somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরআন শরীফেও নাকি এজিদকে লালত করা হয়েছে???

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





- হ্যা ভাই! অবিশ্বাস্য হলেও ঘটনা সত্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াতের অন্যতম ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.)।

বিখ্যাত হাম্বলী আলেম ও ইতিহাসবিদ আল্লামা আবদুর রহমান ইবনুল জওযী (৫১০-৫৯৭) এজিদ ভক্তদের মুখে চুনকালি দিতে তাঁর লেখা ঐতিহাসিক الرد على المتعصب العنيد المانع من ذم يزيد নামের কিতাবে তিনি বর্ণনা করেছেনঃ

إن الإمام أحمد لما سأله ولده عبد الله عن لعن يزيد قال: كيف لا يلعن من لعنه الله تعالى في كتابه؟ فقال عبد الله قد قرأت كتاب الله عز وجل فلم أجد فيه لعن يزيد؟ فقال الإمام: أن الله تعالى يقول : فهم عسيتم إن توليتم أن تفسدوا في الأرض وتقطعوا أرحامكم . أولئك الذين لعنهم الله [سورة محمد ، الآية رقم 23] وأي فساد وقطيعة أشد مما فعله يزيد. [روح المعاني - سورة محمد - تفسير الآية رقم ( 23 ) - الجزء : ( 17)].

অর্থাৎঃ ইমাম আহমদ (রঃ)-কে তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ যখন এজিদকে লানত করার কারণ জিজ্ঞেস করলো, তখন তিনি বললেন, ‘যাকে আল্লাহ তাঁর কিতাবে লানত করেছেন, তাকে কেন লানত করা হবে না?
তখন আবদুল্লাহ বললো, আমিতো আল্লাহর কিতাব পড়েছি। তবে তাতে এজিদকে লানতের কথা পাইনি। তখন ইমাম আহমদ বললেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা কি এটার নিকটবর্তী হয়েছো যে, ক্ষমতাসীন হলে জমিনে ফাসাদ সৃষ্টি করবে এবং রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করবে? বস্তুত ওরা সেসব লোক, যাদেরকে আল্লাহ লানত করেছেন।”
তো এজিদ যা করেছে, তার চেয়ে বড় ফাসাদ ও রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকরণ আর কি হতে পারে?
প্রসঙ্গত, বিখ্যাত হানাফী মুফাসসির আল্লামা আলুসী তাঁর রচিত তাফসীর ‘রুহুল মাআনী’তে সূরা মুহাম্মদের ২৩ নম্বরে আয়াতের তাফসীরেও ইমাম আহমদের উপরোক্ত বক্তব্যটি এনেছেন।

এবার আসুন এজিদকে লানত দেওয়া জায়েয ও উচিত বলেছেন এমন সালাফ ও খলফদের নাম শুনিঃ
১. ইমাম আবু হানীফা (দ্রষ্টব্যঃ আল্লামা দুমাইরীর হায়াতুল হায়াওয়ান, খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ১৭৫)
২. ইমাম মালেক বিন আনাস (দ্রষ্টব্যঃ ঐ)
৩. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (দ্রষ্টব্যঃ ঐ এবং ইবনে কাছীরের আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়া, খন্ড- ৮, পৃষ্ঠা- ২২৩)
৪. কাজী আবু ইয়ালা হাম্বলী (দ্রষ্টব্যঃ ঐ)
৫. কাজী আবুল হুসাইন হাম্বলী (দ্রষ্টব্যঃ ঐ)
৬. আবুল ফরজ ইবনুল জওযী (দ্রষ্টব্যঃ তাঁর লিখিত ‘আর-রদ্দু আলাল মুতআচ্ছিবিল আনীদ আল-মানে মিন যম্মি ইয়াযীদ)
৭. ইবনে আকীল হাম্বলী (দ্রষ্টব্যঃ সিবত ইবনুল জওযীর তাযকিরাতুল খওয়াছ, পৃষ্টা- ২৬১)
৮. আল্লাম সাদুদ্দীন তাফতাজানী (দ্র্ষ্টব্যঃ শরহুল আকায়িদিন নাসাফিয়া, পৃষ্ঠা- ১৮১)
৯. হাফিজুদ্দীন আল-কুরদী আল-হানাফী (দ্রষ্টব্যঃ মানাভীর ফয়যুল কদীর, খন্ড- , পৃষ্ঠা- ২৬৫)
১০. কিওয়ামুদ্দীন আছ-ছফারী (দ্রষ্টব্যঃ ঐ)
১১. আল-মাওলা ইবনুল কামাল (দ্রষ্টব্যঃ ঐ)
১২. আল্লামা শাওকানী (দ্রষ্টব্যঃ তাঁর স্বরচিত নাইলুল আউতার, খন্ড- ৭, পৃষ্ঠা- ৩৬২)
১৩. আল্লামা আলুসী হানাফী (দ্রষ্টব্যঃ তাঁর স্বরচিত রূহুল মাআনী, খন্ড-২৬, পৃষ্ঠা- ৭৩)
১৪. আল্লামা আহমদ ছিদ্দীক আল-গুমারী (দ্রষ্টব্যঃ তাঁর স্বরচিত জুনাতুল আত্তার. খন্ড- ২, পৃষ্ঠা- ১৫৪)।

এজিদের রাজাগিরির শুরু-শেষঃ
এ ব্যাপারে আল্লামা যাহাবী বলেছেন,
افتتح دولته بمقتل الشهيد الحسين ، واختتمها بواقعة الحرة ، فمقته الناس، ولم يبارك في عمره . وخرج عليه غير واحد بعدالحسين . كأهل المدينة قاموا لله ... وابن الزبير بمكة.

অর্থাৎঃ ‘এজিদ তার রাজত্ব শুরু করেছিল শহীদ হুসাইনকে হত্যা করার মাধ্যমে, আর তার রাজত্বের সমাপ্তি হারার ঘটনার (মদীনায় গণহত্যা) মাধ্যমে। সুতরাং লোকজন তাকে অপছন্দ করে। তার হায়াতে বরকত হয়নি (৪০ বছরের আগেই ধ্বংস হয়েছে)। হুসাইনের পর তার বিরুদ্ধে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে লড়তে অনেকেই বের হয়েছেন, যেমন মদিনাবাসী (মদীনাতে), আবদুল্লাহ বিন যুবাইর মক্কাতে।’
[সূত্রঃ যাহাবী রচিত সিয়ারু আলামিন নুবালা, খ- ৪, পৃ- ৩৮]
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১:১৩
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×