somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে শূন্য করেছে আমায়।।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রিমা আপু আমাদের পাড়ার সবচেয়ে শেষের বাসায় থাকেন। তার সাথে আমার পরিচয়টা ভিন্ন রকম। তার বাসার সামনে আমরা বন্ধুরা মিলে খেলতাম। এক দিন আমাদের বল তাদের বাসায় ঢুকে পড়ে আমি ওই পাশে ফিল্ডিং করছিলাম তাই বল আনার দ্বায়িত্ব পড়ল আমার উপর। আমি বল আনতে ভিতরে ঢুকলাম। ভিতরে ঢুকে যা দেখি তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আমি দেখলাম অতি মাত্রায় রুপবতী একটি মেয়ে বারান্দায় বসে বই পড়ছে। এত রূপবতী মেয়ে কখনো দেখিনি। আমাকে দেখে সে বলল, কি চাই?
আমি কিছু বলতে পারলাম না। তার অপরূপ সৌন্দর্য আমাকে বিমোহিত করেছিল।
তারপর কিছু না বলে চুপচাপ বাসা থেকে বল নিয়ে বেরিয়ে আসি। এরপর বন্ধুদের কাছে জানতে পারি তিনি রিমা আপু। আমাদের চেয়ে নাকি দু বছরে বড়ো।
আমি আগে নিয়মিত খেলতে যেতাম না কিন্তু ওই দিনের পর আমি নিয়মিত খেলতে যাই এবং ঠিক ওই জায়গায় ফিল্ডিং করি। এভাবে প্রায়ই আমি রিমা আপুকে দেখতাম।
একদিন আমি কলেজে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম হঠাত পিছন থেকে একটি মেয়ে আমাকে ডাক দিল। আমি পিছনে ফিরে তাকিয়ে অবাক না হয়ে পারলাম না। রিমা আপু দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখে এক চিলতে হাসি, যে হাসি আমি এর আগে তার মুখে দেখিনি।
আমি একটু কাছে গিয়ে বললাম, জ্বি বলেন?
রিমা আপু বললেন তুমি তিসান না?
জ্বি।
এই কলেজে পড়?
হ্যা।
আচ্ছা বলতে পারো প্রশাসন ভবনটা কোন দিকে?
আমি অবাক হয়ে গেলাম আপু আমার নাম জানে কি করে? আমি হাত দিয়ে ইশারা করে প্রশাসন ভবন দেখালাম।
আপু আমাকে বললেন, যদি তোমার কোন কাজ না থাকে তাহলে আমার সাথে একটু আসবে? আমি তো আজ প্রথম এসেছি তাই খুব ভালো করে চিনতে পারছিনা।
আর আমাকে ঠেকায় কে? আমি মহাখুশি হয়ে রিমা আপুর সাথে হাটা শুরু করলাম।
আমি তখন অনার্স থার্ড ইয়ারে ছিলাম । আপু মাস্টার্সে ভর্তি হলো।
ভর্তি শেষে আপু আমাকে বলল, খুব খিধা লেগেছে চলো কিছু খেয়ে আসি।
আমি আর আপু মিলে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। আমার বার বার মনে হচ্ছিল আজই হয়ত আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা দিন। রিমা আপুর মতো এত সুন্দরী একটা মেয়ের সাথে নিজেকে ভাবতেই যেন আমার মন ফুরফুরা হয়ে উঠছিল।
খেতে খেতে রিমা আপু বলল, তিসান তুমি অনেক সুইট একটা ছেলে।
আপুর মুখে এ কথা শুনে আমি আরো খুশি হলাম। মনে ভাবলাম আমি আরো একধাপ এগিয়ে গেছি।
খাওয়া শেষে আমি আর আপু বের হলাম। আপু বলল তুমি কই যাবে?
আমি বললাম বাসায় যাব।
আপু বলল তাহলে এক সাথেই যাই। কি ভাগ্য আমার। আজ আমার কি হয়েছে। আমি আনন্দে আটখানা হয়ে যাচ্ছি।
আপু একটা রিকশা ডেকে আমাকে ঊঠতে বলল। আমি রিকশায় উঠলাম। আপু রিকশায় উঠতে গিয়ে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরল। আপুর হাত যেন কোন মেয়ের হাত নয় একদম স্বর্গের পরিদের মতো নরম।
আপু আমার গা ঘেষে রিকশায় বসল। যেতে যেতে আপুর সাথে অনেক কথা হলো। আপু আমার প্রিয় রঙ, প্রিয় খাবার, প্রিয় লেখকের কথা জানলো। আমার তখনো লজ্জা লাগছিল। বুঝতে পারছিলাম এটা কি আসলে আমার সাথে ঘঠছে?
বাসার যত কাছে এগুচ্ছি উত্তেজনা যে ততোই বাড়ছে। কারন পাড়ার অনেক সিনিওর ভাইয়েরা রিমা আপুর কাছে এসে পাত্তা পায়না আর আমি তার সাথে এক রিকশায় চড়ে যাচ্ছি।
রিকশা থেকে নেমে আমি জোর করে ভাড়া দিয়ে দিলাম। আপু বড়ো হলে কি হয়েছে দু দিন পর তো আমিই তার বি এফ হবো তখন তো আমাকেই ভাড়া দিতে হবে।
রিকশা থেকে নেমে রিমা আপু তার ব্যাগ থেকে একশো টাকার একটি নোট বের করে দিয়ে বলল, এটা রাখো ছোট ভাই। সারাদিন তুমি অনেক কষ্ট করেছ, আর জোর করে ভাড়াটাও দিয়ে দিয়েছ। আর যদি না রাখ তবে তোমার দুলাভাই খুব রাগ করবে।
হঠাত করেই আমি যেন শূন্যতা অনুভব করলাম, আমার পায়ের নিচের সব মাটি যেন সরে গেছে। আমার কাছে মনে হলো আমি কোন ভিনগ্রহে আছি। যেখানে আমার কোন ওজন নেই। আমি শূন্য। সে শূন্য করে দিয়েছে আমায়।

লেখকঃ চৌধুরী মোহাম্মদ ইমরান
এম সি কলেজ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৫
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×