somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বসে থাকলে, আপনার ক্যারিয়ারও বসে থাকবে। দৌড়ান, আপনার ক্যারিয়ারও দৌড়াবে। (তবে কোথায় পৌঁছার জন্য দৌড় দিবেন সেটা কিন্তু ঠিকভাবে ঠিক করা চাই!)

১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পাশের বাড়ির ছেলেটা ফটোগ্রাফি করে মাসে দুই লাখ টাকা আয় করে, ওয়াও! ফটোগ্রাফি করে এতো টাকা! তাহলে তো আমাকেও ভর্তি হতে হয়। খালি শাটার টিপ দিয়েই এতো টাকা! তাহলে আমিও পারবো। দে দৌড়!

বেইলি রোডের পিঁয়াজু মামা খালি পিঁয়াজু বিক্রি কইরা ঢাকায় ৪টা বাড়ি করছে! দারুণ তো, তাহলে কি ফটোগ্রাফি শিখবো নাকি পিঁয়াজু বেচবো! পিঁয়াজু বানানো তো আরো সোজা! ঢাকায় ৪টা বাড়ি করা ঠেকায় কে!দে দৌড়!

লিটন দাস, জাবি দেখে পাশ করে মাসে ১০ লাখ টাকায় কামায়। কীসব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করে! এইটাতে তো দেখি টাকা আরও বেশি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট , এইটা কোন কাজ! মাসে ১০ লাখ, ঠেকায় কে, তাহলে ফটোগ্রাফি আর পিঁয়াজু না বেইচা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করি! দে দৌড়!

পাশের বাসার মামুন ভাই, বুয়েট থেকে পাশ করে ঢাকায় ১৩টা ফ্লাট কিনছে, ইস ছেলেটা যদি বুয়েটে চান্স পাইতো, তাইলে আর চিন্তা কী! ছেলে্রে কড়া নির্দেশ , “তোরে বুয়েটে পড়তেই হইবো”! ছেলেও দিলো দৌড়! বুয়েটে পড়তেই হইবো। নাভিদ ভাই বলছে, বুয়েটে পড়লে দেশের সেরা সুন্দরীরা তোমার দরজায় আইসা সিরিয়াল দিয়া নক করবো আর আমেরিকার ভিসা ফ্রি! দে দৌড় – একদিকে বড়লোকের সুন্দরি মাইয়া, আরেকদিকে দেশে থাকলে, একটু সিনিয়য় হইলে বছরে ২৫/৩০ কোটি টাকা ব্যাপার না। তাইলে ফটোগ্রাফির দরকার নাই, পিঁয়াজু বিক্রির দরকার নাই, ইভেন্ট ম্যনেজমেন্টেরও দরকার নাই। বুয়েটেই পড়তে হইবো। দে দৌড়!

ভাই শুনছেন, ডা. শায়লা ২৩ লাখ টাকা বেতনে আপেল হাসপাতালে জয়েন করেছে! এরকম হাসপাতাল দেশে আরও হইতেছে। মাইয়ারে ডাক্তার বানাইতেই হইবো! মাসে ২৩ লাখ খালি বেতন! এরপরে তো ফ্ল্যাট, গাড়ি তো ঔষধ কোম্পানি কিন্নাই রাখছে! বছরে বছরে আবার ব্র্যান্ড চেইঞ্জও কইরা দেয়! আরে বাপরে বাপ! মাইয়ারে কড়া নির্দেশ, “সখিনা, তোরে ডাক্তার হইতেই হইবো, এইটা তোর দাদার বাপের স্বপ্ন ছিলো!”, অথচ সখিনার স্বপ্ন হয়তো ছিলো অন্য কিছু। একবার ডাক্তার হইতে পারলে আর ঠেকায় কে! দে দৌড়!

ওদিকে খবর পাওয়া গেলো, রাজউকের দারোয়ান কোটি কোটী টাকা, কাস্টমস/রাজস্ব বিভাগের পিয়ন সিলেটে কোটি কোটি টাকার রাজপ্রাসাদ বানাইছে!ওমুক থানার ওসি, ১৩টা গার্মেন্টস দিছে, জমি কিনছে শত শত বিঘা!ওদিকে খবর হলো! পানি সাপ্লাইয়ের পাইপ কেনার ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে ঘাপলা দিয়া ৩ হাজার কোটি টাকা হাওয়া করে দিছে প্রধান প্রকৌশলী!

তাইলে কী হওয়া উচিত? ঠিক আছে, এক প্রোজেক্টে যদি ৩ হাজার কোটি টাকা মেরে দেয়া যায়, তাইলে আর চিন্তা কী! যাই এবার পানি সাপ্লাই দেয়ার প্রধান প্রকৌশলী হইতেই হবে। ডিসিসান ফাইনাল! দে দৌড়!

কথায় কথায় ভুলে গেলাম, আসলে আমি কী হইতে চাইছিলাম! কোথায় যাওয়া দরকার ছিলো! গেলাম কোথায়! ব্যাংকে টাকার অভাব নেই, কিন্তু তারপরেও আমি অভাবগ্রস্ত!

সেই অভাব মনের শান্তির অভাব, যার অভাবে আসলে জীবনের ষোল আনাই মিছে। মিটার রিডার কোটি টাকার মালিক, শিক্ষাভবনের দারোয়ারের ইনকামও বেসুমার! সরকারি চাকুরি মানেই এক একটা ব্যাংক! টাকার কোন অভাব নেই।

কিন্তু আমারও একটা স্বপ্ন ছিলো, সেই স্বপ্নের খবর কী? স্বপ্নকে কবর দিলে, সে আবার জেগে উঠবে! সেই স্বপ্নের পেছনে দৌড়ানোটাই দরকার ছিলো, খুব দরকার ছিলো! দৌড় দেয়ার আগেই ঠিক করতে হবে, ঠিক কোথায় দৌড় দিতে হবে। জায়গাটা ঠিক করতে পারলে, ভালোভাবেই টাকা আসবে আর শান্তিও থাকবে।

দৌড়টা দিতে হবে, তবে ভেড়ার পালের মতো উদ্দেশ্যহীন নয়, মানুষের মতো।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:৫১
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×