somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি রাতের অভিজ্ঞতা

০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৯ সালে একরাতে যশোর থেকে ফেরার পথে বাসে করে বয়স্ক এক যাত্রীর সাথে আমার পরিচয় হয়। পাশের সিটেই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত দুইটার একটু পর বাস এসে ফেরিঘাটে দাড়ায়। প্রচন্ড কুয়াশায় ফেরি ছাড়তে লেট হবে। জানা গেল কুয়াসার কারণে প্রায়ই নাকি ফেরি দিক হারিয়ে ফেলে। এজন্য দীর্ঘ লাইন ধরে বাস-ট্রাক দাড়িয়ে আছে। আমি কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছি। এমন সময় লোকটা ঘুম থেকে জেগে বলল বাস এখন ছাড়বে না চলো চা খেয়ে আসি। এত রাতে চা খাই না বলার পর তিনি বললেন আমি খাবো তুমি চেয়ে দেখলেই হবে।

রাতে ফেরিঘাটে বাস থেকে নামতে হয় না। অপেক্ষমান চিনতাইকারী ভাইরা পাশেই ওঁত পেতে থাকে। সুযোগ বুঝে সব লুটে নেয় একটা ছোট্ট ছুরি দেখিয়ে। রিবালবারও থাকে আমার মনে হয় না সেটাতে গুলি থাকে। শুনেছি মলমও নাকি মেরে দেয়। এরকম কোন ঘটনা ঘটবে কিনা বুঝতে পারছি না।

এই লোকটার বডির বর্ণনা দিলে ঘটনা আঁচ করতে সহজ হবে। প্রায় সাত ফুট লাম্বা হাতি দেহি মানুষ। গন্ডারের মত কালো চামড়া। মোটা ফ্রেমের চশমার একটা বক্স তার পকেটে ছিল। লোকটা দেখতে কালো হলেও চেহরায় মিষ্টি একটা ভাব আছে। দেখতে কালো মানুষরা খুব একটা দেখতে সুন্দর হয় না কিন্তু ইনি সুন্দর ছিলেন একথা বলতেই হবে।

বয়স্ক লোকটার অনুরোধে সরলতাম মনে করে বাস থেকে নেমেছি। বাসের বাহিরে শীতের উপস্থিতি আরো বেশি। হাল্কা কাপুনি দিয়ে উঠলাম। লোকটার সাথে দোকানের দিকে এগুতে থাকলাম। হাটতে হাটতে তিনি বললেন আমাকে চেনো? আপনার বাড়ি তো যশোরে আর কি চেনার আছে? পঞ্চাশোর্ধ্ব লোকটা মৃদু হাসি অন্ধকারে ঝাপসা লাগছিল। যশোরের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে বেশ অভ্যস্ত। যশোরের এমএম কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছিল নাকি। সরকারী চাকুরিতে তার আগ্রহ ছিল না। এজন্য ব্যবসাও নাকি কিছুদিন করেছেন। তিনি ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে একথা দাবী করেছেন। অবশ্য দেখে বেশ ধনী মনে হয়েছে।

মৃদু হেসে বললেন আমি একজন ডাকাত এবং খুনি। অনেকগুলো খুন করেছি। এই যে ঢাকায় যাচ্ছি সেখানেও খুনের অর্ডার আছে। উনার কথা শুনে মনে হয়েছে বাসে ঘুমের ঘোরে এসব স্বপ্ন দেখছি!! হ্যাং হয়ে গেছি। আরে আরে… ভয় কেন পাচ্ছো বলার পর সম্ভিত ফিরে ফেলাম। একবার বাসের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত হলাম স্বপ্নে নেই আমি। চুপচাপ হাটছি এমন সময় তিনি বলে উঠলেন ভয়ের কোন কারন নেই। তোমাকে খুন করবো না। নিজেকে সামলে নিয়ে জিগাসা করলাম আপনি প্রথম খুনটা কিভাবে করলেন? উনি হাসতে হাসতে বললেন প্রথমে খুন করিনি তবে জীবন বরবাদ করে দিয়েছি।

ততক্ষনে আমরা বেশ বড় একটা হোটেলে বসলাম। উনি নাস্তার অর্ডার করলেন আমি না করলাম তবুও গরম পরটা আর ডিম সব্জি অর্ডার দিলেন। আবার জিগাসা করলাম প্রথম খুনের ব্যাপারটা তো বললেন না? উনি বলা শুরু করলেন-
বয়স্ক এক ধনী লোক একটা মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। মেয়েটা গরীব এবং প্রমান থাকা সর্ত্বেও এলাকার মানুষ ঐ লোকটার বিচার করেনি। ঘটনাক্রমে বিষয়টা আমি জানি। এও জানি গ্রামের কোচি মেয়েদের উনি রুটিন করে ধর্ষন করে। বিষয়টা মান সম্মানের ভয়ে অনেকে চেপে যায়। ঘটনার একটা ব্রেক দরকার। থানা পুলিশ করলে উনি টাক দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলবেন। কিভাবে ব্রেক দেয়া যায় দুই দিন চিন্তা করেছি। শেষে সিদ্ধান্ত নিলাম উনার লিঙ্গ কর্তনই এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান দিতে পারে। একরাতে সুযোগ বুঝে নির্জন রাস্তায় উনার বুকে লাথি মেরে ফেলে দেই। লুঙ্গি উচু করে গোড়া থেকে লিঙ্গ কর্তন করে পাশেই ফেলে রাখি। উনি ঠেকানোর চেষ্টা করার মত শক্তি পাননি। উনি চিনতে পারেননি ঘটনাটি কে ঘটিয়েছে! মেডিক্যালে ভর্তি ছিলো অনেক দিন। তার পরিবার থেকে লজ্জায় ঘটনাটি খুব একটা ছড়ায়নি। একটা সময় কিভাবে যেন জানাজানি হয়ে গেল উনার লিঙ্গ নেই। শুনেছি হিজড়া গ্রুপের লোকজনও নাকি খুব খোচাতো তাকে। আগে থেকে যারা রেগে ছিল তারাও ঐ লোকটার একটা নাম দিল। রমজানের কান না থাকলে যেমন কান কাটা রমজান বলতো। তাকেও এরকম একটা নামে ডাকতো লোকজন। খুব দ্রুতই হার্ট স্ট্রোক করে লোকটা মারা গেল। আামার মনে হয়েছে টেনশনে মারা গেছে। অনেকেই আনন্দ পেয়েছিল তার মৃত্যুতে। কিন্তু কেউ জানেনা আমিই তার লিঙ্গ কর্তন করেছি। সেই থেকে কাটা কাটির সাহস বেড়েছে। হা হা হা…… নাস্তা শেষে আবার দুটো চায়ের অর্ডার করলেন।

এটা ছিল তার প্রথম ঘটনা। শুনে খুশি হবো কিনা কনফিউড ছিলাম। কারন সামণে খুনি রেখে হাসি আসে না। বড়জোর হাল্কা হাসির ভাব ধরে থামতে হয়।

এরপর বাসে উঠে আরো কিছু খুনের ঘটনা তিনি বললেন। ঠিকঠাক মনে করতে পারলে লিখবো।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৪২
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×