somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাকুরির জন্য কতোটা তৈরি আমাদের ছেলেমেয়েরা?

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকারি চাকুরিজীবীদের বেতন বাবদ এবছর বরাদ্দ ৫২ হাজার কোটি টাকা (গত বছর ছিলো ২৪ হাজার কোটি টাকা)। আমাদের ব্যবসায়ীরা কয়েক লাখ বিদেশিকে বেতন দেন বছরে ৬০ হাজার কোটি টাকা (আসল হিসাব এর চেয়ে বেশি)।

সরকারি চাকুরির সংখ্যা আর বাড়ার সম্ভাবনা কম, সব মিলে ২৩ লাখ সংখ্যাটি বরং ২০৩০ এর পরে কমে যেতে পারে। এখন যেমন লাখ লাখ শিক্ষক লাগছে, ২০৩০ এর পরে নাও লাগতে পারে।

তো বাড়ছে কোন সংখ্যাটা? বাড়ছে বেসরকারি চাকুরির সংখ্যা। একটা সমস্যা সেখানে আছে – সরকারি চাকুরির ধরন আর বেসরকারি চাকুরির ধরন আলাদা। বেসরকারি চাকুরিতে আজে চ্যালেঞ্জ, প্রতিনিয়ত চাকুরি বদল বা চাকুরি যাওয়ার টেনশন। বিনিময় আছে ভালো বেতন, সৎভাবেই বেশ ভালোভাবে চলার ব্যবস্থা হতে পারে। একটা স্মার্ট লাইফ আছে সেখানে।

প্রতিবছর সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কতো বের হয়? ৩/৪ লাখ! প্রতিবছর এসএসসি এবং তার উপরে পাশ করেছে এমন ৮/১০ লাখ ছেলেমেয়ে কর্মবাজারে আসছে। সরকারি চাকুরি কয়টা হচ্ছে বছরে?

যে পরিমাণ বিনিয়োগ হচ্ছে বাংলাদেশে, তাতে কর্মবাজার বিশাল থেকে বিশালতর হচ্ছে। যেখানে দেশে প্রচুর শিক্ষিত বেকার, সেখানে কেন লাখ লাখ বিদেশি এই দেশে আনতে হচ্ছে?

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যৌক্তিকভাবে আনছে। ছোটো একটা উদাহরণ দেই – বাংলাদেশে হাজার হাজার দক্ষ আইটি ডেভেলপার দরকার। আছে? একদমই নেই। এতো দিলাম ছোটো একটা উদাহরণ। আইটিতে আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারি, অন্যতম প্রধান বাঁধা, দক্ষ ছেলেমেয়ের অভাব।

সবাই তো ছুটছে সরকারি চাকুরির পেছনে, কর্মবাজার বলতে তারা বুঝে সরকারি চাকুরি, প্রস্তুতি নেয় সরকারি চাকুরির জন্য।
খুব পরিষ্কার ভাষায় – বেসরকারি চাকুরিগুলো স্কিলস বেইজড। সেখানে জবে ঢুকার জন্য প্রস্তুতিটাও আলাদা হতে হবে। খেলতে পারি বলে অন্য জায়গায় পার পাওয়া যায়, কিন্তু বেসরকারি চাকুরিতে মাঠে খেলে দেখাতে হবে আপনি খেলতে পারেন – মানে কাজটি পারলে আপনার বেতন হবে, না পারলে হবে না।

বিল্ডিং ডিজাইন করতে পারলে আপনি আছেন, নাইলে নাই! প্রোগ্রাম করতে পারলে আপনি আছেন, নাইলে নাই। মার্কেটিং এ সেলস করতে পারলে আপনি আছেন, নাইলে নাই। নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট প্রোডাকশন দিতে পারলে আপনি আছেন, নাইলে নাই। বায়ারের সাথে নেগোসিয়েশন করতে পারলে আপনি আছেন, নাইলে নাই!

তারমানে কোন দেশের রাজধানী কোনটা, অথবা কয়টা অংক কয় মিনিটে সলভ করলেন, দেশ বিদেশের রাজনীতি নিয়ে লিখলেন এসবের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যা শিখেছেন তা করে দেখাতে হবে।

বেসরকারি চাকুরি চ্যালেঞ্জিং এবং দক্ষতা আর জ্ঞানভিত্তিক। একবার চাকুরি পেলেই চাকুরি থাকবে তার নিশ্চয়তা নেই – তবে যদি দক্ষতা সত্যিই থাকে, চাকুরি প্রচুর আছে, আগামীতে আরও থাকবে।

ছেলেমেয়েদের প্রস্তুতি এখন ১০০% সময় দেয় সরকারি চাকুরির জন্য। যুগ যুগ ধরে সেই কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, গাইড! বেসরকারি চাকুরি যে বিশাল বাজার আছে, তার জন্যও ব্যাপক প্রস্তুতি দরকার।

বেসরকারি চাকুরির জন্য যারা নিজেদের তৈরি করবে, দেশ বিদেশে চাকুরি কোন অভাব হবে না। এই বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বড় সংকট পর্যাপ্ত সংখ্যায় দক্ষ লোক খুঁজে পাওয়া। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের চাকা তো আর থেমে থাকবে না। বিদেশি এনে চালানো হচ্ছে।
এই বাংলাদেশেই যারা জীবনের শুরুতে স্মার্ট ছিলো, জবের জন্য নিজেদের দক্ষভাবে তৈরি করেছে, তাঁরা এখন বিদেশিদের সাথে সমানতালে কর্পোরেটে দুর্দান্ত ক্যারিয়ার গড়ে ফেলেছে। এখনকার যারা স্মার্ট তাদের জন্য অপেক্ষা করছে আর বড় ভবিষ্যৎ।

তবে কথা একটাই, যা শিখেছেন, তা করে দেখাতে হবে। করে দেখাতে পারলে, দক্ষতার প্রমাণ দিতে পারলে, বেসরকারি চাকুরি হবে আপনার জন্য দুর্দান্ত ক্যারিয়ার গড়ার জায়গা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×