২১ আগস্টের পর আপনার যে জীবন সেটা আপনার দ্বিতীয় জীবন। চুল পরিমাণ সম্ভাবনাও ছিলো না আপনার বাঁচার। রাখে আল্লাহ, মারে কে? শুধুমাত্র আল্লাহর অশেষ রহতমে, কোটি মানুষের ভালোবাসায় আন্তর্জাতিক মহাশক্তিগুলোর সব নিঁখুত পরিকল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে আল্লাহ আপনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
আপনার কি আর ভয় পাওয়ার কিছু আছে? আমার মতো যারা আপনাকে কাছ থেকে দেখেছে তারা জানে আপনার সাহস বঙ্গবন্ধুর মতোই।
আমরা সবাই জানি, ঘাতকরা এক মুহূর্ত বসে নেই। করছে বিশাল নিরবিচ্ছিন্ন পরিকল্পনা। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাড়াচ্ছে কিন্তু ঘাতকরা কিন্তু তা হতে দিবে না। তাদের সব অশুভ পরিকল্পনা থেকে আল্লাহ আপনাকে প্রতিদিনই বাঁচিয়ে রাখছেন।
আপনিও তা জানেন। একটি কাজ খুব আশা করে আছি আপনার কাছে। বাংলাদেশের সব মানুষই আপনার কাছে একটা আশা করে।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপনাকে আরো শক্ত অবস্থানে দেখতে চায় মানুষ – সেই প্রত্যাশার বার্তা আপনার কাছে কি পৌঁছেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ? সেটাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আর দুঃসাহসের কাজ। সেই চ্যালেঞ্জটি নেয়ার এক মহান সুযোগ আল্লাহ আপনাকে দিয়েছে। এটা নিশ্চিত সেটা আপনি বেঁচে থাকতে থাকতেই করে যেতে হবে।
গত ছয় বছর সময়টা কম নয়। সময় এখনো হাতে আছে। দেশের এত উন্নয়ন কোন কাজে আসবে না শেষ পর্যন্ত যদি দুর্নীতিবাজরা থাকে – লাভের ধন যেমন পিপড়ায় খায়, তেমনি উন্নয়নের সুফল শুধু দুর্নীতিবাজরাই খাবে না, স্বাধীনতাবিরোধী পাকিপ্রেমিকরা বিশাল ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশের। চলমান উন্নয়নে এই গোষ্ঠীই তো সবচেয়ে লাভবান হচ্ছে, হবে।
তো সাধারণ জনগণের ভরসা কোথায়? ভরসাটা আপনি। এখনো বুক বেঁধে আশায় আছি, এই বুঝি দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনার ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ শুরু হলো।
মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী, আল্লাহ কতদিন আপনাকে এই কাজটি করার সুযোগ দিবেন, তা আমরা কেউ জানি না। ২১ আগস্টের সেই নারকীয় বর্বর হামলা থেকে আল্লাহ অনেকের জীবনের বিনিময়ে আপনাকে বাঁচিয়েছেন। সেটা একটু দুর্নীতিমুক্ত, বঙ্গবন্ধুর শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার জন্য।
কাজটি শুরু করে দিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আপনার নেতৃত্বে উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু প্রতিটা ধাপে ধাপে দুর্নীতিবাজদের হয়রানী কমছে না। দুর্নীতিবাজদের দোর্দণ্ড প্রতাপে আমরা অসহায়, ১৭ কোটি মানুষ অসহায়।
এই অসহায়ত্ব থেকে ১৭ কোটি মানুষকে মুক্তি দিন। বঙ্গবন্ধু সময় পায়নি – আপনি সময় পেয়েছেন ছয় বছর, বাকিটা জানি না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ১৭ কোটি মানুষকে দুর্নীতিবাজদের অত্যাচার থেকে মুক্তি দিন। মানুষ তবেই আগাতে পারবে। মানুষের এগিয়ে যাওয়ার বড় বাঁধা – দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি।
আমাদের বাঁচান – এই দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে। আর আপনি না পারলে আগামী একশ বছরেও সেই সম্ভাবনা তৈরি হবে না এই বাংলাদেশে।
আপনি সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন – আপনি নিরাপদ থাকলেই বাংলাদেশ নিরাপদ থাকবে। আপনি এখনো আছেন বলেই বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে দুর্নীতিবাজ মুক্তি সোনার বাংলার। আপনি না থাকলে এই স্বপ্ন আবার দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
আপনার শেষ লড়াইটা হোক – দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তবেই বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা হিসাবে আপনার নাম ইতিহাসে থাকবে অনন্তকাল।