somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার রেশ রাজনীতিতেই বেশি থাকে (দোহারের রাজনীতি)

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনীতি শব্দের মূল অর্থ অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। স্বীয় অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে অনুসৃত নীতির নাম রাজনীতি।এককালে ছিল রাজা। তিনি নিজের অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে প্রণয়ন করতেন নীতি। সেখান থেকেই রাজনীতি শব্দের জন্ম। আজকে রাজা নেই, আছে রাজনীতি। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক নেতাই তার নিজ নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে কিছু নিজস্ব কৌশল অবলম্বন করে রাজনীতিতে টিকে থাকার শেষ চেষ্টা চালায়। যে যত বেশী অন্যের মেধা, যোগ্যতা, প্রভাব প্রতিপত্তি ব্যবহার করতে পারবে সে তত কৌশলী নেতায় পরিনত হবে।সব শ্রেণী-পেশার মানুষ তথা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনে রাজনৈতিক সংগঠন বা রাজনৈতিক দল গড়ে উঠলেও রাজনৈতিক দলের নেতারা এখন জনগনের বৃহত্তর স্বার্থের চেয়ে নিজ স্বার্থে বেশী ব্যস্ত। এক সময় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অবিরাম চলত অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এখন চলে নিজ স্বার্থ রক্ষার অবিরাম যুদ্ধ।যুদ্ধের ময়দানে প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য সেনাপতি যেভাবে প্রণয়ন করেন রণকৌশল ঠিক একইভাবে রাজনৈতিক লড়াইয়ের মধ্যেও চলে ধোঁকাবাজি। তবে সেটা নিজ অস্তিত্ব রক্ষার মাঝে এখন সীমাবদ্ধ।আগে ছিল দলীয় অস্তিত্ব রক্ষা মুখ্য বিষয়। কিন্তু বর্তমানে নিজ অস্তিত্ব রক্ষাই মূখ্য বিষয়।সে জন্য প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দেওয়ার লক্ষ্যে সকাল-বিকাল কৌশলের হয় পরিবর্তন। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে দোহার থানার আওয়ামী রাজনীতিতে দলীয় অস্তিত্ব রক্ষার পরিবর্তে নিজ নিজ অতিত্ব রক্ষার সংগ্রাম ছিল প্রবল। এতে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু দলীয় রাজনীতি অনেকটা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। সাবেক বামপন্থী পরিশ্রমী সৎ আদর্শের নেতাখ্যাত এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান মন্ত্রী হবার পর দোহার থানার দলীয় রাজনীতির চিত্র ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে থাকে।মন্ত্রী বলয়ের বাইরের ত্যাগী নেতাদের পদে পদে বঞ্চিত-অবহেলিত ও অবমূল্যায়ন করা হয়। এমন কি কিছু কিছু নেতাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিতও করা হয়। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে দোহার থানার নেতাদের ক্ষমতার মোহের ঘুম ভেঙ্গেছে যে, সকলকে এক কাতারে শামীল করে নিজ অস্তিত্ব রক্ষার শেষ কৌশলটি প্রয়োগ করা। আপাত দৃ্ষ্টিতে দোহার থানার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় আমার এটাই মনে হয়।ঠিক যেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ মতো। তিনি তার ‘এখন সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব’ শীর্ষক নিবন্ধে “আমরা আর কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হব না।“ তেমনি দোহারের রাজনীতিতে এক নেতা অন্য নেতাকে ক্ষমতায় যাওযার বা ক্ষমতাকে ধরে রাখার সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করার কৌশল নিয়ে কাজ করছে। আমি বলব কেউ কাউকে সিঁড়ি হিসাবে ব্যবহার করতে পারে না, যদি না সে ইচ্ছাকৃত ব্যবহৃত হয়। কারো ক্ষততায় যাওযার সিঁড়ি হওয়া আর নিজকে সমর্পন করা এক নয়। কিছূ নেতা নিজের ক্ষৃদ্র স্বার্থের জন্য নিজের নিজস্বতাকে অন্যের মাঝে বিলীন করে দিযে তার আদর্শের কর্মীদের হতাশার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। রাজনীতিতে কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না, প্রত্যেকেই প্রত্যেকের শত্রু। শুধু কিছু কমন স্বার্থের কারনে মিত্র থাকে সাময়িক সময়ের জন্য।আসলে রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই ।অতীতে নেতার প্রতি কর্মীদের বিশ্বাস, সন্মান, শ্রদ্ধাবোধ সবই ছিল।কিন্তু বর্তমানে সেটা কর্মীদের মাঝে অনুপস্থিত। তার কারন বর্তমান নেতারা কর্মীদের অর্থ কামানোর হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে।বর্তমানে অধিকাংশ নেতা তার মতাদর্শের কর্মীদের দলীয় আদর্শের কথা খুবএকটা বলে না, কর্মীদের নিয়ে ভবিষ্যত রাজনৈতিক দিক নির্দেশনা মূলক কোন বৈঠক করে না। তবে বৈঠক করে সেই বৈঠকের এজেন্ডা থাকে কিভাবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা যায, কিভাবে দখলবাজি, চাঁদাবজি, টেন্ডারবাজি করা যায়।একসময় অবিশ্বাস্য আত্মবিশ্বাস নিয়ে কর্মীরা নেতাদের কাছে আসত এবং শোনাতেন সফল হওয়ার অনায়াস উপায়।এক সময় কর্মীরা আসত সবাই বঙ্গবন্ধুর ‘বিরল’ সৈনিক হিসাবে। নেতার প্রতি আনুগত্য কর্মী হিসাবে। কিন্তু বর্তমানে কর্মীরাও নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে বৈধ অবৈধ পথে টাকা কামানোর ধান্ধায় ব্যস্ত। অতীতে নেতারা দলীয় বিভাজনের সংকীর্ণতায় থাকতেন কম, যা র্বতমানে ব্যাপক।আগে নেতাদের সব দল ও মতের মানুষের প্রতিই ছিল তার অবারিত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। যা বর্তমানে পুরোটাই অনুপস্থিত।
বর্তমানে দোহারের রাজনীতিতে কিছু পরিচিত নেতা ভেলকিবাজের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এতে দোহারের রাজনীতিতে একটা নেতিবাচক বার্তাই পাচ্ছেন জনগন। সামনের দিন গুলিতে দোহার তথা সারা বাংলাদেশের রাজনীতি যে সংঘাতময় হয়ে উঠবে তা অনেকেই আঁচ করতে পারছে না। তাই সংকীর্ণমনা, হিংসাপরায়ণ এবং দায়িত্বহীনতা নিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকা খুবই কষ্ট হবে। কাজেই রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশে সর্বাত্মক সম্পর্কোন্নয়নে যুক্তিহীন, অর্থহীন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা কারো উচিত নয়।একে অপরের প্রতি অর্থহীন, যুক্তিহীন হিংসা ও জেদের কারণে উভয় পক্ষই ক্ষতির মুখে পড়বে তাতে সন্দেহ নেই। এতে নেতারা যেমন জনগন তথা কর্মীদের সহানুভূতি-সমর্থন থেকে বঞ্চিত হবেন, তেমনি জনগনও নেতাদের কাছ থেকে ভাল কিছু পাবেন না।প্রতিটি রাজনৈতিক সচেতন মানুষের চলমান কালপ্রবাহের বাঁকে বাঁকে একেকটি ক্রান্তিকাল আসে। সে ক্রান্তিকালে যদি সে অদম্য সাহস ও ধীরস্থির ভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে তার জীবনের মোড় ঘুরে যায় এবং সর্বক্ষেত্রে একটা ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা হয়। জীবন চলার পথে পরবর্তী সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় রশদ সম্ভারের আর কোনো অভাব হয় না।মানষিক শক্তি, মনের দৃঢ়তা আর অদম্য সাহসকে সঙ্গী করে যে কোন ক্রান্তিকালকে অতিক্রম করতে হবে। দূরদর্শিতা, সাহস ও সময়োচিত সিদ্ধান্তের ফলে।ইতিহাসে এরকম অনেক দৃষ্টান্ত আছে।
যাকে ঘিরে আমার রাজনৈতিক জীবন উত্থানের সূচনা, সেই পরিশ্রমী, ত্যাগী, সৎ আদর্শের প্রতীক সাজ্জাদ হোসেন সুরুজ দল ক্ষমতাসীন হবার পর দোহার থানার রাজনীতিতে নিরব ভূমিকা পালন করে। তার এই নিরবতায় অনেকেই খুশী। আবার অনেকে দাঁত কেলিয়ে হি হি করে হাসছেন, কিন্তু তার প্রতি যারা অনুগত তারা সহজেই তার এই নিরবতা মেনে নিতে পারেনি।মেনে নিতে পারেনি অন্য কোন নেতার নেতৃত্বকে।তাই তার একান্ত অনুগতরাও থেকেছেন তারই মতো নিরব। তিনি বিবেকবর্জিত কথাবার্তা বলতে পারতেন না, এখনও পারেন না।তার কথায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, এমন কথা কখনোই বলেননি।ফ্রেডারিক ফরসাইথের মতে এই পৃথিবীতে শুধু দুই ধরনের মানুষ আছে, এক যারা শিকারি এবং দুই. যারা শিকার। এদের মধ্যে যে শক্তিশালী কেবল সে-ই বেচে যায়। তেমনি অধ্যাপক মাইকেল ন্যাগলার (মেটা সেন্টার ফর নন-ভায়োলেন্সের প্রেসিডেন্ট) এক নিবন্ধে মন্তব্য করেছেন ‘ঘৃণা উৎপাদন করা ক্ষমতাবান ক্ষমতালোভীদের পরম ও চরম অস্ত্র। তবে ইতিহাসে দেখা গেছে, ঘৃণা উৎপাদনকারী নিজেরাই ধ্বংস হয়ে গেছে। এটা একটা প্রচণ্ড শক্তি। হিটলার অন্যতম ঘৃণা উৎপাদনকারী ছিলেন। পরে একে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। এই ঘৃণাই তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।’ যারা লড়াই করে,ত্যাগ স্বীকার করে, জীবনবাজি রেখে ২০০১-২০০৬ সালের জোট সরকারের হামলা মামলা সহ্য করে দলকে টিকিয়ে রেখেছেন দলে থেকে তারাও মূল্যায়ন পাননি। নীতিতে একটা প্রবাদ আছে- ‘এই সংসার সাগরে ব্রাহ্মণরূপী নৌকা ধন্য! সেটা সংসাররূপী সাগরের উল্টো গতিতে চলে। এই উল্টো গতি কি? যারা এই নৌকার নিচে থাকে তারা ভবসাগর পার করে যায় আর যারা নৌকার ওপরে চড়ে, তাদের উদ্ধার হয় না।’ দোহারের রাজনীতি এখন তেমন গতিতে চলছে।

জন বিচ্ছিন্ন কমিউনিষ্টরা আওয়ামীলীগে আশ্রয় নিয়ে বড় বেশী অহংকার নিয়ে চলছে।কিন্তু দুনিয়াতে কোনো অহংকারের পরিণতি ভালো হয় না। শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়করাও পূর্ণাঙ্গ দক্ষতা নিয়ে দেশ শাসন করেও টিকে থাকতে পারেননি। এ প্রসঙ্গে চার্চিলের কথা বলা যায়। উইনস্টন চার্চিলকে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে ঘটনাবহুল এবং বর্ণাঢ্য জীবনের নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চার্চিল ছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৪ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতেন। তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতাকে বলা হতো অলৌকিক। বলা হয়, তার দূরদর্শিতার কারণেই ব্রিটেন রক্ষা পায় জার্মানির কবল থেকে। কিন্তু চার্চিলের সময়ই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। সারা পৃথিবী থেকে গুটিয়ে নেওয়া হয় ব্রিটিশ রাজের। আসলে রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তাই আজকের জোয়ার কাল ভাটার টানে তলিয়ে গেলে কিছুই করার থাকে না। প্রকৃতির নিষ্ঠুরতার রেশ রাজনীতিতেই বেশি থাকে। অসীম দাপট, দূরদর্শিতা এখানে কতক্ষণ কাজে লাগে, তা বলা যায় না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতায় আসার তিন বছরের মাথায় কমিউনিস্টরা তার ওপর কিছুটা ভর করে। বাকশালে তাদের অবস্থান ও দাপট ছিল। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে থাকেননি। জিয়াউর রহমানের খাল কাটাকে জগতের সেরা কর্মসূচি মনে করে তাতে কমিউনিস্টরা অংশ নেয়। এ কারণেই কমিউনিস্টদের বিষয়ে সতর্ক ও সাবধান থাকার কোনো বিকল্প দেখি না।এক সময় কমিউনিষ্টরা প্রচুর পড়শোনা করত এখন করে কিনা জানা নেই তবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক কৌশলের আশ্রয় নেয়।যেটা দোহার থানার রাজনীতিতে ষ্পষ্ট প্রতীয়মান হচ্ছে। দলচ্যুত কমিউনিস্টরা ঝিনুকের খোলসের মতো। তারা নিজ দলে ভালো করতে পারেননি বলেই বড় দলগুলোর ওপর ভর করেছে। তাদের এখন মূল কাজ বড় দলের ত্যাগী নেতাদের কৌশলের মারপ্যাঁচে দলছাড়া করা। ২০০৯ সালে কমিউনিস্ট কৌশলের মারপ্যাঁচে দলে ঠাঁই পাননি অনেক ত্যাগী নেতা। তাদের বিভিন্ন কৌশলে দলের বাইরে পদ বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে।চুপ থেকেও তারা শুদ্ধ হতে পারেননি। কিন্তু কমিউনিস্টরা সবাই শুদ্ধ। যারা দলে ত্যাগী তারা অনেকটা কবিগুরুর শেষের কবিতার সেই লাইনগুলোর মতোই-

“আজো তুমি নিজে
হয়তো-বা করিবে রচন
মোর স্মৃতিটুকু দিয়ে স্বপ্নাবিষ্ট তোমার বচন।
ভার তার না রহিবে, না রহিবে দায়।
হে বন্ধু, বিদায়।
মোর লাগি করিয়ো না শোক,
আমার রয়েছে কর্ম, আমার রয়েছে বিশ্বলোক”।

দোহার থানার রাজনীতিতে একঝাক তরুন নেতৃত্ব বিদায়ের পথে।কর্মীরা বাস্তবে ক্ষমতাবানদের পক্ষে। কিন্তু ভালোবাসা বিরহী, কষ্টে থাকা মানুষগুলোর পক্ষে। এ কারণে ত্যাগী আদর্শবান তারকা নেতাদের শোকের কিছু নেই। বিস্ময়ের কিছু নেই। হতাশার কিছু নেই। কারণ দোহারের রাজনীতিতে আরও চমক আসবে।হয়তো মনোনয়ন মিলবে না অনেকের।সেটাই হবে নিয়তির নিষ্ঠুরতা।দোহার থানার বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় ছাত্রলীগের কর্মীসভায় সাবেক ছাত্রনেতাদের একসাথে দেখে রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতার নায়ক অমিতের শেষ কথাগুলো মনে পড়ে যায়। ‘অক্সিজেন এক ভাবে বয় হাওয়ায় অদৃশ্য থেকে, সে না হলে প্রাণ বাঁচে না। আবার ‘অক্সিজেন আর-এক ভাবে কয়লার সঙ্গে যোগে জ্বলতে থাকে, সেই আগুন জীবনের নানা কাজে দরকার- দুটোর কোনোটাকেই বাদ দেওয়া চলে না’ ত্যাগী নেতারা কোনোভাবে এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে আছেন। এমনকি অনেক কট্টরপন্থিরা একধরনের দুঃসহ যন্ত্রণায় আছেন। তারা ছিলেন খারাপ সময়ের লড়াকু। তারা অমিতের মতো দুটোর কোনোটাই বাদ দিতে পারছেন না।
দোহার থানা ছাত্রলীগ ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের সিঁড়িপথ বেয়ে যে অবদান রেখেছিল তা আজ অনেকটা মলিন। নেতা ও কর্মী তৈরীর একঝাক সাহসী যোদ্ধা জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে ছুটে বেড়িয়েছেন নয়াবাড়ী থেকে মুকসুদপুর পর্যন্ত।নারিশার শাজাহান, জয়পাড়ার সাজ্জাদ হোসেন সুরুজ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সাবেক সদস্য সুরুজ আলম,সালাম খান, দোহরের ফারুক মোল্যা, আজাদ, আলীম, রাহিম, সোহেল,শাহীন, পিরু, ঝনকির সফি, মোরাদ, শিমুলিয়ার জয়নাল, দিদারসহ আরো নাম না জানা অনেক ছাত্রলীগ নেতা, যুবলীগের বাশার মৃধা, কিরন মৃধা, মাসুদ মোল্যা, আওলাদ, সুন্দরদা, আনোয়ার, বাহালুল, রফিক, বিল্লাল, নারিশার শাহীন, মঞ্জু, ঘটু খালাসী, সুলতান খালাসী, সহ অসংখ্য যুবনেতা যাদের নাম এই মূহুর্তে মনে করতে পারছি না।৯০ পরবর্তীদের মধ্যে হারুন, পলাশ, মনির খালাসী,প্রবীর পাল, আলমাছ, রহমান, জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভি.পি, জি.এস), মশিউর, নয়াবাড়ীর শাজাহান, শামীম, রাইপাড়ার আলহাজ, ধুয়াইয়ের বাচ্চু, দোহারের সাজ্জাদ (বর্তমানে এস,আই), ফেরদৌস, শিমুলিয়ার, মিজান, জামিল, জিয়া, মাহাবুব, ফারহিম, সাগর শাহীন, (লালবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি), মুকসুদপুরের সুরেশ, মাইনুল, মাহমুদপুরের বোরহান, রিপন, মোশারফ,সালাউদ্দিন, জয়পাড়ার সেন্টু, আল আমিন বাজারের বুলেট (এ.জি.এস), হাবীব, হুমায়ন, আওলাদ, শহীদ, রাজু, বেল তলার আলমগীর, দোহারের মোশারফ দেওয়ান, মাহমুদপুরের হাবীব, আবুল, সালাম, খোরশেদ, মাইনদ্দিন, কুদ্দছ, সোরহাব, আমজাদ, আনোয়ার, খোকন, লালমিয়া, উত্তর জয়পাড়ার শুকুর, নবী হোসেন, শামীম সহ আরো অনেকর অবদানে ধন্য দোহার থানার ছাত্ররাজনীতি।ইতিমধ্যে আরো বহু নেতা সৃষ্টি হলেও এস.আই সাজ্জাদের কমিটির পর আজ পর্যন্ত কোন কমিটি হয়নি। যে যার মতো করে রাজনীতির মাঠে নিজের অবস্থানকে ধরে রেখেছে। দল ক্ষমতাসীন হবার পর ছাত্রলীগ হয়ে পড়ে মন্ত্রী অনুসারী একক নেতা নির্ভর।উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে ছাত্রলীগ বলতে শুধু একটি নামই শুনে আসছি সেই নামটি রাজিব শরীফ, এই রাজিব শরীফ নাকি মন্ত্রীর খুব কাছের ঘনিষ্ঠ স্বজন, পাশাপাশি আর একটি নাম শুনতাম সেটা আমার বন্ধু মালিকান্দা মেঘুলা হাইস্কুল জীবনের সহপাঠি জহিরের ছোট ভাই জাবেদ ভূইয়া। একঝাক তরুন নেতা থাকার পরও দোহার থানার ছাত্রলীগ মন্ত্রী নির্ভর এক নেতা, এক কর্মীর ছাত্রলীগ। এই সাড়ে চার বছর নামে মাত্র রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান পালন ছাড়া অন্য কোন দলীয় কর্মকান্ড চোখে পড়েনি। রাজিব শরীফের সাথে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সফিকুল ইসলাম সেন্টুর তুচ্ছ ঘটনায় রাজিব আহত হয়ে হাসপাতালে গেলে মন্ত্রীর ভাই দোহার থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক মোতালেব খানের সরাসরি হস্তক্ষেপে সেন্টুকে বিভিন্ন মামলা হামলা করে দোহার ছাড়া করা হয় যা ঐ সময় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পায়।
দোহার থানা ছাত্রলীগের অবদান দোহারের সাধারন গনমানুষের হৃদয়ের ক্যানভাসে লেখা হয়ে আছে। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলে গেছেন, ‘ছাত্রলীগের ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস। ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস।ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে দোহার থানার ছাত্র রাজনীতিকে সুসংহত, সৎ, সুসংগঠিত করেছিলেন শাহজাহান, সাজ্জাদ হোসেন সুরুজ, আবদুর রাহিম,সুরুজ আলম, সালাম খান, সোহেল মাহমুদ, জয়নাল,রমজান হোসেন পিরু, হারুন, পলাশ, আলমাছ, রহমান, সাজ্জাদ, আলমগীর, সালাউদ্দিন,হাবিব, বুলেট,সেন্টরা।অদম্য সাহস, গভীর দেশপ্রেম, সততা, আদর্শবাদিতা, জেল-জুলুম-নির্যাতন সয়ে ত্যাগের মহিমায় পথ চলাই ছিল তাদের আদর্শ। সুস্থধারার ছাত্র রাজনীতি ও আদর্শবান রাজনৈতিক কর্মী গড়তে এখনই দরকার দোহার থানা ছাত্রলীগের একটি শক্তিশালী মেধাবী কমিটি। যে কমিটি আগামী দিনে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে।

*********************
লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা, বর্তমানে সৌদি প্রবাসী ব্যবসায়ী।
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×