somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কি কি হারিয়ে গেছে তার বিপরীতে কি পেয়েছি !!!

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি কিন্তু বেশি একটা বৃদ্ধ না। মনেও না, গায়ে গতরেও না। তাই অভিঙ্গতা সবার মত হবে না। বরং কম, বেশ কম। তবুও বসলাম লিখতে।

প্রথমে স্মার্ট ফোনের কথা বলি। এই একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইস এক সঙ্গে অনেক কিছু
দিয়েছে এবং নিয়েছে: ***যেমন***
টর্চ => ব্যাটারী টর্চের আবেদন আর নেই। দেখেছি ২-৪ ব্যাটারীর টর্চ। লুকাস/হক ব্যাটারী দিয়ে চলত।
ভিডিও দেখার সুবিধা => টিভি, ভিসিআর, ভিসিপি, ফিতার ক্যাসেটের ব্যবহার এখন আর নেই।
অডিও গান শোনা => ফিতার ক্যাসেট, ক্যাসেট প্লেয়ার, সিডি-ডিভিডির ব্যবসা, এমপিথ্রি ডিভাসের ব্যবসা ... সব এখন যাদুঘরে।
রেডিও => বড় বড় ব্যাটারী চালিত রেডিওর যুগও শেষ। আমার জন্মের আগে আব্বা ফিলিম্স রেডিও মা কে কিনে দিয়েছিল গান শোনার জন্যে। আমিও শুনেছি...
ইন্টারনেট => ১৫ বছর আগেও দোকানে দোকানে ডেস্কটপ কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টানেট সেবার ব্যবস্থা ছিল। ঘন্টায় ১৫-৪০টাকা। সেই সেবা এখন স্মার্ট মোবাইলে।
টেলিকমুনিকেশন => ল্যান্ডফোন/টেলিগ্রাম যন্ত্রগুলো এখন শুধুই ইতিহাস। আমার বাসাতেও দুটা পড়ে আছে। মোবাইলের যুগে লন্ডন বলেন আর আমেরিকা বলেন, ফোন দেয়া কোন ব্যাপার না।
গ্লোবাল মুভি দেখার সুবিধা => টিকিট কেটে ছারপোকার কামড় খেতে খেতে এখন আর সিনেমা দেখতে হয় না। তাই সিনেমা হল/থিয়েটার এখন ৪৪২ টা থেকে কমে ১৫০ টা
ক্যামেরা => রিল ক্যামেরা, হ্যান্ডিক্যাম বা ফিতার ভিডিও রেকডার... সব এখন একের ভেতর। ভিডিও ইডিটিং, টিকটক, বিংগো কি নাই ?

বাংলাদেশ জন্মের পর যা পেয়েছি:
১৯৭১ এ প্রাইমারী / মাধ্যমিকের ছাত্রছাত্রীদের ১ বছর গ্রেস ।
৭ লাখ কম্বল চুরির খেতাব ।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের অকাল প্রয়ান।
ছিয়াত্ত্বরের মন্বন্তর-দূর্ভিক্ষ।
জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোট।
১৯৮১ তে প্রথম আদম শুমারী।
সৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা চালু।
সড়ক, কৃষি ও শিল্পখাতে আমুল পরিবর্তন ও উন্নয়ন।
১৯৮৮ র স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যা।
১৯৯১ র স্বরণকালের ভয়াবহ ঘূর্নিঝড়।
পারিবারিক গনতন্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা চালু।
১৯৯৬ এ কিছু ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে যাওয়া। একটি ব্যঙ্ক বন্ধ হয়ে যায়।
লাঠি বৈঠা আন্দোলন।
মার্কিং এর পরিবর্তে গ্রেডিং শিক্ষা ব্যবস্থা চালু।
ব্যাঙের ছাতার মত কোচিং আর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির জন্ম।
২০০১ সালে রমনা বটমূলে বোমা বিস্ফোরণ। এরপর ২০০৪ এ প্রাণঘাতী ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলা।
জালিয়াতির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হবার ব্যবস্থা।
RAB এর জন্ম।
বিভিন্ন মোবাইল কম্পানির প্রচুর বিনিয়োগ। ডিজুসের সারারাত ১ টাকায় গ্রুপ কল। ৫৬০০টাকায় টেলিটকের সিম।
২০০৯ এ বিডিয়ার বিদ্রোহ। ৭২ জন সেনা সদস্যের মৃত্যু। অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সড়ক দুর্ঘটনা।
পারমানবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন। ৫০০০টাকার বালিশ কেলেঙ্কারী।
রানা প্লাজায় ১১৩৪ জনের অপমৃত্যু।
পদ্মা সেতুর জন্যে বিশ্বব্যাঙ্কের লোন না দেয়া।
রেলমন্ত্রীর থলের কাল বিড়াল কেলেঙ্কারী।
রাষ্ট্রপতি জনাব জিল্লুর রহমানের প্রয়ান।
ডিগবাজী জাফরের বারংবার ডিগবাজী। অতপর: অবসর গ্রহন।
৪০৩ জন বাঙ্গালির সুইস ব্যাঙ্কের তথ্য ফাঁস।
সমূদ্র দখল আন্তর্জাতিক বিজয়।
২০১৭ তে রহিঙ্গা ইস্যু।
ভোট ছাড়াই সাংসদ হবার পদ্ধতি।
ভারতের সাথে ৩০৩টি চুক্তি এক বৈঠকে।
কপি পেস্ট থিসিস পেপার জমা দিয়ে সামিয়া জাহানের ঢাকা বি. কেলেঙ্কারী।
২৫০০ জন বাঙ্গালীর সেকেন্ড হোমল্যান্ডে নিজের বাড়ি গাড়ি থাকার তথ্য ফাস।
জাতীয় নির্বাচনে তাহাজ্জুত ভোট পদ্ধতি।
২০২০ এর করোনা মহামারি।
বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের একাউন্ট হ্যাক । প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও।
২০২২ এ হাওড় এলাকায় সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী বন্যা।
৩৯কোটি টাকায় পদ্মা সেতুর উ্দ্বোধনী অনুষ্ঠান পালন।
ঢাকা সবচেয়ে দূষিত রাজধানীর খেতাব পাওয়া। বাংলাদেশ পাসপোর্টের মান ২ ধাপ পিছিয়ে যাওয়া।
স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি টাকা লুটপাট এবং টাকা পাচার।

আমি সর্বোনিম্ন ২০কেজি গরুর মাংস কিনেছি, এখন ৬৫০টাকা। দেশি মুরগির ডিম ৩টাকা হালি কিনেছি, এখন ৬৫টাকা। ৬-৮ টাকা লিটারের কেরোসিন কিনেছি, আর এখন ১০৯। সবচেয়ে চিকন চাল ৫টাকা দরে, যা এখন ৮০-৯০টাকা।

কেউ কেউ মন খারাপ করতে পারেন। অনেক কিছু মাথায় নেই। বড় বড় প্রকল্পরে কথা বাদ পড়ে গেছে:
১. পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, ২. ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প, ৩. পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, ৪. দোহাজারি থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে গুনদুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প, ৫. রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, ৬. মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মণি প্রকল্প, ৭. এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, ৮. কয়লাভিত্তিক রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, ৯. পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প।

উপরের পয়েন্টগুলো লিখলাম, অনেকটা স্মৃতিচারণের মত। ডিজিটাল স্মৃতিচারণ। কমেন্টে বাঁশ দেবার দরকার নেই। নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও বাকি থাকে না। দেশের ভেতরে থেকে কম বেশি সবাই আমরা অজান্তেই বাঁশ খাচ্ছি।

আমি কোন সরকারের পক্ষে বা বিপক্ষে নই। সরকার হাত বদল হলে আমার কিছু যায় আসে না। দিন আনি দিন খাই। কেউ আমাকে খাওয়ায় না। রাজনীতি এখন পেশা। এদেশে একবার জিনিসের দাম বাড়লে আর কমে না। জিনিসের দাম যত বাড়ে, মানুষের দাম তত কমে। আবেগ, ভালবাসা, মনুষ্যত্ব, দ্বায়ীত্ববোধ, সন্মান, স্বাধীনতা... সবই দিন কে দিন কমে...



বাংলাদেশ কি স্ট্যাগফ্লেশনের ফাঁদে?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×