somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আ.হা. শাহরিয়ার : আমাদের সময়ের স্বঘোষিত জীবনানন্দ

২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা হতেই পারে যে, কেউ একজন ব্লগে ছদ্মনিকে লেখালেখি করবেন। ব্লগমাধ্যমে ব্যাপারটা স্বীকৃতই। আমি নিজেও যেমন অবজারভার নিকে ব্লগিং করি। তো, নিকের পেছনের মানুষটা কেমন তা আমরা বিশেষ জানি না। কিন্তু একেবারেই কি জানি না? কিছুদিন একটি নিকের গতিবিধি অবজারভ করলে কি আমরা প্রত্যেকেই মানুষটার ভালোলাগা-মন্দলাগা, পছন্দাপছন্দ সম্পর্কে একটা ধারণা পাই না? পাওয়াই উচিত, যদি একান্ত পেতে চাই।

ধরুন, আমি প্রগতিবিরোধী সকল পোস্টে গিয়ে বাহবা দিয়ে আসি, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের সকল পোস্টে গিয়ে ষোষণা দিয়ে মাইনাচ মেরে আসি, তাহলে কি আপনাদের বুঝবার বাকি থাকবে যে আমি একটা রাজাকার? একইরকমভাবে আমি যদি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ পেলেই (না পেলেও সুযোগ তৈরি করে নিয়ে) এখানে সেখানে গিয়ে একজন সমসাময়িক লেখকের নাম অনেক বড়ো করে বলি, তাহলে কি আপনার সন্দেহ হবে না যে ওই নামের মানুষটির সঙ্গে আমার একটা সম্বন্ধ আছে? সম্বন্ধটা নানারকম হতে পারে। হতে পারে আমি নিজেই ওই ব্যক্তি, হতে পারে আমি নিজে ওই ব্যক্তি কর্তৃক নিয়োজিত কেউ, হতে পারে ওই ব্যক্তিকে খুশি করায় আমার বিশেষ স্বার্থ নিহিত আছে। হতে পারে না কি?

সামহ্যোয়ারে কদিন আগে হঠাৎই চাক্ষিক নামে এরকম একটি নিককে আবিষ্কার করা যায়। এই নিক তার পোস্টে, পোস্টের রিপ্লাইয়ে, অন্য ব্লগারদের পোস্টে কমেন্ট করতে গিয়ে কেবলই আবু হাসান শাহরিয়ার, তাঁর খাস সাগরেদবৃন্দ অথবা তাঁর বইয়ের নাম বলে বলে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে। ব্যাপারটায় আমার বিশেষ সন্দেহ হয়। কারণ কদিন আগে একইরকম একটি ঘটনা সচলায়তনে ঘটেছিল বলে শুনেছি। এ নিয়ে সুমন রহমান নামের একজন কবি-চিন্তক বিদ্যাকূট নামক তার নিজস্ব ব্লগে রূপক কর্মকারের শাহরিয়ার প্রজেক্ট নামে একটি পোস্টও দিয়েছেন। জানা যায়, সচলায়তনে 'রূপক কর্মকার', 'নাজনীন সুপ্তি' ও 'অতিথি' নিকে লোকটি নিজেকে দ্বিতীয় জীবনানন্দ বানাবার কসরৎ করতে গিয়ে বিশেষভাবে দাগা পেয়েছেন। এই তিনটি নিক পরস্পরের প্রশংসা করে দুইতিনদিনেই নাকি কমসেকম ৫০ বার জীবনানন্দের পরেই গুরুত্বপূর্ণ কবি হিসেবে আবু হাসান শাহরিয়ারের নাম উৎকলন করে ও তাঁর কবিতার পঙক্তি এখানে সেখানে ছড়িয়ে দিয়ে সচলদের মনে জিজ্ঞাসার উদ্রেক করতে সমর্থ হয়। পরিশেষে সচলায়তন মডারেশন তাঁরই একটি পোস্টে কমেন্ট করে 'উল্লিখিত তিনটি নিকের আইপি অ্যাড্রেস একটাই'-- একথা জানিয়ে তিনটি নিককেই ব্যান করে দেয়। বিষয়টা এখন ব্লগোস্ফিয়ারে একটি ওপেন সিক্রেট।

আবু হাসান শাহরিয়ারের কবিতা আমার খারাপ লাগে না। পাঠযোগ্য কবিতাই তিনি লিখেন। কিন্তু বিখ্যাত হবার জন্য নীচতাসূচক যেসব পন্থা তিনি অবলম্বন করেন, সেসব কোনো ভালো মানুষ করতে পারেন না। তিনি যদি একান্ত ভালোই লিখেন সেটা আমরা পাঠকরা বলব, তিনি নন। তাঁর এই নাগরিক কেতাটা রপ্ত করা উচিত।

যাই হোক, সচলায়তন ঘটনা থেকে সূত্রজ্ঞানে ঋদ্ধ হয়ে সন্দেহবশত চাক্ষিক নিকের কয়েকটি পোস্টে আমি কিছু কমেন্ট করি। নিকটি কমেন্টের জবাবও দেয়। কিন্তু হঠাৎ আমি একটি কমেন্টে 'এটা সামহ্যোয়ারইন, খোলা জানালা নয়' বলে ফেলায় নিকটি কোনো জবাব না দিয়ে আমার মন্তব্য ডিলিট করতে শুরু করে।

গত পরশু তরুণ কবি তারিক টুকু শাহরিয়ার হইতে সাবধান নামে সামহ্যোয়ারে একটা পোস্ট দেন, যেখানে তাঁর সমস্ত অপকর্ম তুলে ধরা হয়। চাক্ষিক ওইসময় ব্লগে ছিল। যদি সে শাহরিয়ার না-ই হবে তাহলে ওই পোস্টে এসে তার কথা সে বলতে পারত। কিন্তু সে তা করেনি। এতে আমার সন্দেহটি আর সন্দেহের জায়গায় থাকে নি। আমি এখন নিশ্চিত যে চাক্ষিক আবু হাসান শাহরিয়ারই। হয়ত তারিক টুকু এবং অন্যদেরও এই নিশ্চিতি এসে গিয়ে থাকবে।

ব্যাপারটা এ পর্যন্ত থাকলে আমি এই পোস্টটি লিখতাম না, মানে আমাকে লিখতে হতো না। কিন্তু গত পরশু তাঁর পোস্টে গিয়ে দেখি তিনি আমাকে ব্লক করেছেন। ওইদিন তিনি তাঁরই মুখ্য চ্যালা রহমান হেনরী উরফে পোয়েট ট্রি-র দুটো কবিতা পোস্ট করেন। পোস্টটি পড়তে পড়তে আমার মন্তব্য তৈরি হয়, কিন্তু দেখলাম আমার মন্তব্য করার অধিকার নেই। কেন তিনি আমাকে ব্লক করবেন? একজন ব্লগে এসে নিজেকে জীবনানন্দ ঘোষণা দেবেন, গরু-ছাগলকে রবীন্দ্রনাথ বলে পরিচয় করিয়ে দেবেন আর তাঁকে কিছুই বলা যাবে না এটা কেমন কথা!

আমি আশংকা করছি যে আমাকে নয় শুধু, তারিক টুকুর পোস্টে যাঁরাই কমেন্ট করেছেন, তাঁদের একটা বড়ো অংশকেই হয়ত তিনি ব্লক করে থাকবেন, যা আমি মোটেই সমর্থন করতে পারছি না, আপনারা পারছেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:৫৯
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×