একবার ব্লগে একটা লেখা পড়েছিলাম। বয়স হোক ৬ বা ৬০, জোনি তো আছে। বিষয়টা এমনই হয়ে দাড়িয়েছে আমাদের সমাজে। রাত কি সকাল কি বিকেল ধর্ষণ যেন এক লীলায় পরিণত হয়েছে সমাজে। দিনকে দিন ধর্ষণের অভয়াশ্রমে পরিণত হতে চলেছে রাজধানী ঢাকা। নিদারুণ পাশবিক আর নৃশংস পদ্ধতিতে লিঙ্গবিলাস চালিয়ে যাচ্ছে নিপীড়করা। অদূরে ঢাকা দিল্লীতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
নরপিচাসদের শিকার এবার এক আদিবাসী গারো মেয়ে। তিন বছর আগের, দিল্লীর চলন্ত বাসের পাশবিক গণধর্ষণের পুনরাবৃত্তি। মেয়েটির উপর চলে দেড় ঘন্টার তেতুলায়ীত লিঙ্গবিলাস।
মেয়েটি একজন জাতিগত সংখ্যালঘু, গারো; ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু, খ্রীষ্টান। কাজ করতেন একটা দোকানের সেলসগার্ল হিসাবে। বোঝাই যাচ্ছে নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। মেয়েটির এত্তোসব ‘অযোগ্যতা’ থাকার পরও প্রাপ্য বিচার কি জুটবে? জু-ট-বে-না!
তবে দিল্লী থেকে শিক্ষা নেয়ারও আছে। সেদিন দিল্লী কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে ফেটে পড়েছিল। অসংখ্য মানুষ রাস্তার নেমে এসেছিল। এমনকি তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের সর্বেসর্বা সোনিয়া গান্ধিকেও জনগণের সাথে একাত্ত হয়েছিলেন, হতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু এদেশে এর উল্টোটা। পুলিশ নীরব থেকে যেমন ধর্ষণে সহায়তা করে আবার ধর্ষণের প্রতিবাদকারীদের বেধরক পেটায়ও। যদিও প্রতিবাদকারী কেউ বিএনপি জামাতি ছিলনা। বরং তাদের বিপরীত রাজনৈতিক আদর্শের-ছাত্র ইউনিয়ন।
যাইহোক যেকোনো আন্দোলনেই স্বাধীনতাবিরোধীদের মদদ থাকতে পারে। অতএপ, কোনো আন্দোলন এদেশে আর হবেনা। হোক ধর্ষণ বা ব্লগার হত্যা। দেখলেননা বর্ষবরণের নারী হয়রানি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের ধ্বজভঙ্গ প্রশাসন কিরকম নির্লজ্জ ভাবে বলে দিয়েছে 'ওসব কিছু ঘটেই নাই'।
ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন চলছে, এইতো গত শুক্রবারে অফিসে যাওয়ার পথে শাহাবাগের একটা মশাল মিছিলে শরীক হই। তবে এই আন্দোলন কতদিন চলবে এতে সন্দিহান। কারণ প্রথমত, আন্দোলনরত সমাজতান্ত্রিকরা সংখ্যায় খুবই নগণ্য। আর বাকিরা নানা ভয়ে দিশেহারা-ফেরারি, হাজতী ও দেশান্তরী। আর ওইদিকে মহান বুদ্ধিবিক্রেতারা টকশো ব্যবসায় মুনাফা গুনছেন। তাই ধরেই নেয়া যায় এক্ষেত্রে ঢাকা কিন্তু দিল্লী হচ্ছেনা ঠিকই।মানে মানুষজন এই নগন্য আদিবাসী মেয়েটার ধর্সন্কান্ডে ঢাকার রাস্তায় নামছেন না। ভাই মরে তো আর নাই; মরলে ঠিকই নামতাম। তাইলে আর কি করবেন ফেইসবুকে দিল্লী বানান।
বুঝেননা এখনতো সোশাল মিডিয়ার যুগ। আমরা চেতনাধারীরা এখন ফেইসবুকে অধবা 'নিষিদ্ধ' ব্লগে ধ্বজা উড়াই। অনলাইন গেরিলা খেলি। খতমও করি। কী রোমাঞ্চ!
তবে মেয়েটি আমার কেউ নয়। মা, বোন্, স্ত্রী ইত্যাদি। এর কিছুইনা। এসব পুরুষতান্ত্রিক শব্দের মধ্য দিয়ে নারীরা আজকে কেনা পণ্য পরিণত। মা-বোনের নামে তাদেরকে নব্য ক্রীতদাস বানানোর অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? কতদিন আর এই ভন্ডামি। এসব বলে কয়ে আর কতদিন রক্ষণের নামে ভক্ষণ করবেন? এবার রক্ষণের দায়ভার নারীদের উপরেই ছেড়ে দিন। এজন্য আপনার কিচ্ছু করতে হবেনা। খালি ইমানখুটি আর দুইটা ভন্দকোষের হেফাজত কইরেন
গারো ছাত্র সংঘের সদস্যরা জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে রাজধানীতে এক গারো মেয়ের ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ করে। ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের ছবি। বাংলার চোখের তোলা।