ধানমন্ডি লেকে খেলা দেখে বন্ধু সনেটের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় একটা বাইক থেকে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশের পতাকা কুড়িয়ে পেলাম।পতাকাটা মাথার উপর তুলে ধরে নিঃসঙ্গ ছেলের মতো উদযাপন করতে করতে আসছিলাম।সিটি কলেজ পার হওয়ার সময় গ্যাচ করে আমার পাশে এসে দাড়ালো আমার মতো নিঃসঙ্গ একজন বাইক চালক।সে বললো, "আপনার কাছে পতাকা আছে আর আমার কাছে বাইক।আমার বাইকের পিছনে বসে আমাদের পতাকাটা উচিঁয়ে ধরবেন বিনিময়ে আপনাকে আমি বাসায় পৌছে দিবো।"
আমি নিশ্চিত ছিলাম না লোকটা চোর নাকি ডাকাত নাকি কোনো ছিনতাইকারী!!!!শুধু এটুকু বুঝতে পারতেসিলাম লোকটা আমার মতো "টাইগার আর্মি"র একজন গর্বিত এবং আনন্দে উদ্বেলিত সমর্থক।
অচেনা নিঃসঙ্গ বাইক চালকের সাথে নষ্টছেলের বিজয় মিছিল কতো অসাধারণ ছিলো সেটা আমি কাউকে বলে বোঝাতে পারবোনা।এটা সম্ভবত আমার লাইফের বেস্ট স্মৃতি।শুধুমাত্র বাংলাদেশের একটি লাল-সবুজের পতাকার অহঙ্কার আমাকে এতো সুখ উপহার দিলো।
আমাদের মধ্যে কোনো কথা হয়নি কারণ ২জন ই "বাংলাদেশ" "বাংলাদেশ" চিৎকার করায় ব্যস্ত ছিলাম।
আমার বিজয় মিছিলের সঙ্গীর নাম-ঠিকান এং ফোন নাম্বার নেয়া হয়নি কারণ পলাশীতে আমি বাইক থেকে নামার সাথে সাথে আমি কিছুক্ষণের জন্য বুয়েটের জুনিয়রদের মাঝে হারিয়ে গিয়েছিলাম।পরে ফিরে দেখি নিঃসঙ্গ বাইক চালক আমাকে হাত নাড়িয়ে বিদায় দিয়ে উৎসবের নগরীতে মিলিয়ে যাচ্ছে।
আমি এখনো আমার বিজয় মিছিলের সঙ্গীর দেখা পাওয়ার আশা ছাড়িনি হয়তো এরকম কোনো বিজয় আবার আমার বিজয় মিছিলের সঙ্গীকে ফিরিয়ে দিবে এই আশায় থাকলাম।
"টাইগার বাহিনী" কথা দিচ্ছি সারাজীবন তোমাদের সাথে থাকার
"দেশমাতৃকা" কথা দিচ্ছি সারাজীবন নিজের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে তোমাকে ভালোবাসে যাবো আমৃত্যু।
"লাল-সবুজ পতাকা" কথা দিচ্ছি জীবন দিয়ে তোমাকে সমুন্নত রাখবো এবং গর্ব ভরে আজকের মতো দুই হাত দিয়ে মাথার উপর উচিঁয়ে ধরবো সবসময়।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৬