somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্বাধীনতা অর্জনের চাইতে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন, এই কথাটি আমাদের কতোবার মনে করিয়ে দিতে হবে?

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দেখে কয়েকটা বিষয় বলা প্রয়োজন মনে হচ্ছে:

১. ইসলামী জঙ্গীদের বিশ্বে ‘টেরোরিস্ট’ নামে আখ্যায়িত করা হয়। এর পেছেন কারন সুনির্দিষ্ট। রাজনৈতিক কিংবা প্রভাব বিস্তারের দন্দ্বে ইসলামিস্টরা ‘আতঙ্ক’ বা ভীতি প্রদর্শন কিংবা ভয়ের আবহ সৃষ্টিতে পারঙ্গম। এই আবহ সুস্থ ও মুক্ত চিন্তাকে কণ্ঠরোধ করার মাধ্যমে যে বদ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করে, তার ভেতরেই ধর্মের মতো কুপমন্ডুকতার চাষবাস চলতে থাকে। আপনি ধর্মের বুজরুকি নিয়ে ফাঁস করে দেবেন, আর ধর্মের পান্ডাদের হাতে নিগৃহীত হবার সম্ভাবনা দেখা দেবে না, এটা তো হতে পারে না।

২. কিছুদিন আগেও মুক্তমনা কিংবা নিধার্মিকদের সরব কণ্ঠ প্রতিধ্বণি করতে ফিরতো পুরো বাংলা ব্লগস্ফিয়ার জুড়ে। বদ্ধতার পাঁশ থেকে মুক্ত হয়ে তরুণ প্রজন্ম যখনি সংস্কৃতি, সংগীত, কলা ইত্যাদি মননশীল কর্মকান্ডে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে শুরু করেছে, মর্যাদার অধিকার আদায়ে চার দশক প্রাচীণ গনহত্যার বিচার চাইবার শক্তি অর্জন করেছে, ঠিক তখনি, তরুণ সমাজের ওপর নেমে এসেছে ধর্মীয় নির্মমতা। রাজীব হায়দার নিহত হলেন আততায়ীর হাতে, হত্যার পদ্ধতিতে যার উৎস পরিষ্কার বুঝতে পারি আমরা। বাকি ব্লগারদেরও হত্যা করবার নির্দেশ আসতে লাগলো, ধার্মিক/নাস্তিক নির্বিশেষে, সত্য কথা সহজ করে বলবার ‘অপরাধে’ এদের জীবন আজ হুমকির সম্মুখীন। ধর্ম এখানে মোটেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

৩. আজকে মাহমুদুর রহমান যা করেছে, তা নতুন কিছু নয়। ব্লগ অঙ্গনে যখন ছাগুদের সাথে আমাদের টক্কর হতো, সে সময়েও তাদের চরিত্র একই রকম ছিলো। সেই টক্কর ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও তাদের চেঁচামেচি, মিথ্যের ওপর ভিত্তি করে জাল বানানো, সবই মিলে যায়। আজকে মাহমুদুরের এসব বালছাল লেখার পেছনে তখনকার ছাগুপালের যোগাযোগ রয়েছে, এটা পরিষ্কার। কাজেই সেই ছাগুপালের হোতাদের ধরে ডলা দিলেই বের হয়ে আসবে সত্যিগুলি।

৪. সউদি ধর্মের প্রচারণার পাশাপাশি সউদি এজেন্ট ছাগুদের কর্মকান্ডে যখন মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালীর ইতিহাস, বঙ্গবন্ধু, বীরাঙ্গনাদের নিয়ে হীন বক্তব্য প্রকাশ পেতো, তারা আক্রমণ করতো নীচতার সাথে, সউদি এজেন্টদের আক্রমনের একমাত্র অস্ত্র ছিলো তাদের তথাকথিত মহাপুরুষের চরিত্রের 'আপত্তিকর' দিকগুলির প্রকাশের মাধ্যমে তার 'মহাপুরুষত্ব' ফ্যাক্টরের আসল দিকটা তুলে ধরা।

৫. এটা সত্য বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডের পাকিস্তানীকরণ ধীর গতিতে এগুলেও সউদি শেখরা ব্রিটেনের অদৃশ্য সন্মতিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে ছাগুপালের বংশবৃদ্ধিতে। পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের পত্তনে যে ব্রিটিশরা দুরভিসন্ধিমূলক ভূমিকা পালন করেছিলো, আজকে ২০১৩ সালে্‌ও সেই ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতি তাদের নিজস্ব কুকুর, সউদি রাজবংশ এবং তাদের দার্শনিক পণ্য 'ইছলাম' এর বিপণনের পথ সুগম করে দিতে পাকি/সউদি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিবিধ সউদি দল এবং ছদ্ম জাতীয়তাবাদী সংগঠন বিএনপি, কিছু পতিত বাম (যারা পরিস্থিতি বুঝে সুশীলতা চোদায়) এর সাথে জোট বেঁধে বাংলাদেশকে সউদি করদ রাজ্য বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

৬. ইশ্বর, তার ওপর ব্যক্তির দার্শনিক নির্ভরশীলতা, পরকালভীতি, স্বর্গ ও নরক ইত্যকার কল্পকাহিনী একটি রাষ্ট্রের যে কি পরিমান ক্ষতি করতে পারে, তার অনেক উদাহরন আমরা দেখতে পাই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। এরকমই একটি জলন্ত নিদর্শন পাকিস্তান নামক ব্যর্থ রাষ্ট্রটি। ছোট্ট একটি নমুনা দেই, কিছুদিন আগেই ‘পোলি্‌ও টিকা ধর্মে হারাম’ হুজুগ তুলে শিশুদের পোলিও টিকার কর্মসূচী বন্ধ করে দিয়েছিলো পাকিস্তানের ধর্মান্ধ গোষ্ঠী।

৭. দীর্ঘদিন ধরে বঙ্গভূমে যে ধর্মীয় শকুন ডানা মেলে উড়ে বেড়িয়েছে নিরাপদে, আজ তাদের রক্ষাকর্তাগন যখন নিজেদের কৃত পাপে জেলহাজতে গুনছে ফাঁসির দিনগুলি, তখনই তাদের পোষা শকুন নখর বসাচ্ছে, তুলে নিয়ে যাচ্ছে, ছিঁড়ে খুড়ে খাচ্ছে আমাদের অন্তর, আঘাত করছে আমাদের মুক্তিকামী হৃদয়ে, আমাদের পতাকায়, আমাদের ভাষার স্মৃতিস্তম্ভে। সউদি সাদা আলখাল্লা পড়ে তারা আমাদের সবুজ বাংলার রাস্তাঘাট সাদা কার্পেটের মতো ঢেকে ফেলেছে। নারীদের পুরুষের অর্ধেক দাবী করা এই সউদি সংস্কৃতি আমাদের মনুষ্যত্বকে খর্ব করে ফেলে, এই সউদি এজেন্টদের সফলভাবে বাংলাদেশ দখলের সাথে সাথে আরো অনেক কিছুরই ধ্বংসপ্রক্রিয়া দেখা যাবে। মুক্তিযুদ্ধে এরা হেরে গিয়েছিলো, কিন্তু গত চার দশক ধরে এরা প্রস্তুতি নিয়েছে আজকের দিনটির।

স্বাধীনতা অর্জনের চাইতে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন, এই কথাটি আমাদের কতোবার মনে করিয়ে দিতে হবে?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×