার মর্মার্থ আমাদের কাছে গঠনমূলক না হয়ে সংঘাতপ্রয়াসী / উস্কানীমূলক অথবা সমালোচনামূলক না হয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ মনে হলে তা নীতিমালা অনুযায়ী সরিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্যাবলেট খেলেই নির্মূল হবে রক্তের ক্যানসার? নতুন ওষুধ আসছে দেশে, দাম কত?

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই জুন, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৬





ট্যাবলেট খেলেই আর ক্যানসার ছড়াবে না? রক্তের ক্যানসার নির্মূল করতে নতুন ওষুধ আসতে চলেছে দেশে। গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যাল ওষুধটি বানিয়েছে। আমেরিকার এই ওষুধ নির্মাতা সংস্থার ওয়ার্কশপ রয়েছে ভারতেও।... ...বাকিটুকু পড়ুন

খোমেনীর স্বৈরশাসনের সূচনা: ধর্মীয় বিপ্লব থেকে রক্তাক্ত দমন

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ১৭ ই জুন, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮

খোমেনীর স্বৈরসাশন ও ইরানের কালো ইতিহাস:
============================

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ইরানে যে 'ধর্মনির্ভর রাষ্ট্রশাসন' প্রতিষ্ঠিত হয়, তার মূল স্থপতি ছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী। ইসলামী প্রজাতন্ত্রের নামে তিনি দেশটিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংরক্ষিত নারী আসন: সংস্কারের নামে চাপিয়ে দেওয়া, না কি গোপন এজেন্ডার বাস্তবায়ন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৭ ই জুন, ২০২৫ রাত ৯:৪৭


বাংলাদেশে সংস্কারের নামে আজ যে কাণ্ড চলছে, তা দেখে পুরনো প্রবাদটি মনে পড়ে—"অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট।" একটি ইন্টেরিম সরকার, যাদের চেয়ারে বসা একটি জটিল ক্ষমতার সমীকরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×