somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'সে একজন হেডস্যার। সে যা ভাল বোঝে তোমাদের বলছে।'

১৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বিষয়টা আর ভাল লাগছে না। এই ধরনের একটা করে ঘটনা ঘটবে, আর পাল্লা ভারি হবে চরমপন্থীদের। পাল্লা ভারি হবে চরমপন্থীদের সমর্থকের। সহজাত ভালবাসায় ভরা প্রতিবেশী মুহূর্তে পরিণত হবে তীব্র তীক্ষ্ণ ঘৃণার পাত্রে। এইযে প্রধান শিক্ষক, তার ওই ক্লাসের কয়টা ছাত্রছাত্রী তাকে শ্রদ্ধা করে, ভালবাসে এখনো?

বাচ্চার পেটে ঘুষি মারা। তাও আবার শুনতে না পাবার বা জবাব না দেয়ার অপরাধে। একাধিক। এরপর তাকে এন্টাসিড আর প্যারাসিটামল জোর করে খাওয়ানো। বাসায় যেতে চাইবার পরও না দেয়া। জোর করে ধরে রাখা। এরপর ক্লাসে এসে বিনা কারণে এমন উগ্র সাম্প্রদায়িক উক্তি!

শুধু বাচ্চাকে মারা এবং তাকে জোর করে অষুধ খাওয়ানো ও শেষে তাকে আটকে রাখা এই তিনটার যে কোনও একটা অভিযোগ প্রমাণিত হলেই ইউরোপ আমেরিকায় তার জেল তো হতই, শিক্ষক পেশাও নিষিদ্ধ হতো তার জন্য।

উগ্র সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপূর্ণ কথা একা বলা এক কথা। পুরো ক্লাসের উদ্দেশ্যে বলা অন্য কথা। আল্লাহর পাক নাপাকির কথা নাহয় পরে আনা যাবে। আল্লাহ্ আছে না নাই সেই খবরই যে জানে না আল্লাহর পাক নাপাকির কথা তার কাছ থেকে ধর্তব্য না।

তার ছাত্ররা আছে এটা একটা কংক্রিট ফ্যাক্ট। সে এই ছাত্র-ছাত্রীদের চূড়ান্ত অভিভাবক এবং মডেল এটাও একটা কংক্রিট ফ্যাক্ট।
শিশু কিশোরদের, নিজ ছাত্রদের নাপাক জানার মত তীব্র ঘৃণা ও বিতৃষ্ণার উৎসটা কোথায়?

অ্যাত্তো ঘৃণা নিয়ে একজন শিক্ষক কী শিখাবেন এবং তার ছাত্রদের কী যত্ন নিবেন?

আল্লাহকে নিয়ে বললে তো আল্লাহর কিছু যাবেও না, আসবেও না। কিন্তু এই ক্লাস টেনের ছেলেমেয়েগুলো কী যে ট্রমা নিয়ে বড় হবে! ঘৃণার বটবৃক্ষ সাম্প্রদায়িকতার চূড়ান্ত আগুন এদের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়া হল।

যারা শিক্ষক বনাম ধর্ম দ্বন্দ্বে পড়বে তারা পড়বে ট্রমায়।
যারা এই দ্বন্দ্ব পদদলিত করে ধর্মের বিষয়ে স্থির থাকবে তারা পড়বে ঘৃণায়। এই ছেলেমেয়েগুলো হয়তো মডারেট মুসলিম হতো, কিন্তু ঘৃণা-উৎসারক মুসলিমে পরিণত করার জন্য তাদের সম্মানিত প্রধান অভিভাবকই যথেষ্ট ছিলেন।

বি. দ্র.
ওসমান ফ্যামিলির মত ধুরন্ধর পরিবার খোদ্ নারায়ণগঞ্জেও কম আছে। বিশেষ করে সেলিম ওসমানের ব্রেন তো চলে না, বুলডোজার চলে। সে মামলা-মোকদ্দমা এবং কোপাকুপি হামলা সবকিছু এক মিনিটের বৈঠকের মধ্যে শেষ করে দিয়েছে।

বি. দ্র.-২
স্যারের অপমানে কান ধরে উঠবস করে করে সেলফি দিয়ে সারা অনলাইন সয়লাব।

'সে একজন হেডস্যার। সে যা ভাল বোঝে তোমাদের বলছে।' কথাটা বলেছিলেন সেখানে উপস্থিত আরেক শিক্ষক। স্যার তার পুরো ক্লাসের ছাত্রদের অস্তিত্বগতভাবে অপবিত্র জানাটাকে ভাল মনে করেন। আমরা সেই স্যারকে ডিফেন্ড করাকে ভাল মনে করছি।

আরে বাবা স্যারের পরিচয় কাদের সাপেক্ষে? ছাত্রছাত্রীদের সাপেক্ষে। তাদের অভিভাবকত্বে, প্রদর্শনে। শিক্ষক সম্মানিত কারণ তিনি শিশু কিশোরদের আলোকিত করেন। আর কোনও কারণে না।
যে শিক্ষক শিশু কিশোরদের অপূরণীয় ট্রমার মধ্যে ফেলে, তাও আবার ক্লাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের, তাকে শিক্ষকতার ক্ষেত্রে বিবেচনা করে সম্মান করা আর পরিমলের জন্য জাঙ্গিয়া পরে পোজ দেয়ার মধ্যে কোনও তফাত নেই এটা কি খুব বেশি অস্পষ্ট এবং উচ্চতর কথা হয়ে গেল?

যে তার ক্লাসের সমস্ত কিশোর ও শিশুকে অস্তিত্বগতভাবে অপবিত্র জানে সেই শিক্ষকের জন্য যে কানে ধরে উঠবোস করে ফেবুতে পোস্ট দেয় তার অস্তিত্বের প্রতি করুণার বাইরে কিছু হয় না।
শিক্ষক পদবীর কথা তার মনে আছে, শিক্ষক কী কারণে শিক্ষক সেটা মনে নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:০১
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×