somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটু ভাবুন. . .

১২ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই যে আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইল , কম্পিউটার , লেপটপ দিয়ে ফেইজবুক , টুইটার , ,ভাইবার , ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন , একবার কি ভেবে দেখেছেন আপনার এই সামান্য ইন্টারনেট বিলের টাকা উপার্জন করতে আপনার বাবাকে কতটা ঘটনার আর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । যদিও টাকার অঙ্ক বড় কিছু না তবে এই টাকাটা আপনার বাবার কষ্টের উপার্জনের টাকা । আমি বলছি না তাই বলে আপনাকে ইন্টারনেট ব্যবহার ছেড়ে দেওয়া উচিত , আমি বলছি একটু ভাবুন ।

বাবা । আমাদের অনেকের কাছেই টাকা বের হওয়ার মেশিন । কিন্তু এই মেশিনটারও যে একটা প্রান আছে আমরা তা মাঝে মাঝে ভুলে যাই । অনেকেই তার বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে পারে না । বাবাকে ভয় পায় । কিন্তু বাবাকে কেন এই ভয় , বাবা কেন আপনার উপর রাগ করে , বাবা কি চায় এই কারনগুলো কখনো খুজে দেখেছেন । বাবা যে আপনাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ভেবে চলেছে তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন ।

আপনার মুখে হাসি ফুটানোর জন্য কি কষ্টই না করে লোকটা । প্রতিদিন সকালে আপনার আগেই ঘুম থেকে উঠে , কখনো বা নাস্তা না খেয়ে কখনোবা অর্ধেক নাস্তা করে অফিসে ছুটে যায় । আপনি ভাবেন আপনার বাবা অফিসে যায় , অফিস থেকে আসে , মাস শেষে বেতন পায় , এই আপনার বাবার কাজ । কিন্তু এই কাজ করতে আপনার বাবাকে কত শত শত কাজ করতে হয় তা কি কখনো ভেবে দেখেছেন ?

প্রতিদিন অফিসে সময় মতো যাওয়া , শরীর যেমনই থাকুক তার কাজ চালিয়ে যাওয়া , বসের মন মতো চলা , বসকে ম্যানেজ করা , মিথ্যা কথা বলা , কখনো নিজে ছোট হয়ে তোষামোদ করা , কখনো বা অন্যায় উপার্জন করা , বসের ঝারি খাওয়া , বিভিন্ন কাজে অফিসের বাইরে যাওয়া আরো কত কি কাজ আপনার আর আপনার পরিবারের জন্য করে লোকটা ।

কখনো কি খেয়াল করে দেখেছেন লোকটার স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে যা যা দরকার তা কি আছে নাকি লোকটার । হয়ত তার বাম পায়ের মোজার এক কোনা ছিড়ে গেছে , চশমার ডাটাটা একটু নড়বড়ে , মানিব্যাগটা টেপ মেরে চালিয়ে নিচ্ছে , হাত ঘড়ির ব্যাটারি শেষ হয়েছে সেই কবে তা আর বদলানো হয় নি , কখনো খেয়াল করেছেন ।

শুধু ফেইজবুকে লাইক দিচ্ছেন আর কমেন্ট করছেন । বাবা দিবস , মা দিবসে লাভ ইউ বাবা লাভ ইউ মা বলে কান্নার ইমো দিচ্ছেন ।
বারান্দার বাতিটা জ্বলে না অনেকদিন , ঘড়ির ব্যাটারি শেষ , সাবান শেষ , একটা সুইচ ডিস্টার্ব , বাবা দেখবে । সবই যদি বাবা দেখবে তাহলে আপনি আছেন কি জন্য !

আপনার পরীক্ষার ফি দরকার । মাসের মাঝামাঝি বললেন বাবা কাল লাস্ট ডেট পরীক্ষার ফি জমা দেওয়ার । বাবা বলল , আচ্ছা নিয়ে যাস । আপনি ভাবলেন আপনি চাইলেন আর বাবা দিল । কাহিনী শেষ । একবার ভেবে দেখেছেন এই সময় এই টাকাটা আপনার বাবা কিভাবে জোগাড় করবে । কার কাছে ঋণ করবে একথা ভাবতে ভাবতে আপনার বাবা গতকাল রাতে ঘুমাতেই পারে নি তা আপনি কখনোই জানবেন না কারন আপনি তখনো ঘুমে ।

রাতে যখন কর্মজীবি মানুষ বাড়িতে ফিরে তাদের কখনো ভালো করে দেখেছেন ? দোকানে গিয়ে কিভাবে তারা একটার পর একটা ছেলে মেয়ের পচ্ছন্দের জিনিস কিনে ।
ভাই এইটা একটা দেন , দাম কত ? এতো দাম ? থাক ভাই আরেকদিন নিব । এই এতটুকু কথা বলতে মানুষ গুলোর কি কষ্ট হয় তা কখনো খেয়াল করেছেন ? না , তখন আপনি ফেইজবুকে ছিলেন ।

আমার সীমিত জ্ঞান , তাই আমি কাউকে জ্ঞান দিচ্ছি না । আমি শুধু যারা আমার মতো ফেইজবুক এডিক্টেট তাদের পাশের মানুষের দিকে , বাবা মায়ের দিকে একটু খেয়াল দেওয়ার অনুরোধ করছি ।
আপনি হয়ত প্রতিদিন আপনার ফেইজবুকের পরিচিত অপরিচিত মানুষদের মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞাসা করেন , হায় , কেমন আছেন ? কখনো বাবাকে বা মাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন কথাটা ? অথচ আপনি খবর নিয়ে দেখতে পারেন আপনার বাবা প্রতিদিনই আপনার মায়ের কাছে আপনার খবর রাখছে ।
হয়ত বলছে , ওর কি খবর ? ঠিক মতো লেখা পড়া করছে ? কোচিং এ যাচ্ছে ? বাইরে যা গরম , বাসায় ফিরলে ওকে ঠান্ডা শরবত করে দিবে । শুনলাম বন্ধুদের সাথে কোথায় যেন যাবে , সাবধানে যেন থাকে , এই টাকাটা ওকে দিও , আমার কথা বইলো না . . .
.

- পাভেল রইস :)
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×