রানি নামটা শুনলেই একটা ছবি ভেসে উঠে। ফুলের ছাপা শাড়ি পড়া কোমর পর্যন্ত চুল খোলা একটা মেয়ে বারান্দায় তার মায়ের কোলে হেলান দিয়ে বসে, আর তার মা চুলে বিলি কাটছে।
রানি আমাদের সামনের বাসায় থাকত। আমার চেয়ে ৩/৪ বছরের বড়। মা বাবার একমাত্র সন্তান, তাই আদোরটাও অনেক। আমার ছোট খালা তাদের পারিবারিক ডাক্তার। পরের দিকে এমন হয়েছে, পরিবারের যে কোন ভাল খারাপ খবর খালাকে জানাত, পরামর্শ নিত। রানির সব আপটুডেট খবর খালার কাছ থেকেই পেতাম।
খালা একদিন জানাল, রানির বিয়ে হয়েছে, ছেলে ব্যাংকে চাকরি করে। পরবর্তিতে বিসিএস দিয়ে সরকারি একটা মন্ত্রনালয়ে জয়েন করেছে। বিয়ের দেড় বছর পর বাসায় মিষ্টি আসল। খালা জানাল রানির ছেলে হয়েছে, সেটার মিষ্টি। আরও দুবছর পর আবার রানি প্রসঙ্গ, খালা জানাল রানির এবার পরীর মত সুন্দর একটা মেয়ে হয়েছে। মিষ্টি পথে আছে।
এ বছর আমার ছেলের এক বছরের জন্মদিন ছিল, তাই প্রথম জন্মদিনের কেক একটা ভাল জায়গা থেকে আনার প্ল্যান করলাম। জানতে পারলাম রানির বাবা এখন একটা বেশ নামকরা থ্রি স্টার হোটেলে বড় পোস্টে আছেন। তাই খালাকে বলে রানির মাধ্যমে আঙ্কেলের সাথে যোগাযোগ করলাম, উনি বলে দেয়াতে খুব যত্ন নিয়ে কেকটা করে দিয়েছিল। খালার মাধ্যমেই রানিকে বড়সড় একটা ধন্যবাদ দিলাম।
গত সপ্তাহে খালার ফোন। এবারো রানি প্রসঙ্গ। জানালো, রানির হাসবেন্ড হঠাৎ করে হার্ট এটাক করেছে, হসপিটালে নেবার আগেই সব শেষ।
শুনে আগের ছবিটাই চোখে ভেসে উঠল। এবার রানি সাদা শাড়ি পরে, পিঠ পর্যন্ত চুল খোলা, মায়ের কোলে মুখ গুঁজে আছে আর তার মা চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




