somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামু ব্লগার বন্ধুদের বাড়িতে অন্তুর পদার্পন অতঃপর ... (ইহা আরেকটি কাল্পনিক রিয়েলিটি পোষ্ট)

১১ ই অক্টোবর, ২০০৯ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জ্বরটা এবার আমাকে বেশ কাহিল করে দিয়েছে, তাই প্রায় সুস্হ হয়ে উঠার পরে ভাবলাম সামুর বন্ধু ব্লগারদের বাড়ীগুলোতে একটা চক্কর দিলে মন্দ হয়না, অল্প স্বল্প আড্ডাও হয়ে যাবে সেই সাথে আন্টিরাও আমার জ্বর পরবর্তী দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার ব্যাবস্হা :P করবেন ... আগের বারের ঝটিকা সফরে গিয়েছিলাম নষ্ট মাথার দুষ্টু মেয়ে, জটিল, চানাচুর, শয়তান, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, উদাসী স্বপ্ন, মমমম১২, অন্যরকম আর বড় বিলাই, ভাইয়া / আপুদের বাসায় .... তাই এবার ভাবলাম অন্য কয়েকজনের বাড়ীতে যাওয়া যাক ... যেমন চিন্তা তেমন কাজ ... শুরু হলো আমার যাত্রা ---

====================

প্রথমেই গেলাম হাতের কাজে বিশেষ পারদর্শী খ্যাত অপসরার বাসায় ...ঈদের রান্না বান্না নিয়ে ওর দেয়া পোষ্ট টা তখনো চোখের সামনে ভাসছিল ... ভাবছিলাম ওর বাসায় ঢুকলে আর হয়তো কারো বাসায় যাওয়াই লাগবে না ... অনেক খুজে ওর বাসাটা বের করে দরজার কলিং বেল বাজাতেই স্মার্ট কেউ একজন দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলেন
--> কে আপনি , কাকে চাই ?
>> আমি অন্তু, অপসরা আছে ?
--> আপনি ঠিক কাকে চাইছেন ?
>> অপসরা কে চাইছি, ও নাই বাসায় ?
--> (কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন) তোমার পা কি মাটিতে আছে ?
>> (অবাক হয়ে নিজের পায়ের দিকে তাকিয়ে বললাম) আছে তো মনে হয়
--> অপসরা থাকে পরীর দেশে , তোমার কি মনে হয় তুমি আকাশে ভেসে পরীর দেশে এসেছ ?
>> না মানে, আসলে ...

এই মানে মানে করতে করতে আমার চোখের সামনেই অপসরার খাবারের ছবিগুলো এক এক করে মুছে যেতে লাগলো সেই সাথে ঐ বাড়ীর দরজাও একসময় অদৃশ্য হয়ে গেল ...

======================

মনে বড়ই দুঃখ পাইলাম , তাই ভাবলাম আরেক দুঃখবিলাসীর বাড়ি গিয়ে একটু দুঃখ শেয়ার করি হয়ত ভালো লাগবে ... তাই সোজা গিয়ে নক করলাম রাতমুজুরের বাড়ী ... নক করতেই সাথে সাথে দরজা খুলে সামনে হাজির হলেন আন্টি ... তাকে কিছু বলার সুজোগ না দিয়েই বললাম

>> আন্টি আমি অন্তু, রামু আছে ?
--> (আন্টি হঠাৎ ই বলে উঠলেন ) তোমার কি এইটা হিন্দি সিরিয়ালের কোন বাড়ী মনে হচ্ছে যে রামু কাকা এই বাড়ীতে থাকবে ? পোলাপাইন নষ্ট হয়ে গেল এই টিভি দেখতে দেখতে ....
>> না না আন্টি, আমি সেই রামু কাকার কথা বলিনি, আমি আসলে রাতমুজুরের কথা বলছিলাম
--> রাতমুজুর টা আবার কে ?
>> রাতমুজুর আপনার ছেলে আন্টি, ওর কথাই বলছি ...
--> বড়দের সাথে মশকরা করো ? আমার ছেলে রাতমুজুর ? সে দিনের বেলা কাজে যায় সারাদিন কাজ করে বাসায় ফেরে সে রাতমুজুর হবে কোন দুঃখে ?
>> আচ্ছা , রাতমুজুর যে আপনারই ছেলে তার একটা প্রমান দেই ?
--> দেও
>> সে প্রচন্ড রকম বিয়ে পাগলা, এইবার বলেন রামু আপনার ছেলে না ? একটু ডেকে দেন না আন্টি প্লিজ ...
--> আচ্ছা তাই ? আসো আসো ভিতরে আসো ... (এর পরে ভিতরের দিকে মুখ করে বললেন) ওরে কুদ্দুস, আক্কাস ঘটকরে জলদি খবর দে আজকেই আমি হয় আমার বেয়াড়া পোলারে বিয়ে দিবো নাইলে এই পাগলা রে ... দেখি এরা কেমনে পালায় আমার হাত থেকে ....

অতঃপর অবস্হা বেগতিক দেখে পৈত্রিক জানটা নিয়ে ওখান থেকে না পালিয়ে আর কোন উপায় দেখলাম বলেই মানে মানে কেটে পড়লাম ...

===========================

ভাবলাম... রামুর বাড়ীতে তো চরম সমস্যায় পড়লাম এবার এমন এক যায়গাতে যাই যেখানে একজন আমাকে অনেক দিন ধরেই দাওয়াত দিয়েই যাচ্ছে ... সুতরাং আপাতত নিরাপদ হোষ্ট হিসেবে বেছে নিলাম আধারে অপ্সরীর বাড়িকেই ... সেখানে গিয়ে কলিংবেল বাজাতেই আন্টি দরজা খুললেন ... বললেন

--> কাকে চাই ?
>> আন্টি আমি অন্তু .... পিচ্চি আছে বাসায় ?
--> কোন পিচ্চি ?
>> আধারে অপ্সরী পিচ্চি ....
--> দাড়াও দাড়াও, একটু ঠিক করে বলো কাকে চাচ্ছ তুমি ?
>> আন্টি আপনার ছোট মেয়ে, যার নাম আধারে অপ্সরী ওকে আমি পিচ্চি বলেই ডাকি , সে তো ......
--> আচ্ছা একটু অপেক্ষা করো আসছি আমি .... (বলেই আন্টি ঘরের ভিতরে চলে গেলেন)
আমি মনে মনে বলি যাক, এবার প্রথম বারের মতো কেউ ঘরের ভিতর থেকে কাউকে ডাকতে গেলেন, তবে একটু কান পেতে ঘরের ভিতরের কথা যা শুনতে পেলাম তার সার সংক্ষেপ হলো --- হ্যালো র‌্যাব ১০ ... ক্যাপ্টেন ***** আছেন ? একটু দেন তো উনাকে ... ভাইজান একটু জলদি আসেন তো ... আমাদের বাসায় ******

এর পরে আর মুহুর্তকাল ওখানে বিলম্ব না করে অন্তু সঠিক মুহুর্তে সঠিক সিদ্ধান্তটা নিয়েই ফেললো ....


================================

পথে চলতে চলতে হঠাৎ দেখি একজনের বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছি, তিনি আর কেউ না, আমাদের সবার পরিচিত ভেবে ভেবে বলি ... ওর বাড়িতে বেল দিতেই আন্টি বের হয়ে বললেন
--> কে তুমি, কাকে চাই ?
>> আন্টি আমি অন্তু, ভেবে ভেবে বলি ..... আছে ?
--> কার কথা বলছ ?
>> ভেবে ভেবে বলি
--> আচ্ছা ঠিকাছে, ভেবে ভেবেই না হয় বলো , কিন্তু কার কথা বলছো সেটা তও বলবে ?
>> আন্টি আমি ভেবে ভেবে ....
--> শুনো বাবা, তুমি আগে ভেবে ভেবে মনে করো কার কাছে এসেছ এর পরে আমায় বলো ঠিকাছে ?

অতঃপর অন্তু আকাশ পাতাল ভেবে ভেবে কুল কিনারা করতে না পেরে ধীরে ধীরে সেখান থেকে নিষ্ক্রান্ত হলো ....

==================================

কি করি কি করি ভাবতে ভাবতে পৌছুলাম ঘাসফুলের বাড়ী, গিয়ে দরজায় নক করার আগেই দেখি সুন্দর ফুটফুটে একটা আদুরে বাবু এসে দাড়িয়েছি আমার সামনে, ওকে বললাম
>> বাবু তোমার আব্বু বাসায় আছে ?
--> (সে বললো) কার কথা বলছেন ?
>> আমি ঘাসফুলের কথা বলছি, আছে বাসায় ? থাকলে বলো অন্তু আংকেল এসেছে

কিছুক্ষন একমনে তাকিয়ে থেকে তার উজ্জ্বল চোখ দুটোয় দুষ্টুমির ঝিলিক দেখিয়ে পিচ্চিটা আমায় বললো --> ঘাসফুলের সাথে দেখা করতে এসেছেন তাই না ?
>> হ্যা, ঠিক বলেছ ...
--> চলেন আমার সাথে (বলেই হিড় হিড় করে আমাকে টেনে নিয়ে চললো ওদের বাড়ীর পিছনে লনের দিকে , একসময় আমাকে এক জায়গায় দাড় করিয়ে বললো ) ঐ যে ঘাসের মধ্যে নানা রং এর ঘাসফুল দেখা যাচ্ছে , নেন দেখা করেন ....

এ কথা বলেই আমাকে দ্বিতীয় কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এক দৌড়ে হাওয়া হয়ে গেল ... অন্তু বেচারা বোকার মত ফ্যাল ফ্যাল করে ওর দৌড়ানোর দৃশ্য দেখা ছাড়া আর কি ই বা করতে পারে সেই মুহুর্তে ...

=========================

শেষমেষ ভাবলাম অনেক হইসে আজকের মত শেষ চেষ্টা করবো সাদা কালো এবং ধুসর আপির বাসায় ... ওর ঠিকানাটা হারিয়ে ফেলেছিলাম, তার পরেও অনেক কষ্টে ওর বাড়ীটা খুজে বের করে বেল বাজিয়ে অপেক্ষা করতে করতে দেখি আন্টি হাজির ... তিনি জিজ্ঞেস করলেন --> কাকে চাই ?
আমি বললাম >> (এবার আর নাম না বলে বললাম) আপি আছে ?
--> কোন আপি ?
>> (এবার তো আর না পেলেই বললাম) সাদা কালো এবং ধুসর ...
--> (বিষ্ফোরিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন ) কি নাম বললে ?
>> সাদা কালো ধুসর আপির কথা বলছি আন্টি ...
--> এই ছেলে কি বলছো তুমি, সাদা কালো ধুসর কারো নাম হয় নাকি, মাথা ঠিক আছে তোমার ?
>> আপনি আপি কে জিজ্ঞেস করেই দেখেন আন্টি , ওকে বললেই হবে অন্তু এসেছে
--> তবে রে, আমার মেয়ের সাথে দেখা করার ফন্দি এটেছ , আজকে তোমারে সাদা কালো ধুসর দেখা লাগবে না, আমি তোমারে লাল নীল বেগুনী বানায়ে ছাড়বো ...


এই কথা শোনার পরে অন্তুর পক্ষে আর কারো বাসায় যাওয়ার সাহস অবশিষ্ট না থাকা আজকের মতো যাত্রা স্হগিত করতে বাধ্যা হলো ... পরে কখনো অন্য কারো বাসায় যাওয়ার যাওয়ার আশা রেখে আজকের মত কল্পনার পাখাগুলো গুটিয়ে নিলো ...



৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×