..
...
......
ছাদের রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছি আর চাঁদ দেখছি।আমি কোন আধা-পাগলা কবি নই যে হা করে তাকিয়ে চাঁদ দেখব, তবুও আজ দেখছি। কেন যেন ভালো লাগছে, কেন লাগছে জানিনা। জানতে চাই ও না।সবকিছু জানতে হয়না।চাঁদের চারপাশে কিছু সাদা মেঘের টুকরো ঘুরঘুর করছে কিন্তু চাঁদকে আড়াল করছে না। নিশচয়ই এটা একটা খেলা। মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুই কোন-না-কোন খেলা খেলছে। এবং তিনি এসব নিয়ন্ত্রন করছেন। মূল খুঁটি যার কাছে।
সিগারেট শেষ। আরেকটা ধরাবো কি-না ভাবছি এমন সনয় কানে নূপুরধ্বনি আসল।পেছনে তাকিয়ে দেখি রেমি এসেছে।তার পড়নে সবুজ শাড়ি। কপালে সবুজ টিপ। বেহেস্তের হুর-পরীরা রেমিকে এভাবে দেখলে লজ্জা পেয়ে পালাত।সবুজ শাড়িটা আমার দেওয়া।এই শাড়িটা পেয়ে সে এমন ভাব করেছিল যেন কেউ চাঁদের মাটি পার্সেল করে পাঠিয়েছে।
-কেমন আছ শফিক?
-ভালো।
-আজ কয়টা সিগারেট খেয়েছ?
-জানিনা।
-তুমি কি সুখে আছ শফিক?
-হুঁ।
আমার ক্ষীণ আওয়াজ রেমির কানে পৌছল কিনা জানিনা।সে আরেকটু কাছে এসে দাঁড়াল।খোপা বাঁধেনি। মৃদু বাতাসে রেমির কয়েকটা পাতলা চুল উড়ছে।
-আমার উপর রাগ করেছ? রেমি বলল।
-নাহ।রাগ করব কেন?
-এই যে আমি চলে গেলাম, তাই।
-রাগ করিনি।
-রাগ না করলে এত কম কথা বলতে না। আসার পর থেকে একবার ভালো করে তাকিয়েও দেখনি।
-কেন এসেছ?
-এমনিই এসেছি। তোমাকে দেখতে।
-আমাকে দেখার জন্য আসতে হবেনা।
রেমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল। কাঁদছে? হতে পারে। মেয়েরা অল্পতেই কাঁদে।
-আমার মেয়ে কোথায়?
-জানিনা।
-জাননা মানে? নোহা কোথায় এখন?
-বললাম ত জানিনা।
-তোমার মেয়ে আর তুমি বলছ সে কোথায় আছে জাননা?
রেমি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে। মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়েছে যাতে আমি তার চোখের জল না দেখি। রাতে ছাদে আসার জন্য রেমি পাগল ছিল। আমার হাতে হাত রেখে বসে থাকত। কখনোবা ছাদের অন্যপাশে গিয়ে অদ্ভুত কোন কারণে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদত। কিন্তু আমাকে তা বুঝতে দিত না।
আমার বুকের কোথাও কি একটু ছিনছিন ব্যথা করছে? করছে হয়ত। প্রশ্রয় দিলে ব্যথা আরো বাড়তে থাকবে। সেটা হতে দেয়া যায়না। কিছু একটা করতে হবে। কি করতে হবে সেটা আমার জানা।
আমি আরেকটা সিগারেট ধরালাম।