somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হে পরিচালক, প্রযোজকগণ, বাংলা সিনেমাকে সাবালক হতে দিন!

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেবী সিনেমার একটা গান রিলিজ দিয়েছে দেখলাম। হুমায়ূন আহমেদের দেবী পড়েছিলাম অনেক আগে। দূর্দান্ত! এর পরের পর্ব নিশীথিনীও দারুণ। দেবী সিনেমাটি যদ্দুর জানি সেই দুটি কাহিনী অবলম্বনেই বানানো হচ্ছে। মিসির আলি চরিত্রে তরতাজা জোয়ান চঞ্চল চৌধুরী আর অষ্টাদশী রাণু চরিত্রে মাঝবয়সী জয়া আহসান কাজ করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন, ভালো কথা। কিন্তু একটি সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার (প্রায় হরর) ক্যাটাগরির একটি সিনেমাতে কলকাতা থেকে মিহি গলার গায়ক অনুপম রায়কে রোমান্টিক গান গাইতে ধরে নিয়ে আসার কি খুব দরকার ছিলো? পৃথিবীর কোন দেশে একটা ইন্টেন্স থ্রিলার/হরর সিনেমাতে এরকম গান-বাজনা থাকে? থাকলেও থাকতে পারে থ্রাস মেটাল মা হার্ডরক, এইখানে কেন আমাকে নায়ক-নায়িকার পীরিতি সম্বলিত ঢলাঢলি চার মিনিট ধরে দেখতে হবে? পরিচালক আসলে কাদের জন্যে ছবি বানাচ্ছেন? কেন ছবি বানাচ্ছেন? কেন তাকে সেই পুরোনো ফরমুলা, সেই বিস্বাদ রেসিপি মেনে চলতে হবে? আমরা তাহলে দেবীকে কোন পার্সপেকটিভে দেখবো? বৈশ্বিক মানদণ্ডে, না কি দেশীয় সিনেমার মানদন্ডে? এতদিন ধরে আমাদের ছাতামাথা গেলানো হয়েছে বলে এখনও সেগুলোর প্রেক্ষিতে ভালো হয়েছে বলে হাততালি দিতে হবে? সিনেমা পুরোটা না দেখে শুধুমাত্র একটা গান রিলিজ দেয়ার পর এমন কঠোর মন্তব্য হয়তো বা বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে, কিন্তু এভাবে আমরা বারবার ঠকছি।

আমরা ঢাকা এ্যাটাকে মাহিয়া মাহির ন্যাকামি দেখেছি। বোম্ব ডিসপোজালের মত ইনটেন্স মুহূর্তে “সেফ থেকো” ডায়লগ গিলেছি। চোরাবালিতে কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যহীন অসহ্য রকম গতানুগতিক প্রেম-পীরিতি দেখেছি। আর কত? আপনারা কাদের জন্যে ছবি বানাচ্ছেন আসলে? যাদেরকে টার্গেট মার্কেট ধরেছেন, তারা কী দুয়েকটা নাচ-গান, প্রেমের দৃশ্য না দিলে সিনেমা বর্জন করবে? আপনাদের পয়সা উঠে আসবে না? এইসব রিকোয়ারমেন্ট কে দেয়? দর্শক না কি প্রযোজক? না কি পরিচালকের নিজের কাছেই মনে হয় এরকম একটা সিনেমায় এমন মিহি গলার গান, আর পার্কে গিয়ে ঢলাঢলি না দিলে সিনেমা চলবে না? এটা কি পরিচালকের চিন্তার সীমাবদ্ধতা, না কি দর্শকদের এখনও নাবালক ভাবেন? আর কতদিন এক মুঠো প্রেম, সুন্দর দৃশ্য সম্বলিত গান, কিছু এ্যাকশন, কিছু সাসপেন্স এইসব ফর্মুলায় সিনেমা চালাবেন? একটা নিখাঁদ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, হরর কবে দেখতে পাবো? আপনারা তো ভালো ভালো সিনেমা কম দেখেন নাই, থিওরি কম জানেন না, তাহলে সিনেমা বানাইতে গেলে এই অবস্থা হয় কেন? কী, প্রযোজকের ডিমান্ড? এইসব রাখতেই হবে? এখন দুনিয়া উন্মুক্ত। এইসব প্রযোজকদের ফর্মুলা মানতে গেলে আপনেরা নিজেরাও কিছু করতে পারবেন না, দর্শকরা ঠকবে, আর বাংলা সিনেমাও নাবালক রয়ে যাবে। ইরানে এত সীমাবদ্ধতার মাঝে তারা দূর্দান্ত সব ছবি বানায়ে অস্কার বাগিয়ে নিচ্ছে, আর আমাদের জহির রায়হান, তারেক মাসুদের পর কোনো আন্তর্জাতিক মানের পরিচালক পাওয়া যায় না। ইরানের ছবিতে কি খুব বেশি বাজেট থাকে? ইরানের ছবিতে কি নাচ-গান থাকে? এই দেবী নিয়ে আপনারা কী আশা করেন? কয়টা হলে ছাড়বেন? কয় সপ্তাহ চলবে? এই যে ফরমুলা মেনে ঢাকা এ্যাটাক বানালেন, এত হলে মুক্তি দিলেন, টাকা কি উঠে এসেছে? খবর জানি রে ভাই, আসে নাই। তা লস যেহেতু খাবেনই, ভালো জিনিস বানায়েই লস খান! সুপাচ্য সবজিখিচুড়ি পরিপাকতন্ত্রের জন্যে ভালো, তবে তা কিন্তু বর্জ্য হিসেবেই নিঃসৃত হয়। আপনাদের বর্জ্যে পরিণত হবার এত ইচ্ছা কেন?

প্রথম প্রকাশ- আমার সাইট
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৮
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×