somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময়টা খারাপ, শুনছি অতীতের পদধ্বনি!!

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংগ্রামী জাতি হিসেবে বাংলাদেশের একটা ঐতিহ্য আছে। পৃথিবীর একমাত্র দেশ যারা মাতৃভাষার জন্য সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে এবং সফল হয়েছে। ১৯৫২সাল থেকে সংগ্রামের শুরু। তারও আগে ব্রিটিশদের দেশ থেকে তাড়ানোর সংগ্রামেও বাংলা ভাষা-ভাষীরা ছিলো সক্রিয় এবং সংগ্রামী। বিদ্রোহী কবি নজরুল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে জেল খেটেছেন, মাষ্টার দা সূর্যসেন, ক্ষুধিরাম, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোরওয়ার্দী, মাওলা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এই সব কিংবদন্তীদের নাম সোনার হরফে লেখা। সংগ্রামী পূর্বপুরুষদের রক্ত আজও কোটো কোটি বাংলাদেশীদের রক্তে প্রবাহমান।

প্রতিটি আন্দোলনের বিরোধীতাকারীরা ছিলো হিংস্র, চতুর এবং স্বৈরাচারী মনোভাব সম্পূর্ণ। ন্যায্য অধিকার বা কাংক্ষিত পাওনাকেও এরা গায়ের জোরে উড়িয়ে দিত। যুক্তিক দাবীকেও ক্ষমতার জোড়ে অবহেলা করত। বুলেট দিয়ে, অত্যাচার করে, শোষন করে আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখতে চাইত। কিন্তু সংগ্রামী জাতি কখনই মুখ বুঝে অত্যাচার, অনিয়ম, শোষন সয্য করার পক্ষে ছিলো না। তারা যখনি অন্যায় দেখেছে, অনিয়ম দেখেছে, অত্যাচারের ভয় না করে রাজপথে নেমে এসেছে, শ্লোগানে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করেছে, অধিকার আদায় করে ছাড়ছে। কখনোই পরাজিত হয়নি। সফলার হার ১০০%। জনতার জয় অবসম্ভাবী। জনতা চাইলে কোন দাবী অপূর্ণ থাকে না। আর জনতা যখন দাবী করে রাস্তায় নেমে আসে সরকার তখন পালাবার পথ পায়না। এই দৃশ্য আমরা বহুবার দেখেছি।

জনতার বিজয় দেখতে বাংলাদেশীরা অভ্যাস্ত হয়ে গেছে। ১৯৫২-১৯৬৯-১৯৭১-১৯৯০ জনতার জয়ের মাইলস্টোন।

বাংলাদেশের নির্বাচনকে স্বচ্ছ এবং গ্রহনযোগ্য করার জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনেও জনতার বিজয় হয়েছিল। ১৯৯৬সালেও শাসকগোষ্ঠী জনতার দাবী মানতে অপরাগতা প্রকাশ করেছিল কিন্তু জনতার কাছে নতিস্বীকার করতেই হয়েছে। জনতা দাবী তুললে তা বিফল হয় না। শাষকগোষ্ঠীকে মানতেই হয় অতীত তার জ্বলন্ত প্রমান।

আমাদের দেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন যতই সন্নিকটে আসছে ভবিষ্যত নির্বাচন নিয়ে ততই শংকা এবং অনিশ্চয়তা বাড়ছে। সরকারীদল এবং সরকারীদলের জোটে অন্তর্ভূক্ত দল গুলো ছাড়া বাকি সবাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকারের দাবী করে আসছে, যা প্রকারন্তে জনতার দাবী।

আমাদের ৪২বছরের এবং এর আগের ইতিহাস থেকে প্রতীয়মান যে শাষকগোষ্ঠী রক্ত না ঝরিয়ে, লাশের সারি না দেখে কোন দাবী মানে না। ১৯৫২সালে পাকিস্তানী শাষকেরা রক্তের বিনিময়ে ভাষা দিয়েছে, ১৯৭১ রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা দিয়েছে, ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকার রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে, ১৯৯৬সালে খালেদর সরকার রক্ত ঝরিয়ে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে, ২০০৮ সালে রক্তের বিনিময়ে ১/১১এসেছে এবং আমরা অনাকাংক্ষিত ভাবেই লক্ষ্য করছি বাংলাদেশ সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও মনে হয় রক্ত না ঝরিয়ে নিরপেক্ষ সরকার দিবে না।

শাষক শ্রেণী কখনোই অতীত থেকে শিক্ষা নেয় নি, নিচ্ছেও না, এবং ভবিষ্যতে নিবে বলেও মনে হয় না। জনগণের দাবী উপেক্ষা করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, বিশ্বের দিকে তাকালেই সেটা অনুমেয়। প্রচন্ড প্রতাপশালী হিটলার টিকে থাকতে পারেনি, তারও আগে ব্রিটিশের সাম্রাজ্য গুটিয়ে নিতে হয়েছিলো। হাল জমানার সাদ্দাম, গাদ্দাফী, হোসনি মোবারক এর পতন দেখেও যদি আমাদের নেতাদের শিক্ষা না হয় তাহলে পরিণাম যে তাদের চেয়ে ভালো হবে না সেটা বুঝতে খুব বেশী জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। আওয়ামী লীগ এককভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় গেলে কতদিন থাকবে?? ৫পাঁচ বছর?? ১০বছর?? ১৫বছর?? পতন একদিন হবেই। তখন কি করবে?? পরিণাম কি হবে, একটু কি নেতারা ভেবে দেখেছে?? আজ যারা বড় বড় কথার ফুলঝুড়ি ফোটান, তাদের কি হাল হবে একটু ভেবে দেখছেন??? সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ না নিলে সামনে যে অসনিসংকেত আসছে তাতে আওয়ামী লীগেরও ক্ষতিই বেশী হবে। আমরা আশা করি বঙবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চাটুকারদের কথার ফাঁদে না পরে, অতীত থেকে শিক্ষা নিবেন এবং একটি গ্রহনযোগ্য সমাধান বের করে জাতীকে অনিশ্চয়তার হাত থেকে রক্ষা করবেন এবং নিজেও রক্ষা পাওয়ার পথ সুগম করবেন।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×