যখন যেটা পেয়েছি মনে হয়েছে এটা আমার চাইনা, আবার সেটাই যখন পাইনি তখন অস্থির থেকেছি কেন পাচ্ছিনা তাই।
৭/৮ বছর তখন, মনে আছে আমি, বাবা, মা, ভাই কোন এক দাওয়াতে যাবো তাই মহাখালির জলখাবার থেকে মিষ্টি কিনতে থেমেছি। বাবা কি মনে করে যেন আবার দুটা পাটিসাপটা কিলে চার ভাগ করে চারজনকে দিল। আমি এক কামড় খেয়ে আর খাইনি, মনে হয়েছিল খুব বাজে খেতে। কিন্তু যেই মিষ্টি কিনে রওনা করলাম সাথে সাথেই মনে হল, পিঠাটা ওনেক মজা ছিল। ওটার জন্য আফসোস শুরু হল, সেই দু:খে দাওয়াতের খাওয়াও ঠিকমত খাইনি। এই আফসোস অনেকদিন ছিল, শেষ হল যেদিন মা বাসায় সেই পাটিসাপটা পিঠা বানায়।
৬বছর বয়স থেকে আমি আলাদা রুমে একা থেকে অভ্যস্ত। আমার ছোট ভাই একরাতে অনেক আশা নিয়ে আসল আমার সাথে রাতে থাকবে। আমি চার হাতপা ছড়িয়ে শুয়ে থাকলাম যাতে সে শুতে না পারে। অনেক কান্নাকাটি করল, মা অনেক বকা দিল কোনটাতেই কাজ হলনা। শেষ পর্যন্ত ভাই কাঁদতে কাঁদতে মার সাথে যেয়ে ঘুমালো। কিন্তু যেই আমার রুম থেকে চলে গেল সাথে সাথেই মনে হল থাকতে দিলেই তো পারতাম, মজাও হত অনেক কারন অনেক্ষন খেলা ধুলাও করতে পারতাম। সেই আফসোসে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলাম। আফসোসটা আর কোনদিন যায়নি, কারন এরপর আর কোনদিন ভাই আমার সাথে ঘুমানোর জন্য বায়না করেনি।
এমন অনেক আফসোসের কাহিনী আছে যেটা লিখলে মহাগদ্যের আকার ধারন করবে। তাই সব বাদ দিয়ে একদম নতুন আফসোসের কথা লিখছি।
গত বছর যখন সরকার এক ঘন্টা টাইম আগালো মেজাজ খারাপ হল। সকালে উঠলে মনে হত আগের টাইম থাকলে আরো এক ঘন্টা বেশি ঘুমাতে পাড়তাম। অফিস থেকে বাসায় ফিরলে আবারো মেজাজ খারাপ, বাসায় যেতেই ঘুমানোর টাইম হয়ে যায়, ছেলেটাকে সময় দিতে পারিনা। ইত্যাদি ইত্যাদি। আর যখন জানলাম সরকার আর সময় বদলাবেনা তখন আবার আফসোস শুরু। সময়টা বদলালে অন্তত মাঝে মাঝে অফিস থেকে বের হয়ে আলোর দেখা মিলত। স্টার ওয়ার্ল্ডে কিছু সিরিয়াল দেখায় ১০.৩০ এ, ওই সময় ছেলেটাকে ঘুম পাড়াই বলে আর দেখা হয়না, সময়টা বদলালে তো সিরিয়ালের টাইম ১১.৩০ হত। তাহলে তো একটাও মিস করতামনা
এত আফসোস নিয়ে যে কিভাবে দিন কাটে
যা পেয়েছি আমি তা চাইনা, যা চেয়েছি আমি তা পাইনা।।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




