somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী দিবস স্পেশাল- জনাব আবুল কাসেমের সাড়া জাগানো বই-ইসলামে বর্বরতা (নারী-অধ্যায়—১ও২)

০৮ ই মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভূমিকা
যে সমাজে নারীর ওপরে যত কম অত্যাচার হয়, সে সমাজ তত সভ্য। সে হিসেবে এখনো পৃথিবীতে মা-বোনের সামনে আমাদের লজ্জা রাখার জায়গা নেই। সৃষ্টির শুরু থেকে পুরুষ যত রকমে সম্ভব নারীর ওপরে অত্যাচার করেছে। এবং সেজন্য রাষ্ট্র,সাহিত্য, আঞ্চলিক সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক কাঠামো এমনকি ধর্ম পর্য্যন্ত কাজে লাগিয়েছে। নারীর ওপরে অত্যাচারকে হালাল করার ব্যাপারে ধর্মের ব্যবহারটা খুবই মোক্ষম।ইসলামের অবস্থাও তাই। সে অত্যাচার ঠেকাবে কি, ওটাকে অত্যাচার বলে মনে করতেই সাহস পায় না কেউ। ইমান নষ্ট হবে তাহলে। এ ব্যাপারে লেখালেখি হয়েছে বিস্তর। ভক্ত মুসলমানরা আর মওলানারা লক্ষ লক্ষ কেতাবে, প্রবন্ধ নিবন্ধে, মিলাদ মজলিসে, আর বক্তৃতায় কোরান হাদিসের নানারকম উদ্ধৃতি দিয়ে দেখিয়েছেন, ইসলামে নারীর জায়গা বড়ই চমৎকার। ইসলাম মেয়েদের একেবারে দুধে-মধুতে রেখেছে। কথাটা যে একেবারে মিথ্যে, তা কিন্তু নয়। মেয়েদের ব্যাপারে মিষ্টি-মধুর অনেক কথাই আছে ইসলামে। আছে মনোহরণ বর্ণনা, আছে চমৎকার উপদেশ, উপরোধ আর অনুরোধ। সেটা হল মূদ্রার একটা দিক। চাঁদের যেমন একটা দিকই পৃথিবীর দিকে সব সময় মুখ করা থাকে, তেমনি মেয়েদের ব্যাপারে ইসলমের ওই মিষ্টি সুন্দর মুখটাই মওলানারা সব জায়গায় দেখিয়ে বেড়ান। অন্য কুৎসিৎ দিকটা জানেন নিশ্চয়ই, কিন্তু ভুলেও দেখান না। কিংবা বোধহয় ইমানের কঠিন দেয়াল ভেঙ্গে মানবতাটা মাথায় ঢুকতেই পারে না। যদি মেয়েদের ইসলাম এতই মাথায় তুলে রাখবে, তা হলে মুসলমান সমাজের ইতিহাসে আর বর্তমানে মেয়েদের এত আর্তনাদ, এত গোঙ্গানীর অন্য কারণ গূলোর সাথে সাথে ইসলামী আইনের নিষ্ঠুরতাটা লুকিয়ে রাখেন বিলকুল। ইসলামকে যদি ঠিকমত জানতে হয়, তবে দু’টো দিকই দেখতে হবে আমাদের।

দলিল থেকে নারীর প্রতি ইসলামের আদর দেখিয়েছেন লক্ষ লক্ষ মওলানা। আর নিষ্ঠুরতা দেখিয়েছেন মুষ্টিমেয় মাত্র কিছু পন্ডিত। দু’একটা বইও আছে ইংরেজীতে এর ওপর। তবে এ বিষয়ে সবচেয়ে বিস্তারিত বলেছেন আবুল কাসেম। ইন্টারনেটের অনেক সাইট তাঁর পুরো গবেষণা ধরে রেখেছে, বিশেষ করে মুক্তমনা। এ বইয়ের অন্য জায়গায় মুক্তমনার ঠিকানা দেয়া আছে। কোরাণ হাদিস আর ইসলামের আদি কেতাবগুলো থেকে তিনি একের পর এক অজস্র দলিল এভাবে তুলে ধরেছেন যে তা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ হয় যে মুসলমান মেয়েদের প্রতি যত অত্যাচার হয়েছে, তার একটা বড় অংশের জন্য দায়ী ইসলাম নিজেই। বাংলায় এতবড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটা বইও নেই, এটাই প্রথম। আপনাদের সামনে দেবার আগে বছরের পর বছর ধরে এর প্রতিটি বক্তব্যের সত্যতা সম্বন্ধে সমুদ্র-মন্থন করা হয়েছে কোরান-হাদিস এবং ইসলামের আদি ইতিহাস থেকে। কারণ, আমরা হাড়ে হাড়ে জানি মওলানারা কি চীজ। একটা ভুল পেলেই চীৎকার করে আকাশ পাতাল একাকার করে ফেলবেন। ভুল না পেলেও মুরতাদ-টুরতাদ বলে টাকা-পয়সার ঘোষনা দিয়ে তাঁরা আমার মাথাকাটার চেষ্টা করবেন। যাহোক, কোন মওলানা যদি এর মূল উদ্ধৃতিতে ভুল দেখাতে পারেন, তা হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে এ বই আমি বাজার থেকে উঠিয়ে নেব, এ ওয়াদা থাকল।

এবারে কাজে নামা যাক। আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাকে ইসলাম কি চোখে দেখছে, মুখের কথায় কি বলছে, আর কাজে কি করছে। আমি আবুল কাসেমের গবেষণা থেকে আলোচনা করব, আমার সিদ্ধান্ত আপনাদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেবনা। মাথার মধ্যে মগজ সবারই আছে। সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব আপনাদের। পাঠক! অবাক এবং ক্রুদ্ধ হবার জন্য প্রস্তুত থাকুন।

ধন্যবাদ।
২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০০২ খ্রীষ্টাব্দ

সূচনা
সব বাংলাদেশীদের মত আমিও ইসলামকে খুবই শান্তির ধর্ম মনে করতাম, সবার মতই আসল ইসলাম সম্বন্ধে জানতাম অল্পই। ইরানে ইসলামী হুকুমত কায়েমে দুনিয়া তার দিকে ফিরে তাকাল। পরে আমিও কৌতুহলী হয়ে ঢুকে পড়লাম ইন্টেরনেটে। ইউরোপ-আমেরিকার শত শত ইসলামী মনিষীর অসংখ্য লেখা পড়ে মনটা খুব খুশী হয়ে গেল। সব সৎ পাঠকের মত আমিও তাদের প্রতিটি কথাই বিশ্বাস করলাম। ইসলামে আমাদের মা-বোনদের জন্য এত ভালো ভালো কথা আছে যে তা দেখে মনটা আমার বড়ই মোহিত হয়ে গেল।

কিন্তু তারপর পৃথিবীর মুসলিম দেশগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন সন্দেহ হল। ইসলামী মনিষীরা এত জোর দিয়ে যা কিছু বলছেন, তার দেখি কিছুই মিলছে না। উল্টে বরং মেয়েদের আর্তনাদে সেখানে কান পাতা দায়। পাকিস্তানে, নাইজিরিয়াতে, আফগানিস্থানে তো মোটামুটি ইসলামী আইন (শারিয়া) চালু আছে, কিন্তু তাহলে সে সব দেশে মেয়েদের অবস্থা এত করুণ কেন? আফগানিস্থানের রাস্তায় পুলিশ লাঠি দিয়ে মেয়েদের পেটাচ্ছে, নাইজিরিয়ায় ধর্ষিতা মেয়ে পুলিশের কাছে নালিশ জানাতে এসে শারিয়া কোর্টে মৃত্যুদন্ড পেল, দুবাই কোর্ট স্বামীদেরকে বৌ-পেটানোর অধিকার দিল, পত্রিকায় এই সব দেখে মাথায় যেন বজ্রাঘাত হল, আতংকে ত্রাসে শির শির করে উঠল বুকের ভেতর। সর্বনাশ! অন্য কেতাবে যা-ই লেখা থাকুক, শারিয়ার কেতাবে তো এগূলোই আছে। বাংলাদেশেও শারিয়া চালু করার চেষ্টা চলছে, এমন ঘটলে আমাদের যে কি সর্বনাশ হয়ে যাবে তা ভেবে ভয়ে হিম হয়ে গেল বুক। তারপর বাধ্য হয়েই ঢুকে পড়লাম ইসলামের ভেতর। ওখানে কি আছে দেখতে হবে, শেকড় খুঁজে বের করতে হবে নারীর ওপর ইসলামী অন্যায়-অত্যাচারের। অত্যাচারগুলো আসলে কি কেতাবেই আছে, না কি পুরুষ আইনগুলোকে বিকৃত করেছে?

যা দেখলাম, তাতে দম বন্ধ হয়ে গেল। অবিশ্বাস্য, এ যে অবিশ্বাস্য! এ কি চেহারা আসল ইসলামের? এ যে প্রকান্ড এক দানব ছাড়া আর কিছু নয়! আবার সব কিছু দেখলাম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। না, কোন ভুল নেই, মানুষকে হাজার বছর ধরে নির্লজ্জ মিথ্যে কথায় কঠিন প্রতারণা করেছেন মওলানারা। আমি উঁচু বিদ্যায়তনে ছাত্র পড়াই, জীবনে অনেক পরীক্ষাই দিয়েছি এবং পাশ করেছি। এবার যেন জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে, এ কথা মনে রেখে আবার পড়া শুরু করলাম ইসলামের মূল বইগুলো, যেখান থেকে উঠে এসেছে ইসলামের আইন কানুন। খাটাতে শুরু করলাম নিজের বিবেক-বুদ্ধি আর কল্যাণ-বোধ। তখন ধীরে ধীরে ইসলামের এই লুকিয়ে রাখা না-বলা দানবীয় দিকটা স্পষ্ট হয়ে এল চোখের সামনে। না, কোন ভুল নেই। নারীর প্রতি ইসলামের আদর সম্মান শুধু লোক দেখানো, মন-ভোলানো। ওগুলো শুধু গজদন্তের মত হাতীর বাইরের সুন্দর দাঁতটা। আসলে ইসলামের মুখের ভেতরে লুকোন আছে মেয়েদের চিবিয়ে খাওয়ার জন্য আরও একপাটি শক্তিশালী বিষাক্ত দাঁত। তারই নাম শারিয়া।

কিন্তু এটা আমি একা দেখলে তো চলবে না। অবশ্যই এ লুকোন দলিল দেখতে হবে পৃথিবীর সব মানুষকে। যত অবিশ্বাস্যই হোক, যত বেদনাদায়ক-ই হোক, সবাইকে জানতেই হবে ইসলামী শারিয়ার আইন কি শকুনের চোখে তাদের দেখে। খাল কেটে এ রক্ত-পিপাষু কুমীরকে ডেকে আনবার আগে অবশ্যই সমস্ত শান্তিপ্রিয় মুসলমানকে দেখতে হবে ইসলামের এই ভয়াবহ লুকোন চেহারা।

তাই হাতে তুলে নিয়েছি কলম, খুব আস্তে ধীরে ইসলামের আসল চেহারাটা ফুটিয়ে তুলব আপনাদের সামনে। আপনারা পড়ুন, খুঁটিয়ে দেখুন, এবং চিন্তা করুন। এবং দেখান মওলানাদের। তাঁদের কি বলার আছে জানান আমাকে। যদিও জানি তাঁরা টুঁ শব্দটি করবেন না। কারণ তাঁদের ভালোই জানা আছে যে লড়াইটা তাঁদের করতে হবে আমার বিরুদ্ধে নয়, বরং তাঁদের নিজেদের কেতাবের বিরুদ্ধেই। এটাও তাঁরা ভালোই জানেন যে এ ব্যাপারে বেশী নড়াচড়া করলে তাঁরা মধ্যপ্রাচ্যের চোরাবালুর গর্তে ঢুকে মারা পড়বেন
ধন্যবাদ।
আবুল কাশেম।

১ম পর্ব
প্রথমে কোরান দিয়েই শুরু করা যাক, সৌদী আরব থেকে প্রকাশিত মওলানা মুহিউদ্দিন খানের অনুবাদ। কোরাণের যে কথাগুলো পুরুষের মন মানসিকতায় ব্রক্ষ্মাস্ত্র হিসেবে গেঁথে রয়েছে, সেগুলো একটু দেখে নেয়া যাক, তারপরে বিস্তারিত তথ্যে যাব আমরা।

আল্লাহ্‌র পছন্দ হচ্ছে পুরুষ—তা কী বলার দরকার রাখে?কি আছে সুরা নাহল- আয়াত ৪৩ (১৬:৪৩), সুরা হজ্ব আয়াত ৭৫ (২২:৭৫) এ?
নারীকে কোনদিন নবী-রসুল করা হবে না।

সুরা ইউসুফ, আয়াত ১০৯-(১২:১০৯) তেও একই কথা:
আপনার পূর্বে আমি যতজনকে রসুল করে পাঠিয়েছি, তারা সবাই পুরুষই ছিল জনপদবাসীদের মধ্য থেকে, আমি তাঁদের কাছে ওহী প্রেরণ করতাম।

এবং সিদ্ধান্ত দিয়েছে সুরা আল্ আনাম আয়াত ৯ (৬:৯):
যদি আমি কোন ফেরেশতাকে রসুল করে পাঠাতাম, তবে সে মানুষের আকারেই হত। এতেও ঐ সন্দেহই করত, যা এখন করছে।

কোন কোন অনুবাদে দেখবেন আরবীর ‘পুরুষের আকারে’ শব্দটাকে অনুবাদে ‘মানুষের আকারে’ বলে সমস্যাটাকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করেছেন চালাক মওলানারা।

আরবীতে মানুষ হল ইনসান আর পুরুষ হল রাজাল। মওলানাদের জিজ্ঞাসা করুন তো, কোরানে কোন শব্দটা আছে?

এবারে একটু হাদিস ঘেঁটে দেখা যাক। হাদিস হল নবী (সঃ) এর কথা-বার্তা, আচার-বিচার, ধ্যান-ধারণা, ব্যবহার-ব্যক্তিত্ব, মতামত-সিদ্ধান্ত, এ সবের বিস্তারিত রিপোর্ট, তাঁর সহচরেরা দিয়ে গেছেন। হাদিস ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, কোরানের পরেই এর স্থান। হাদিস বাদ দিলে ইসলামের সাংঘাতিক অঙ্গহানী হয়ে যায়। বিখ্যাত মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম তাঁর বিখ্যাত ‘‘হাদিস সংকলনের ইতিহাস’’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় বিভিন্ন বুলন্দ ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘‘হাদিস অমান্যকারী কাফির’।

ছয়টি হাদিসের বই সর্বকালে সর্ব দেশে সুন্নী মুসলমানেরা ‘‘সহিহ্‌’’ বা ‘‘সত্য’’ বলে গণনা করেন, সেগুলো হল সহিহ্‌ বোখারি, সহিহ্‌ মুসলিম, সহিহ্‌ নাসায়ী, সহিহ্‌ তিরমিজি, সহিহ্‌ আবু দাউদ এবং সহিহ্‌ ইবনে মাজাহ। আমরা মোটামুটি সেগুলো থকেই উদ্ধৃতি দেব।

দুনিয়ার এক হাজার দুশো মিলিয়ন মুসলমানের মধ্যে সুন্নীরা-ই এক হাজার কোটি। হাদিসে মেয়েদের সম্মন্ধে অনেক ভালো কথাও আছে। কিন্তু তার পাশাপাশি যা আছে, তাতে লজ্জায় মুসলমান পুরুষদের স্রেফ আত্মহত্যা করা ছাড়া অথবা ওই শত শত দলিল গুলোকে খুন করা ছাড়া উপায় নেই। বাড়িয়ে বলছি না একটুও, সবই দেখাব একটা একটা করে।

সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৩১ হাদিস ৫৯৬৬:
আবু মূসার বর্ণনা মতে নবী (দঃ) বলেছেন: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই ত্রুটিমুক্ত কিন্তু নারীদের মধ্যে কেউ-ই ত্রুটিমুক্ত নয়, কেবল ইমরানের কন্যা মেরী এবং ফারাওয়ের স্ত্রী আয়েশা ছাড়া”।

হল? একেবারে সাফ কথা। এ কথার পর কি আর কিছু বলার থাকতে পারে, না বলা উচিত? এর পরেও আবার যদি গোদের ওপর বিষফোঁড়া গজায়, ইসলাম যদি পতিদেবতাকে ওপরে তুলতে তুলতে একেবারে আশমানী পাতি-দেবতা করে তোলে, তবে নারী তো পুরুষের পায়ের তলায় পিষে যাবেই, তার জন্মগত মানবাধিকার তো লেজ তুলে পালাবেই।

প্রমাণ দেখাচ্ছি সুনান আবু দাউদ হাদিস থেকে; বই ১১ হাদিস নম্বর ২১৩৫:
কায়েস ইবনে সা’দ বলছেন, ‘‘নবী (দঃ) বললেন: “আমি যদি কাউকে কারো সামনে সেজদা করতে বলতাম, তবে মেয়েদের বলতাম তাদের স্বামীদের সেজদা করতে। কারণ আল্লাহ স্বামীদের বিশেষ অধিকার দিয়েছেন তাদের স্ত্রীদের ওপরে”।

গ্রাম-গঞ্জের কোটি কোটি অশিক্ষিত মুসলিম পুরুষ আর কিছু না বুঝুক, আল্লার দেয়া এই ‘‘বিশেষ অধিকার’’ ঠিকই বুঝেছে, আর তার ঠ্যালায় মেয়েদের যে কি অপমান আর নৃশংস অত্যাচার সইতে হয়েছে শতাব্দী ধরে, তা ঠিকমত উপলব্ধি করলে অশ্রু সামলানো যায় না।

এ ঘটনাটা ঘটেছিল হিন্দু ধর্মের বইতেও। হিন্দুরা তো তাদের মহাপুরুষদের অক্লান্ত চেষ্টায় সে নরক থেকে বেরিয়ে এসেছে, শুধু আমরা মুসলমানরাই এখনো চোখে সর্ষে ফুল দেখে দেখে ভির্মি আর খাবি খেয়ে চলেছি এ অন্ধকুপের ভেতর। মেয়েদের আর্তনাদ শুনছি আর সাম্যের বক্তৃতা শুনছি। অবশ্যই, অবশ্যই!

সে কথাগুলো হল: পুরুষ নারীর ওপরে কর্তা, উত্তরাধিকারে পুরুষ নারীর দ্বিগুন পাবে, আর্থিক লেনদেনে নারীর সাক্ষ্য পুরুষের অর্ধেক, ইত্যাদি ইত্যাদি।

নারীরা হল ভূমি এবং ক্রীতদাসী সদৃশ্য—এও কি বলে দিতে হবে?দেখুন কোরান শরীফ
সুরা বাকারা, আয়াত ২২৩ (২:২২৩):
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শষ্যক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর।

এ কথার মানে কি? ‘শষ্যক্ষেত্র’ কথাটার মানেই হল, মেয়েদের বিছানায় টেনে নিয়ে যাও, আর ‘চাষ কর’, ‘শষ্য’, অর্থাৎ বাচ্চা পয়দা করার জন্য। ছিঃ! কোন ধর্মগ্রন্থ যে নারীদের নিয়ে এমন অবমাননাকর শব্দ উচ্চারণ করতে পারে তা কল্পনা-ই করা যায় না। আর ‘ব্যবহার কর’ কথাটার মানেই বা কি? মেয়েরা কাপড়, না জুতো যে ব্যবহার করতে হবে? এর পরেও কোরানে পুরুষের জন্য মেয়েদের ‘উপভোগ কর’, ‘সম্ভোগ কর’ এ ধরণের কামুক কথা বার্তা প্রচুর আছে। আর বেহেশতের তো কথাই নেই।

সুরা আল-ওয়াক্বিয়াতে (সূরা ৫৬: ৩৫-৩৭) মেয়েদের নানারকম উত্তেজক বর্ণনার পর বলা হল:
আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী, কামিণী, সমবয়স্কা।

এদিকে বেচারা অনুবাদকের হয়ে গেল মহা মুশকিল। রমণীর সাথে রমণের লোভটাই সবচেয়ে আকর্ষনীয়, কিন্তু একবার রমণ হয়ে গেলে রমণীর পক্ষে চির কুমারী থাকাটাও অসম্ভব। কি করা যায়! অনেক ভেবে চিন্তে মাথা চুলকে তিনি ব্যাখ্যার অংশে লিখলেন: জান্নাতের নারীদের এমনভাবে সৃষ্টি করা হবে যে, প্রত্যেক সঙ্গম-সহবাসের পর তারা আবার কুমারী হয়ে যাবে (পৃ-১৩২৭, কোরাণের বাংলা অনুবাদ মওলানা মুহিউদ্দীইন খান)।শুধু তাই নয় ঐ একই পৃষ্ঠায় লিখা হয়েছে: এছাড়া শয্যা, বিছানা ইত্যাদি ভোগবিলাসের বস্তু উল্লেখ করায় নারীও তার অন্তর্ভুক্ত আছে বলা যায়। অর্থাৎ নারী শুধু শয্যা ও লাঙ্গল করার ভূমি মাত্র।
শাব্বাশ!

এইসব কথা বলার পরে প্রচুর মিষ্টি মিষ্টি কথা কিংবা ‘আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক’’’ এসব বলে কোনই লাভ হয় নি, মুসলমান মেয়েরা চিরকাল পিষে গেছে পুরুষের পায়ের নীচে।

এগুলোই হল প্রথম পাঠ। এবার আসা যাক দীর্ঘ আলোচনায়।

২য় পর্ব

নারীরা যে একেবারেই নিকৃষ্ট তা কি বলার অপেক্ষা রাখে?
এবার শুরু করা যাক বিস্তারিত আলোচনা।

সুরা বাকারা, আয়াত ২২৮ (২:২২৮):
আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের ওপর, নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।


এই হল শুরু। পরস্পরের ওপর এই অধিকারটা যে কত প্রকার ও কি কি, তা পরিষ্কার করে পুরো কোরানের কোথাও কিচ্ছু বলা হল না বটে, কিন্তু শ্রেষ্ঠত্বটা ঠিকই খামচে ধরল পুরুষ, একেবারে চিরকালের জন্য। যাহোক, মেয়েদের যে অধিকার বলে একটা পদার্থ আছে, তার স্বীকৃতি একটুখানি হলেও পাওয়া গেল এখানে। পয়গম্বর হয়ত চেষ্টা করেছিলেন মেয়েদের কিছুটা হলেও অধিকার দিতে, কিন্তু সম্ভবত: সেই বেদুঈন পুরুষদের শত শত বছরের প্রতিষ্ঠিত একচেটিয়া ক্ষমতার সমাজে উল্টো প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনায় তিনি এ ব্যাপারে ধুম ধাড়াক্কার কোন বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নিতে চান নি।

এবারে সুরা নিসা, আয়াত ৩৪ (৪:৩৪):
পুরুষরা নারীর উপর কর্তৃত্ব শীল। এ জন্য যে আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাজত যোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাজত করে। আর যাদের মধ্যে আবাধ্যতার আশংকা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করোনা।

না, আর কোন রাখা-ঢাকা নেই, পুরুষের কর্তৃত্বশীলতা বলেই দেয়া হল এখানে। যে কর্তৃত্ব করে, আর যার ওপরে কর্তৃত্ব করা হয়, এ দু’জন কখনো সমান হয় না, হতে পারে না। পুরুষকে কোরান এ কর্তৃত্ব দিল স্পষ্ট ভাষায় সম্ভবতঃ টাকা-পয়সার এবং শারীরিক শক্তির কারণেই। কিন্তু শারীরিক শক্তি কোন যুক্তিই হতে পারে না। তাহলে আফ্রিকার জঙ্গলের গরিলাই হত মহান আশরাফুল মাখলুকাত, সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। কিংবা হাতী বা তিমি মাছ। টাকা-পয়সার ব্যাপারটা তখনকার সমাজে হয়ত ঠিকই ছিল, কিন্তু আজকে?

আজকের পৃথিবীতে বহু মেয়েই উপার্জনক্ষম, বহু মেয়ের উপার্জনেই সংসারে বাপ-ভাইয়ের মুখে অন্ন জুটছে, বহু স্ত্রীর উপার্জন স্বামীর চেয়ে বেশী, পিতৃহারা বহু সন্তানই মানুষ হচ্ছে শুধুমাত্র মায়ের উপার্জনেই। তা ছাড়া প্রহার করা তো সাংঘাতিক একটা মানসিক অপমানও বটে। যে অধিকার একটা ভালো লোককেও রাগের মুহূর্তে পশু বানিয়ে দিতে পারে, কোন বেহেশতি ধর্ম তেমন একটা বিপদজনক অধিকার কাউকে কেন দেবে? বৌ বেচারাদের টাকা-পয়সা উপার্জনের সুযোগই দেয়া হয়নি, তাদের খাওয়া-পরার জন্য স্বামীর ওপরে চিরকাল নির্ভরশীল করে রাখা হয়েছে, সেজন্য? তাহলে যেসব স্বামীরা বৌয়ের উপার্জনে খায়, তারা কি বৌয়ের হাতে মার খাবে? এ অন্যায়টা কিন্তু কোন কোন মওলানার মাথায় ঠিকই ঢুকেছে। তাই কোরানের কোন কোন অনুবাদে আপনি দেখবেন ‘প্রহার কর’ কথাটার সাথে ব্র্যাকেটের ভেতর ‘আস্তে করে’ কথাটা ঢোকানো আছে। মানেটা কি? ‘আস্তে করে প্রহার কর’ – কথাটার মানেটাই বা কি? এ কি সেই ছোটবেলার পাঠশালার পণ্ডিত মশাইয়ের ধমক: অ্যাই! বেশী জোরে গণ্ডগোল করবি না! গণ্ডগোলের আবার আস্তে-জোরে কি?

আসলে ওটা হল অনুবাদকের কথা, কোরানের নয়। প্রায় সবগুলো অনুবাদেই আল্লার কথার সাথে সু প্রচুর ব্র্যাকেটের মধ্যে অনুবাদকের অবারিত লম্বা নাকটা ঢুকে আছে। এদিকে প্রত্যেকটি অনুবাদ বইতেই কিন্তু মস্ত একটা তফসির, অর্থাৎ ব্যাখ্যার অংশ আছে। তোমার যা বলার সেটা ব্যাখ্যার অংশে বল না কেন বাপু! অনুবাদের মধ্যে নিজের কথা ঢোকানোর অধিকার তোমাকে কে দিল? তা নয়, ভাবখানা এই যে আস্তে করে, কথাটা যেন কোরানের-ই কথা। কিন্তু মানুষ কি গাধা? আস্তে করে ‘ছোট্ট কলমই শাক দিয়ে কি প্রহার কর’ বলে বিরাট কুমীরটা ঢাকা যায়? যায় না। এ প্রহার সকাল-বিকাল দিন-রাত চললেও কোন অসুবিধে নেই কারণ সে ব্যাপারে কিছুই বলা হয়নি। আর, বৌকে পিটিয়ে স্বামী যাতে মনে মনে অপরাধ বোধে না ভোগে, তার ব্যবস্থাও স্পষ্টভাবে দেয়া আছে হাদিসে।

সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১৪২:
ওমর বিন খাত্তাব বলেছেন: নবী (দঃ) বলেছেন, “কোন স্বামীকে (পরকালে) প্রশ্ন করা হবে না কেন সে বৌকে পিটিয়েছিল”।

কি সাংঘাতিক ধর্মীয় সমর্থন, কল্পনা করা যায়? এ-ই হল সেই নির্লজ্জ সমর্থন, যা শুধু বইয়ের লেখাতে সীমাবদ্ধ থাকে না, কেয়ামতের মত যা নারীর মাথায় ভেঙ্গে পড়ে। এরই শক্তিতে এই ২০০২ সালে দুবাই আদালত বিধান দিয়েছে, স্বামীরা বৌকে পেটাতে পারবে। এই সভ্য যুগে পৃথিবীর কোন দেশের আদালত এই বিধান দিতে পারে, কল্পনা করা যায়? উদ্ধৃতি দিচ্ছি:-

দুবাই, ১লা এপ্রিল। দুবাইয়ের একটি আদালত রবিবার এক রায়ে স্বামীদের বৌ পেটানোর অধিকার দিয়েছে। দুবাই কোর্ট অফ ক্যাসেশনের রায়ে বলা হয়, ‘স্ত্রীদের নিয়ন্ত্রণ’ (নিয়ন্ত্রণে?) রাখতে স্বামীরা তাদের মারধর করতে পারবে। তবে মারধরের মাধ্যমে স্ত্রীদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা ক্ষত সৃষ্টি করা যাবে না’’। সূত্র:- দুবাই থেকে প্রকাশিত দৈনিক গাল্‌ফ নিউজের বরাতে টরন্টো থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দেশে বিদেশে, ৪ এপ্রিল, ২০০২। টরন্টোর ‘নমস্তে ক্যানাডা’ পত্রিকাতেও এ খবর ছাপা হয়েছে।

এখন বলুন, ইসলামে নারীর এ কেমন মর্যাদা? এর পরে আপনি বৌ-পেটালে আপনাকে ঠেকিয়ে রাখার মত বাপের ব্যাটা দুনিয়ায় পয়দা হয় নি, হবেও না। সাধারণ মুসলমানেরা বৌ পেটায় না, সে শুধু মানুষের স্বাভাবিক মানবতা। কিন্তু তাহলে মেয়েদের বানানোই বা হল কেন? শস্যক্ষেত্রে শুধু চাষ করে ফলানো ছাড়াও এ ব্যাপারে হাদিস কেতাবে কি বলছে তা পরীক্ষা করার আগে খোদ কোরান শরীফ কি বলছে তা দেখা যাক।

সুরা আল আরাফ আয়াত ১৮৯ (৭:১৮৯), এবং সুরা আর রূম আয়াত ২১ (৩০:২১):
যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি মাত্র স্বত্বা থেকে। আর তার থেকেই তৈরী করেছেন তার জোড়া, যাতে তার কাছে স্বস্তি পেতে পারে। ‘‘তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক।

হাওয়ার আগে যে আদম সৃষ্টি হয়েছে, তা সবাই জানে। উপরের আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা গেল কে কার জন্য সৃষ্টি হয়েছে এবং কি জন্য সৃষ্টি হয়েছে। পুরুষের শরীরের সাথে ম্যাচ করেই যে নারীর শরীর বানানো হয়েছে, সেটা ও কোন কোন পুরুষ পন্থী ইসলামী চিন্তাবিদ বলতে ছাড়েন না। জব্বর বিশ্লেষণ বটে। এ বিশ্লেষণে নারী এ জীবনে শুধু বিছানার যৌবন আর বেহেশতে অতি অপূর্ব বাহাত্তর হুরীর শরীরের উত্তপ্ত প্রলোভন। সেখানে নারী মমতার সাগর মা নয়,স্নেহময়ী বোন নয়, প্রেমময়ী স্ত্রী নয়,জ্ঞানী শিক্ষয়িত্রী নয়, সক্ষম নেত্রী নয়, সে শুধু যৌবনের কামুক উন্মাদনা ছাড়া আর কোন কিছুই নয়।

সাধারণ মেয়েরা স্বামীর ইসলামী-পিট্টি খাবে, তা না হয় হল। কিন্তু অসাধারণ নারীরা?

এক নির্ভুল সত্য: শারিয়া হয়েছে পুরুষদের স্বার্থে—
ইসলামে শারিয়া বলে একটা কথা আছে, যা কিনা হল ইসলামী আইন। এ আইন মেয়েদের আর অমুসলমানের জন্য এতই বে-আইন যে তা দু এক কথায় বলে শেষ করা যাবেনা। অমুসলমান খুন করলে মুসলমানের মৃত্যুদণ্ড হবেনা। সাত-সাতটা বিষয়ে মেয়েদের চোখের সামনে ঘটনা ঘটলেও তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। যারা নিজের চোখে ধর্ষণ দেখেছে, এমন চার জন বয়স্ক মুসলমান পুরুষের সাক্ষ্য আদালতে পেশ না করতে পারলে ধর্ষিতার কপালে জুটবে পাথরের আঘাতে মৃত্যুদণ্ড (বিবাহিতা হলে) অথবা চাবুকের আঘাত (অবিবাহিতা হলে)। এইসব হল শারিয়ার আইন-কানুন, এতই উদ্ভট যে বিশ্বাস করাই মুশকিল। এ বইয়ের অন্য জায়গায় বিস্তারিত বলা আছে এ ব্যাপারে, প্রমাণ সহ।

এমনিতে কলমা-নামাজ-রোজা-হজ্ব-জাকাত, ইসলামের এই হল পাঁচটা স্তম্ভ, নবীজির দিয়ে যাওয়া। এর পরেও শারিয়া কি করে যেন ইসলামের অঘোষিত ছয় নম্বর স্তম্ভ হয়ে, ইসলামের অংশ হয়ে বসে আছে?

উত্তরাধিকারে মেয়েরা তো পুরুষের অর্ধেক বটেই, টাকা-পয়সার লেনদেনেও শারিয়াতে মেয়েদের সাক্ষী হল পুরুষের অর্ধেক। সাক্ষীতে কেন অর্ধেক? কারণ তারা ভুলে যেতে পারে। আর পুরুষ? না, পুরুষ হল যেন কম্পিউটার, কোনদিন কোনই ভুল সে করতেই পারে না!

চলুন দেখি এবার কোরান শরীফ, সুরা বাকারা, আয়াত ২৮২ (২:২৮২):
যখন তোমরা কোন নির্দিষ্ট সময়ের জন্যে ঋণের আদান প্রদান কর, তখন তা লিপিবদ্ধ
করে নাও এবং তোমাদের মধ্যে কোন লেখক ন্যায়সঙ্গত ভাবে তা লিখে দেবে;
….. দু’জন সাক্ষী কর, তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে। যদি দু’জন পুরুষ না হয়, তবে একজন পুরুষ ও দু’জন মহিলা। ঐ সাক্ষীদের মধ্য থেকে যাদেরকে তোমরা পছন্দ কর – যাতে একজন যদি ভুলে যায়, তবে একজন অন্যজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।

ব্যস, হয়ে গেল। উত্তরাধিকারে বোন ভায়ের অর্ধেক পাবে এটা তো আছেই, তার ওপরে দু’জন নারীকে সাক্ষী হবার ব্যাপারে এই যে এক পুরুষের সমান করা হল, এটা হাদিসে আইনে পরে বাড়তে বাড়তে একেবারে এমন স্বর্গে পৌঁছে গেল যে এখন ইউনিভার্সিটি-কলেজের ছাত্রীবাসে পাঁচিল টপকে ঢুকে আপনি ডজন ডজন ছাত্রীর সামনেই অতি স্বচ্ছন্দে পছন্দসই কোন আসরার সর্বনাশ করে আসতে পারেন, এবং কোর্টকে কাঁচকলা দেখিয়ে হাসতে হাসতে বেরিয়ে যেতে পারেন।

কারণ? কারণ, ইসলামী আইন অনুযায়ী চারজন মুসলমান পুরুষের চাক্ষুষ সাক্ষী পাওয়া যাবেনা। আর, মেয়েদের সাক্ষী তো নৈব নৈব চ’, তা তিনি ইন্দিরা-হাসিনা-খালেদা হলেও। কি সাংঘাতিক কথা, মেয়েদের কি সাংঘাতিক অপমান, তাই না? বিশ্বাস হচ্ছে না তো? জানি। দেখতে চান দলিল? এ বইয়েরই ইসলামী আইন অধ্যায়ে দেখানো আছে সব, দলিলের আতা পাতাও দেয়া আছে। বটতলার মোল্লা-মুন্সীর নয়, একেবারে বাঘের ঘরের ইসলামী দলিল, পোকায় খেয়ে যাবে তার বাপের সাধ্যি নেই। এরপরেও দরকার হলে ফ্যাক্স নম্বর পাঠাবেন, ফ্যাক্স করে পাঠিয়ে দেব। তার পরেও যদি কোন কাঠমোল্লা তেড়ে আসে, শুধু জিজ্ঞাসা করবেন, পাকিস্তানের জাফরান বিবি, নাইজেরিয়ার আমিনা লাওয়াল কুরামীর কেইস টা কি বলুন তো? এ গুলো তো মধ্যযুগের নয়, এসব এই দু’হাজার এক সালের ইসলামী কোর্টের ঘটনা। দেখবেন, জোঁকের মুখে নুন আর হুঁকোর পানি দু’টোই একসাথে পড়েছে, কাঠমোল্লা বাবাজী প্রচণ্ড গুস্‌সায় দ্বিগুণ বেগে তসবী ঘোরাতে ঘোরাতে অতিবিলম্বে সবেগে উল্টো পথে হাঁটা ধরেছেন।

একটু মস্করাই হয়তো করছি, কিন্তু বড় দুঃখেই করছি। হাজার হলেও ধর্মটা আমারই, এর মধ্যে এত অন্যায়ের, এত নিষ্ঠুরতার লজ্জা আমি রাখব কোথায়? নবী করিমের হাদিসেই দেখুন:

সহিহ্‌ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩০:
আবদুল্লা বিন ওমর বলেছেন, আল্লাহর নবী বলেছেন যে তিন জিনিসের মধ্যে অশুভ আছে, নারী, বাড়ী আর ঘোড়া।

সহিহ্‌ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন, নবী বলেছেন যে আমার পর পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছু রইল না।

দেখলেন? আরও দেখাচ্ছি। এক সহিহ্‌ হাদিসই যথেষ্ট, তবু এ হাদিস আছে সহিহ্‌ মুসলিম বই ১, হাদিস ১৪২ নম্বরেও। বর্ণনা দিচ্ছি:

সহিহ্‌ বোখারি, ভলুম ১, হাদিস ৩০১:
আবু সাইদ আল খুদরী বলেছেন:- একদিন নবী (দঃ) ঈদের নামাজের জন্য মাসাল্লাতে গিয়েছিলেন। সেখানে কিছু নারীদের সামনে দিয়ে যাবার সময় তিনি বললেন, “তোমরা সদকা দাও, কেননা আমি দোজখের আগুনে বেশীর ভাগ নারীদেরই পুড়তে দেখেছি”। তারা বলল:-“এর কারণ কি, ইয়া রসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন:-“তোমরা অভিশাপ দাও এবং তোমাদের স্বামীদের প্রতি তোমরা অকৃতজ্ঞ। ধর্মে আর বুদ্ধিতে তোমাদের চেয়ে খাটো আমি আর কাউকে দেখিনি। একজন বুদ্ধিমান সংযমী পুরুষকে তোমাদের কেউ কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে”। তারা বলল:- “ইয়া রসুলুল্লাহ! ধর্মে আর বুদ্ধিতে আমরা খাটো কেন?” তিনি বললেন: “দু’জন নারীর সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সমান নয়?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি সত্যি নয় যে মাসিক-এর সময় নারীরা নামাজ এবং রোজা করতে পারে না?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল ধর্মে ঘাটতি”।

অবাক হচ্ছেন,পাঠক? এ তো সবে শুরু। নারী আর উটের মধ্যে তফাতটাই বা কি?

দেখা যাক এ ব্যাপারে সুনান আবু দাউদ কি বলছে।

সুনান আবু দাউদ ১১ খণ্ড, হাদিস ২১৫৫:
আবদুল্লা বিন আম’র বিন আ’স বলছেন: ‘নবী (দঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ দাস-দাসী কিনলে বা বিয়ে করলে তাকে বলতে হবে- ও আল্লাহ! আমি এর স্বভাব চরিত্রে ভালো কিছুর জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করি। আর এর চরিত্রের মন্দ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি। কেউ উট কিনলেও তাকে উটের কুঁজো ধরে এ কথা বলতে হবে”’।

মাতৃত্ব হল মানবজীবনের সর্বপ্রধান সম্পদ। এর চেয়ে বড় আশীর্বাদ মানুষ কল্পনাই করতে পারে না। এই মাতৃত্বের জন্যই স্বাভাবিকভাবে মাসিকের আয়োজন করেছে প্রকৃতি। অথচ এই একান্ত স্বাভাবিক ব্যাপারটাকে সমস্ত পুরুষতন্ত্র চিরটা কাল এত নিষ্ঠুর ভাবে মেয়েদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে যে ভাবলে অবাক হতে হয়।

হিন্দু (সনাতন)ধর্মে তো কথাই নেই, ইসলামেও মাসিককে ‘রোগ’ বা ‘নোংরামি’ হিসেবে দেখিয়ে মেয়েদের একেবারে অপবিত্র এবং খুঁতযুক্ত বানিয়ে ফেলা হয়েছে। ওই সময়টায় তারা যে ‘নোংরা’, তা বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয়েছে। কোরানের সুরা বাকারা,আয়াত ২২২ (২:২২২) এবং সহিহ্‌ বোখারি ভল্যুম ৩, হাদিস নম্বর ১৭২-এ একথা স্পষ্ট লেখা আছে। তাই মুসলমান মেয়েদের ওই অবস্থায় ইসলাম নামাজ-রোজা করতে বা কোরান পড়তে দেয় না। মাতৃত্বের জন্য মেয়েদের কেন এ রকম কঠিন মূল্য দিতে হবে? মাসিকের অবস্থায় কি এমন তাদের মানসিক ঘাটতি হবে যে তারা বিরাট জটিল ব্যবসা চালাতে পারবে, বিচারক হয়ে কয়েদীদের জেল দিতে পারবে, খুনিকে মৃত্যুদণ্ড দিতে পারবে, কিন্তু উপাসনা-আরাধনা করতে পারবে না? মেয়েদের বিরুদ্ধে এটা একটা হীন চক্রান্ত ছাড়া আর কি?

এহেন নারীকে ইসলাম কি কোন দেশের রাষ্ট্রপতি অথবা প্রধান মন্ত্রী হতে দেবে?

পাগল আর কি! তাই কি হয়?

সহিহ্‌ বোখারী ভল্যুম ৫,৭০৯:
সাহাবী আবু বাক্‌রা বলছেন, নবী (দঃ) বলেছেন যে, যে জাতি নারীর ওপরে নেতৃত্ব দেবে, সে জাতি কখনো সফলকাম হবে না।


মাঝে মাঝে মনে হয়, মেয়েরা কি এমন অন্যায়-অপরাধ করেছে যে জীবনের প্রতি পদে তাদের এত অপমান, অবজ্ঞা আর অত্যাচার সহ্য করতে হবে? পৃথিবীর যত দার্শনিক-বৈজ্ঞানিক-মহাপুরুষ এমনকি নবী-রসুলকে পেটে ধরেনি তারা? মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করে জন্ম দেয় নি তারা? পৃথিবীর যত খুন-জখম দাঙ্গা-হাঙ্গামা সব তো পুরুষই করেছে এবং করে চলেছে। আশ্চর্য! যত শিক্ষিতাই হোক, যত আলোকিত উদার মনাই হোক, যত মেধাবী-বুদ্ধিমতীই হোক, জ্ঞান-বিজ্ঞানে যত প্রাজ্ঞই হোক, মেয়ে হলেই তার আর রক্ষা নেই, সর্বগ্রাসী পুরুষ তন্ত্র ইসলামের অন্ধকার কারাগারে তাকে আবদ্ধ করে রাখবেই। আর তার মাথাটা এমন মোহন ভাবে ধোলাই করে দেবে যে সে মেয়ে নিজেই সেই কারাগারে বসে বেহেশতের স্বপ্ন দেখবে, বেরোতেই চাইবে না সেখান থেকে যেখানে তাদের অপমান করতে করতে একেবারে শয়তান বলা হয়েছে।

অসহ্য! দেখুন:

সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩২৪০:
জাবির বলেছেন: আল্লাহর নবী (দঃ) একদিন এক স্ত্রীলোক দেখে তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে এলেন, সে তখন একটা চামড়া পাকা করছিল। তিনি তার সাথে সহবাস করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের কাছে গিয়ে বললেন, নারী শয়তানের রূপে আসে যায়। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নারীকে দেখলে নিজের স্ত্রীর কাছে যাবে, তাতে তার মনের অনুভূতি দুর হবে।

আশ্চর্য লাগে এই ভেবে যে, ইসলাম পুরুষদের ভেবেছে কি? ইসলাম ধরেই নিয়েছে আমাদের পুরুষদের শিক্ষা দীক্ষা নৈতিক বোধ বলতে কিছুই নেই, আমরা পুরুষেরা নারী দেখামাত্র একেবারে উন্মাদ বামা ক্ষ্যাপা হয়ে কাপড় চোপড় খুলে তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ব। নারীর সাথে সাথে আমাদের পুরুষদেরই বা এভাবে অপমান করার অধিকার ইসলামকে কে দিল?

ইমাম গাজ্জালীর মত বুলন্দ সুউচ্চ ধর্মনেতা ইসলামের ইতিহাসে বেশী নেই। তিনি যে শুধু ইসলামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক তা-ই নয়, বহু বহু মওলানার মতে তাঁর স্থান স্বয়ং নবী (দঃ) এর পরেই। এ হেন শ্রেষ্ঠ দার্শনিকের লেখা এহিয়া উলুম আল দীন বইতে তাঁর যে উগ্র নারী-বিদ্বেষী চেহারা আছে, তা সারা পৃথিবীর মানুষের জন্য জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দু’একটা দেখাচ্ছি।

এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৬৭:
শয়তান নারীকে বলে: তোমরা আমার সৈন্যদলের অর্ধেক। তোমরা আমার অব্যর্থ তীর। তোমরা আমার বিশ্বস্ত। আমি যা চাই তা তোমাদের মাধ্যমে হাসিল করি। আমার অর্ধেক সৈন্য হল কামনা, বাকি অর্ধেক হল ক্রোধ।

একই বই, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৭০-৩৭১ থেকে:
সাইদ ইবনে জুবায়ের বলেছেন, শুধুমাত্র দেখেই দাউদ (দঃ) এর মনে বাসনার উদ্রেক হয়েছিল। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে (সুলায়মান দঃ) বললেন:- হে পুত্র! সিংহ বা কালো-কোবরা সাপের পেছনে হাঁটাও ভাল, তবু কোন নারীর পেছনে হাঁটবে না। নবী (দঃ) বলেছেন:-“নারীর প্রতি কামনার চেয়ে পুরুষের জন্য বেশী ক্ষতিকর কিছু আমি রেখে যাচ্ছি না”।

একই বই ভল্যুম ২,পৃষ্ঠা ৩৭৩:
স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় কম থাকতে হবে নতুবা সে তাকে অবজ্ঞা করবে: বয়স,শারীরিক উচ্চতা, ধন সম্পদ, এবং বংশগৌরব। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় বেশী থাকতে হবে:- সৌন্দর্য, চরিত্র, আদব-কায়দা, এবং ধর্মে মতি।

কি লজ্জা, কি লজ্জা! মা-বোনদের সামনে আমাদের লজ্জার আর অবধি রইল না। ওহ! পাঠক! আমাদের মা-বোন কন্যা-স্ত্রীরা যে আমাদের জন্য এত বড় অভিশাপ আমরা তো তা জানতামই না! এখন তাদের নিয়ে কি করা যায় বলুন তো? সবগুলো মেয়েদের ধরে ধরে নিয়ে জেলখানায় পুরে দেব? সে জন্যই বোধ হয় পর্দার নামে আপাদমস্তক ঢাকা বোরখার জেলখানা চালু হয়েছে। পৃথিবীর আর কোন ধর্মে এ উন্মাদনা নেই। তাই বুঝি মোল্লা নন্দ কবি বলেছেন:- “মাথা থেকে পা ঢাকা কাপড়ের বস্তায়, ঘুলঘুলি চোখে ভুত চলছে যে রাস্তায়”।

তৃতীয় পর্ব এখানে

চতুর্থ পর্ব এখানে

ইহা একটি কপি পেস্ট পোস্ট
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×