somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৬ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ইংরেজি শব্দ ক্রিকেট-এর আভিধানিক অর্থ ঝিঁঝি পোকা। কিন্তু এখন ক্রিকেট বলতে আমরা ব্যাট-বলের এক গৌরবময় লড়াইকেই বুঝি। ক্রিকেট যেমন গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা তেমনি কবে কোথায় প্রথম ক্রিকেট খেলা শুরু হয়েছিল সে ইতিহাসও অনিশ্চিত। ক্রিকেট-বিষয়ক সব পুরনো নথিপত্র ঘেঁটে ১৫৫০ সালের দিকে এ খেলাটির অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। ১৫৯৮ সালে প্রকাশিত তথ্যসূত্রটি থেকে জানা যায়, ১৫৫০ সালের আগেও দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্ট, সাসেক্স ও সারি কাউন্টিগুলোতে, বিশেষ করে ওয়েল্ড নামের অঞ্চলটিতে ক্রিকেট খেলা হত। ফুটবলের মতো ক্রিকেটের জনক কে তা নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মত। বেশিরভাগ মতই বলছে ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ড। কিন্তু কিছু তথ্য ও উপাত্ত বলে অন্য কথা। ক্রিকেটের প্রচলনটা শুরু হয় ভারতীয় উপমহাদেশের পাঞ্জাব অঞ্চলের ‘দোয়াব’ এলাকায়। ৭ম শতাব্দীতে এ এলাকায় ক্রিকেটের মতো এক ধরনের খেলা হত। ৮ম শতাব্দীর আরও কিছু পরে খেলাটি পারস্যের দিকে প্রচলিত হতে থাকে। ইউরোপে খেলাটির প্রচলন সম্পর্কে ইতিহাস এই, ১০ম শতাব্দীর আগে প্রাচীন ভারতীয় মরুভূমিতে বসবাসকারী ‘নরম্যাডিক জিপসি’রা তুরস্ক হয়ে ইউরোপে যায় এবং সেখানে তারা প্রচলিত এ খেলাটি খেলত। তাদের দেখাদেখি ইউরোপীয়দের মধ্যে খেলাটির প্রচলন হয়। ক্রিকেট খেলাটি এ সময়ে চলছিল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দস্যুতায় পটু ইউরোপিয়ানদের ক্রিকেটের মতো খেলাতে সময় নষ্ট না করার জন্যে এ খেলার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। কেননা এ খেলায় পড়ে থাকলে দেশ জয়ের জন্যে প্রয়োজনীয় সৈনিক পাওয়া যাবে না। তাই রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড ব্রিটেনে ক্রিকেট খেলা নিষিদ্ধ করে দেন। সে সময় অনেকেই এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় শাস্তি পেয়েছিলেন। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের পর ইউরোপে রাজ্য জয়ের প্রতিযোগিতা প্রায় বন্ধ হয়। সেই শতকের শেষের দিকে ইতালীয় রেনেসাঁর প্রভাবে ইউরোপের শিল্প-সংস্কৃতির খোলস পাল্টে যেতে শুরু করে। যার হাওয়া খেলাধুলার গায়েও লাগে। ১৫০০ খ্রিস্টাব্দের আগে যে খেলাটির নাম ছিল ক্রিঘ বা ক্রিকে, সেটিই ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে এসে পরিচিতি লাভ করে ক্রিকেট নামে। ক্রিকেট খেলার কারণে যে শাস্তির বিধান হয়েছিল সেটি আস্তে আস্তে উঠে গেছে ধারণা করতে থাকে খেলুড়েরা। এক ধরনের অলিখিত নিষেধাজ্ঞা সঙ্গে নিয়েই জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে ক্রিকেট। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা। তাদের ঘোর আপত্তি- ক্রিকেট হল অলস, অকর্মন্য আর বাজিকরদের খেলা। তারা এর বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান করেন। কিন্তু ক্রিকেটের চলার পথে কোনো বাধাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। এভাবেই ক্রিকেট মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিক যুগে পদার্পণ করে। প্রথম যুগে ক্রিকেটে বল করা হত গড়িয়ে, যা এখন ভাবাই যায় না। ব্যাটেও ছিল বিস্তর পার্থক্য। আধুনিক ক্রিকেটে এসেছে অনেক নিয়ম-কানুন। ক্রিকেট হয়েছে আরও সমৃদ্ধ, রাজকীয় ও প্রযুক্তিময়। ক্রিকেট এখন শিক্ষিতের খেলা, পরিসংখ্যানের খেলা। কাউন্টি ম্যাচের মাধ্যমে আধুনিক ক্রিকেটের পথচলা শুরু হয়। ১৭১৯ সালে ইংল্যান্ড জাতীয় দল ও কেন্ট দলের মধ্যকার ম্যাচটি হল প্রথম আধুনিক ক্রিকেট ম্যাচ। ভারতবর্ষে আধুনিক ক্রিকেটের প্রচলন হয় ১৭২১ সালে। ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির লর্ডরা
অবসরে ক্রিকেট খেলতেন। তবে ১৭৪৪ সালের আগে ক্রিকেট পুরোপুরি আধুনিক হয়ে ওঠেনি। সে সময়ের ক্রিকেট খেলায় এখনকার মত নিয়ম-কানুন ছিল না।

১৭৪৪ সালে আধুনিক ক্রিকেটের বিভিন্ন নিয়ম-কানুন করা হয় এবং ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। ১৮৭৭ সালে ১৫ মার্চে টেস্ট ক্রিকেটের জন্ম হয়। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ করে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেও অংশ গ্রহণ করে এ দুটি দল। দুই ম্যাচেই অস্ট্রেলিয়া জয় লাভ করে। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে ‘ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স’ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৯ সালে। পরে ১৯৫৬ সালে ‘ইম্পেরিয়াল’ কথাটি পরিবর্তন করে ‘ইন্টারন্যাশনাল’ শব্দটি যোগ করে ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল’ রাখা হয়। সংক্ষেপে আইসিসি। ১৮৮২-৮৩ সাল থেকে শুরু হয় মর্যাদাপূর্ণ অ্যাশেজ লড়াই। এরপর থেকে অন্যান্য দেশ টেস্ট ক্রিকেটে একে একে পদার্পণ করে। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮৮৮-৮৯, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯২৮, নিউজিল্যান্ড ১৯২৯-৩০, ভারত ১৯৩২, পাকিস্তান ১৯৫২-৫৩, শ্রীলঙ্কা ১৯৮১-৮২, জিম্বাবুয়ে ১৯৯২ এবং টেস্টের এখন পর্যন্ত সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য বাংলাদেশ ১৩ নভেম্বর ২০০০।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×