অনুগল্প : পেনডেমিক অভিশাপ
নাজনীন
তখন পৃথিবীতে যুদ্ধ বিগ্রহ লেগেই থাকতো, মানুষে মানুষে হিংস্রতা, জাতিতে জাতিতে বিদ্বেষ দাঙ্গা, ধর্ম নিয়ে কোলাহল মারামারি... সারা পৃথিবী জুড়ে এক অস্তিতিশীল পরিবেশ.. কোথাও শান্তি নাই..
এমন সময় বহুদূর ভিন্নগ্রহে বাস করা একদল সুবিধাবাদী এলিয়েন বিদ্রোহ ঘোষণা করলো সুপার পাওয়ার এর বিরুদ্ধে তাদের দাবী পৃথিবী থেকে মনুষ্য জাতিকে নির্মূল করে দিতে হবে নইলে তারাই এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নিবে... প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হলেন সুপার পাওয়ার তাদের দুঃসাহস দেখে এবং ততক্ষনাৎ তিনি তাঁর সামরিক বাহিনী পাঠিয়ে দিলেন শত্রু পক্ষ কে স্ববংশে ধ্বংস করার জন্য............
কিন্তু ততদিনে অত্যন্ত বুদ্ধিসম্পন্ন এই এলিয়েন গুলো একটি মারাত্মক অস্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেছিলো... বিশাল আকৃতি থেকে তারা এতো ক্ষুদ্রকায়ে পরিণত হতে পারতো যে একমাত্র অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েই তাদের দেখা সম্ভব ছিল... তারা এই আকৃতির নাম দিয়েছিলো "পেনডেমিক"... এই পেনডেমিক গুলো খুব সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে, বাতাসে ভেসে বেড়াতে, খুব সহজে যেকনো শরীরে প্রবেশ করে তাদের ইচ্ছেমত বিধ্বংসী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় পারদর্শী ছিল... যখন সুপার পাওয়ার তাদের কথা না মেনে তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ঠিক এমনই সময়ে তারা পেনডেমিক হয়ে আত্মগোপন করলো এবং বেশিরভাগ পৃথিবীতে নেমে এলো ভয়ঙ্কর অভিশাপ হয়ে.. মানব জাতির শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে এক অশুভ ধ্বংসলীলায় মেতে উঠলো... মাত্র কয়েকদিন এর মধ্যে সারা ভূমন্ডলে ছড়িয়ে পরলো... দেশ থেকে দেশে মহামারী প্রকট আকার ধারণ করতে লাগলো, মানবজাতি সমস্ত বৈষম্য ভুলে এক হতে লাগলো এই ভয়ংকর রোগ থেকে বাঁচার জন্য, সারা পৃথিবী কিছু দিনের মধ্যেই যেনো এক বিশাল বিষাক্ত বন্দিশালায় রূপান্তরিত হলো.. সুপার পাওয়ার পর্যন্ত থমকে গেলো এই পেনডেমিকের ভয়বহতা দেখে.. সারা পৃথিবীর ডাক্তার, গবেষকরা এক হলেন এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য, লেবে লেবে প্রস্তুতি চললো মারণাস্ত্র তৈরীর জন্য.... সুপার পাওয়ার তাঁর সুপার ডুপার ইন্টিলিজেন্স একদল এলিয়েন্স কে নির্দেশ দিলেন মানুষের গবেষণায় সাহায্য করার জন্য, তিনি চাইছিলেন মানুষের বুদ্ধিতেই পর্যুদস্ত হোক এই পেনডেমিক গুলো... মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব এক সময় আবিষ্কার করে ফেললো এর মারণাস্ত্র ও প্রতিষেধক অস্ত্র আর তা দিয়ে তাঁদের শরীরে প্রবেশ করা অশুভ এলিয়েন গুলো কে একের পর এক ধ্বংস করতে লাগলো আর যাদের শরীরে এখনো প্রবেশ করেনি তাঁদের ভিতর ঢুকিয়ে দিলো প্রতিষেধক এর বর্ম যাতে শরীরে প্রবেশ করার আগেই ওরা মারা যায়... এভাবে অগুনিত, অসংখ্য, বিপুল সংখক অশুভ ও খারাপ এলিয়েন গুলো ধরাশায়ী হতে লাগলো, নিজেদের তৈরী করা মৃত্যুর গর্তে এবার নিজেরাই পড়তে লাগলো, পালাবার পথও বন্ধ হয়ে গেলো...
সুপার পাওয়ার হাততালি দিয়ে উঠলো : বাহ্!! সাবাস মানবজাতি, সাবাস