আরিফ দরিদ্র পরিবারের সন্তান। শিক্ষার আলো পায়নি। গ্রামে দিনমজুরী শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। সাধারণত দরিদ্র পরিবারগুলোতে ২০ বছরে ছেলেদের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু আরিফ এখনো অবিবাহিত। তবে দু একটা প্রেম সে সবসময় চলমান রাখে। এলাকার মেয়েদের উত্যাক্ত করার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে শুনা যায়।
অন্যদিকে পারভিন বেগম ২ সন্তানের মা। স্বামী থাকে বিদেশে। আমাদের পাশের বাড়ীর বাসিন্দা। একদিন এক বড় ভাইয়ের সাথে তাদের ঘরে গিয়েছিলাম। আমাদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে আমাদের জন্য নাস্তা আনতে ভিতরে চলে গেছেন পারভিন বেগম, তবে তার ব্যাক্তিগত মোবাইলটা রেখে গেছেন আমাদের সামনে। কোন কারনে আমার ইচ্ছা হল যে আমি একটু মোবাইলটা ধরে দেখি; একেবারেই মনের অবচেতনে; বন্ধুদের মোবাইল দেখলে যা সবসময় করি। যদিও কারো ব্যাক্তিগত মোবাইল ধরা উচিৎ নয়। মোবাইলের গ্যালারী না খুলতেই ‘কেচু খুঁড়তে গিয়ে বের হয়ে আসল সাপ’। এই সাপ সবাই মিলে দেখার অযোগ্য। নিজেই হতভম্ব হয়ে গেলাম কিভাবে একজন মহিলা এই সাপ রাখতে পারে। মহিলা আসার আগেই তাড়াতাড়ি মোবাইলটি পুর্বাস্থায় রেখে দিলাম।
তার ছটফট আর ছনমনে অঙ্গভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম তার ভেতরে আগুন জ্বলছে। মনেহয়, এ আগুন আরো দাউ দাউ করে জ্বালিয়ে দেয় ক্লিপগুলো।
তো কয়েকদিন পরের ঘটনা। আরিফসহ কয়েকজন দিনমজুর গিয়েছিল পারভিনদের বাড়িতে মাটি কাটার জন্য। সেখান থেকেই তাদের দেখা হয়, কথা হয়। আস্তে আস্তে সম্পর্ক বাড়তে থাকে। একে অপরের প্রতি দুর্বলতা তৈরি হয়। এক পর্যায়ে তা গাঢ় প্রেমে রুপ নেয় সবার অগোচরেই।
একদিন হঠাত খবর শুনা গেলো মহিলাটি ঐ ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে। এই খবর শুনে গ্রামের সবাই হতভম্ব। মহিলাদের বাড়ির নাম পাটওয়ারী বাড়ী, তাদের বাড়ীর সুনাম ডাক রয়েছে এলাকায়। এই ঘটনাটি তাদের জন্য চরম মানহানিকর এবং লজ্জার।
তো তারা দুজন বিয়ে করে ফেলল। ছেলের বাড়ীতে সারা গ্রাম থেকে লোক আস্তে শুরু করল তার বৌ দেখার জন্য। পুরানা বৌ নতুন মোড়কে দেখা আর কি।
গ্রামে এ নয়ে সালিশ দরবার, ঘাত-প্রতিঘাত কম হয়নি। কোন একদিন কে বা কারা ছেলেটাকে ভেদম মারা মারল, সম্ভবত পাটওয়ারী বাড়ীর লোকেরা।
অন্যদিকে মহিলার আগের প্রবাসী স্বামী মহিলাকে শিক্ষা দেয়ার জন্য একটা খেলা খেলল। বিদেশ থেকে ফোন করে বলল “ যা করছ ভুল করছ, কিন্তু এখনো তোমার সময় আছে আমার কাছে ফিরে আসার, আমি সবকিছু ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখব”। আগের স্বামীর এ মনভুলানো কথায় সাড়া দিয়ে ছেলেটীকে তালাকনামা পাঠাল। ছেলেটিও রাজী হল।
কিন্তু এরপররই আগের স্বামী তাকে ঘরে উঠাতে অপরাগতা প্রকাশ করল। মহিলাটি পড়ে গেল উভয় সংকটে। তার আমও গেল চালাও গেল।
বিদেশ থেকে এসে লোকটি নতুন বিয়ে করল। আর মহিলাটি হয়ে গেল উদ্ভ্রান্ত, ঘৃণিত এক মানুষ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


