somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রণাঙ্গনের সেই সেক্টরগুলোঃ উপক্রমণিকা

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সেক্টর এক
সীমারেখাঃ চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা এবং নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদীর পূর্ব পর্যন্ত।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৫টি। ৠষিমুখ; শ্রীনগর; মনুঘাট; নাজিরহাট-ফটিকছড়ি; ডিমাগারী।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর জিয়াউর রহমান (এপ্রিল-১০ জুন ’৭১)


# মেজর রফিকুল ইসলাম (১১ জুন-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর দুই
সীমারেখাঃ ফরিদপুরের পূর্বাঞ্চল, ঢাকা শহরসহ ঢাকা জেলার দক্ষিণাংশ, কুমিল্লা জেলা (আখাউড়া-আশুগঞ্জ রেললাইনের উত্তরাংশ বাদে) এবং নোয়াখালী জেলা (মুহুরী নদীর পূর্বাঞ্চল বাদে)
সাবসেক্টরসমূহঃ ৬টি। গঙ্গাসাগর; মন্দবাগ; শালদানদী; মতিনগর; নির্ভয়পুর; রাজনগর।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর খালেদ মোশাররফ (এপ্রিল-অক্টোবর ’৭১)


# মেজর আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার (অক্তবর-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর তিন
সীমারেখাঃ বৃহত্তর সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমা, ঢাকা জেলার নরসিংদী, গাজীপুর মহকুমা ও নারায়ণগঞ্জ মহকুমার একাংশ এবং কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহকুমার প্রায় অর্ধাংশ।
সাবসেক্টরসমূহঃ ১০টি। আশ্রমবাড়ি; বাঘাইবাড়ি; হাতকাটা; সিমলা; পঞ্চবটী; মনতলা; বিজয়নগর; কালছড়া; কলকালিয়া; বামুটিয়া।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর কাজী মোহাম্মদ সফিউল্লাহ (এপ্রিল-৩০ সেপ্টেম্বর ’৭১)


# মেজর এ এন এম নূরুজ্জামান (১ অক্টোবর-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর চার
সীমারেখাঃ বৃহত্তর সিলেট জেলার মৌলভীবাজার মহকুমা, সিলেট জেলা সদরের প্রায় অর্ধাংশ এবং সুনামগঞ্জ মহকুমার অংশবিশেষ।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৬টি। জালালপুর; বড়পুঞ্জি; আমলাসিদ; কুকিতাল; কৈলাশশহর; কমলপুর।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর চিত্তরঞ্জন দত্ত (মে-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর পাঁচ
সীমারেখাঃ সিলেট জেলার জেলা-সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জ মহকুমার ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ থানা।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৬টি। মুক্তাপুর; ডাউকি; শেলা; ভোলাগঞ্জ; বালাট; বড়ছড়া।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর মীর শওকত আলী (আগস্ট-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর ছয়
সীমারেখাঃ বৃহত্তর রংপুর জেলা এবং বৃহত্তর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চলের কিছু অংশ বাদে বাকি অংশ যেমন- রংপুর জেলা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় মহকুমা এবং গাইবান্ধা মহকুমার সাঘাটা গোবিন্দগঞ্জ থানা বরাবর সড়ক, দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ-পার্বতীপুর-চিরিরবন্দর-খানসামা-বীরগঞ্জ-কাহারোল-বোচাগঞ্জ থানা বরাবর সড়ক এবং ঠাকুরগাঁও মহকুমার পীরগঞ্জ-রাণীশঙ্কৈল-হরিপুর থানা বরাবর প্রধান সড়কের দক্ষিণাঞ্চল বাদে বাকি অংশ নিয়ে গঠিত।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৫টি। ভজনপুর; পাটগ্রাম; সাহেবগঞ্জ; মোগলহাট; চিলাহাটী।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# উইং কমান্ডার মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার (জুন-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)


সেক্টর সাত
সীমারেখাঃ বৃহত্তর রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া জেলা এবং দিনাজপুর জেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট মহকুমা, বগুড়া জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর সদর, বিরল বোচাগঞ্জ থানা বরাবর সড়কের দক্ষিণভাগ এবং গাইবান্ধা মহকুমার সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ থানা বরাবর সড়কের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে গঠিত।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৮টি। মালন; তপন; মেহেদীপুর; হামজাপুর; আঙ্গিনাবাদ; শেখপাড়া; ঠোকরাবাড়ি; লালগোলা।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর খন্দকার নাজমুল হক (এপ্রিল-২৮ সেপ্টেম্বর ’৭১)


# মেজর কাজী নূর-উজ-জামান (১ অক্টোবর-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)

সেক্টর আট
সীমারেখাঃ প্রাথমিক পর্যায়ে পদ্মা, মেঘনার দক্ষিণ-পশ্চিমের সম্পূর্ণ এলাকা তথা কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে “ দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গন” নামে আত্মপ্রকাশ করে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। মে মাসের প্রথমভাগে এই সেক্টরের অপারেশন এলাকা সংকুচিত করে বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর জেলা, খুলনা জেলা সদর ও সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ পর্যন্ত অপারেশন এলাকা নির্ধারণ করা হয় যা কুষ্টিয়া জেলা, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা মহকুমা, যশোর জেলা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর মহকুমাসহ ফরিদপুর জেলার মধুখালী, বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, নগরকান্দা থানাসহ ফরিদপুর সদরের অংশবিশেষ এবং খুলনা জেলা ও সাতক্ষীরা মহকুমার দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক পর্যন্ত এলাকা।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৭টি। বয়ড়া; হাকিমপুর; ভোমরা; লালবাজার; বানপুর; বেনাপোল; শিকারপুর।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (এপ্রিল-১৫ আগস্ট ’৭১)


# মেজর মুহম্মদ আবুল মঞ্জুর (১৮ আগস্ট–১৬ ডিসেম্বর ’৭১)

সেক্টর নয়
সীমারেখাঃ বৃহত্তর বরিশাল, পটুয়াখালী এবং খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের দক্ষিণাঞ্চল, বাগেরহাট, বরিশাল, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা সমন্বয়ে গঠিত।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৩টি। টাকি; হিঙ্গলগঞ্জ; শমসেরনগর।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর মোহাম্মদ আব্দুল জলিল (এপ্রিল- ডিসেম্বরের প্রথমার্ধ ’৭১)
# মেজর জয়নুল আবেদীন (ডিসেম্বরের অবশিষ্ট দিনগুলি ’৭১)

সেক্টর দশ
সীমারেখাঃ এই সেক্টরের কোন আঞ্চলিক সীমানা ছিল না।
সাবসেক্টরসমূহঃ ছিল না। বিভিন্ন নদীবন্দর ও শত্রুপক্ষের নৌযানগুলোতে অভিযান চালানোর জন্য এঁদের বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হতো।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ
কোন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না এই সেক্টরের দায়িত্বে। কেবল নৌ-কমান্ডোদের নিয়ে গঠিত হয়েছিলো ’৭১ এর এই দুর্ধর্ষ সেক্টরটি। যে সেক্টর এলাকায় তাঁরা কমান্ডো অভিযান চালানোর জন্য যেতেন সেই সেক্টরের কমান্ডারের অধীনে থাকতেন। অভিযান শেষে আবারো সেক্টর দশে চলে আসতেন।


প্রধান সেনাপতির স্পেশাল ট্রুপস্ হিসেবে ছিল এই সেক্টর দশ।

সেক্টর এগারো
সীমারেখাঃ কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং সিলেট জেলার সুনামগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চল এবং রংপুর জেলার কুড়িগ্রাম মহকুমার অংশবিশেষ।
সাবসেক্টরসমূহঃ ৮টি। মানকারচর; মাহেন্দ্রগঞ্জ; পুরাখাসিয়া; ধালু; রংগ্রা; শিভাবাড়ি; বাগমারা; মাহেশখোলা।

সেক্টর কমান্ডারদের নাম ও দায়িত্বকালঃ


# মেজর জিয়াউর রহমান (১০ জুন-১২ আগস্ট ’৭১)


# মেজর আবু তাহের (১২ আগস্ট- ১৪ নভেম্বর ’৭১)


# ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এম হামিদুল্লাহ খান (১৫ নভেম্বর-১৬ ডিসেম্বর ’৭১)

এছাড়া টাংগাইল সেক্টর নামে একটা সেক্টর ছিল যার দায়িত্ব ছিল


বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর উপর। তাঁর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত ও পরিচালিত হয়েছিলো। এই সেক্টরের সীমানা ছিল- সমগ্র টাংগাইল জেলা ছাড়াও ময়মনসিংহ ও ঢাকা জেলার অংশ। এটা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের কোন মূল সেক্টর না।

পরিশেষে, ’৭১ এর সেই উত্তাল দিনগুলিতে বাংলার আকাশপথের কথা অতি সংক্ষেপে। বাংলাদেশের সমগ্র আকাশসীমা ছিল এর সীমারেখা। এর দায়িত্বে ছিলেন


গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার। এর কোন সাবসেক্টর ছিল না।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১২ দুপুর ১২:৫২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×