- বন্ধুদের সাথে আড্ডা কিংবা ঘুরাঘুরি করাটাই আপনার জন্য তরুন বয়সের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ মনে হয়েছে।
- সময়ের মূল্য নিয়ে রচনা মুখস্থ করেছেন, পরীক্ষার খাতাটা ভালভাবে লিখে ভাল নাম্বারও পেয়েছেন। কিন্তু নিজের জীবনের ক্ষেত্রেই এ মুখস্থ বিদ্যাটা কাজে লাগাতে পারেননি। আর সেজন্য সব কাজের ফাকে ২৪ঘন্টার মধ্যে মাত্র ২ঘন্টা বের করতে পারিনি নিজেকে প্রস্তুত করার জন্য।
- আপনি নিজের জীবনের স্থায়ীত্ব ভেবেছেন ২বছরের। ভাবেননি, ৫-১০ বছর পরের জীবনের ব্যাপারে।
- বাবার টাকা দিয়ে কিংবা বন্ধুর টাকা দিয়ে সারাজীবন আপনাকে কেউ চালাবেনা, সেই বিষয়টি আপনার মাথা থেকে পুরোই হারিয়ে গিয়েছিল।
- ঘুমটাকে সবচাইতে আরামদায়ক কাজ হিসেবে গুরুত্ব দিয়েছেন, যা আপনার ভবিষ্যতের সুন্দর স্বপ্নকেও ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে, সেটি মাথাতে ছিলনা।
- ভার্সিটিতে পরীক্ষা থাকলেও বন্ধুর জন্মদিনে গিয়ে মজার খাবার খাওয়াটাকে কিংবা মজার মূহুর্ত কাটানোকে জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ মনে হলেও, ৫-১০ বছরের মজার খাবার খাওয়ার কিংবা মজার মূহুর্ত কাটানোর ব্যাপারটা পুরোপুরি ভুলেই গিয়েছিলেন। আর সেজন্য বন্ধুর জন্মদিনের ক্ষেত্রে পরীক্ষা কিংবা ক্লাস অ্যাসাইনমেন্ট কোন ধরনের বাধা সৃষ্টি না করলেও নিজের ক্যারিয়ারের জন্য কিছু শিখতে সময় ব্যয় করাটার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো অনেক বড় বাধা ছিল।
- যুবক বয়সের এত অ্যানার্জির মধ্যেও পরিশ্রম করাটাকে আপনার কাছে অনেক কষ্ট সাধ্যের বিষয়। হবেইতো, কারণ আপনার মাথাতে নাই, আজ থেকে ১০ বছর পর যখন শরীর অনেক দুর্বল থাকবে, তখনও আপনি শুয়ে থাকতে পারবেননা। আজকের সময়টাকে অবজ্ঞা করার কারণেই তখনকার ফলাফলটা কি হতে পারে, সেটি বুঝতে অনেকের নিজেদের বাবা-মার দিকে তাকালেই বুঝা যায়।
- টিভি পর্দাতে কিংবা ল্যাপটপে বসে কিংবা সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখে সেখানের নায়কদের সাথে নায়িকার সুন্দর চেহার দেখে তাদের নিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডাটে আফসোস করছি, নিজেরও এরকম নায়িকার মত সুন্দর একটি গার্ল ফ্রেন্ডের ব্যাপারে। কিন্তু গার্ল ফ্রেন্ড এরকম পাওয়া গেলেও বউ এতসুন্দর পেতে হলে নিজেকে যে সেই সুন্দরী মেয়ের অনেক বর প্রার্থীদের কাছে যোগ্যতা প্রমাণে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হবে, সেটি ভুলে গেছেন।
- বন্ধুর জন্মদিন কিংবা বিয়ে উপলক্ষে ৫০০০টাকা খরচ করেও অনেক কম খরচ করেছেন ভেবে মনে কষ্ট নিয়ে কয়েকটি দিন নষ্ট করলেও একটু খরচ করে কিছু শিখে নিজেকে দক্ষ করার ক্ষেত্রে এ টাকাটাই আপনার কাছে অনেক বেশি মনে হচ্ছে। আবার ভাল একটি ড্রেসের জন্য খরচ একটু বেশি করতে আপত্তি না থাকলেও সারা জীবনের জন্য যা কাজে লাগবে, সেটির জন্য সবচাইতে সস্তা জায়গাটাতেই যাওয়াটাকে নিজের সবচাইতে সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করছেন। সেই ক্ষেত্রে ভাল প্রোডাক্ট কিনতে বেশি খরচ হয়, এ সূত্রটি আপনার মাথা থেকে হারিয়ে গেছে।
সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কঠিন বর্তমান পার করার প্রস্তুত নিন। বর্তমানের এ যুগে সুন্দর ভবিষ্যত গড়ার জন্য বুয়েট কিংবা মেডিকেলে পড়া লেখা করতে হয়না। ক্রিয়েটিভ আইটিতে কোর্স করে গেছে এরকম অনেক স্টুডেন্ট দেখাতে পারব, যারা মাত্র অনার্স ২য় বর্ষে পড়েও বর্তমানে মাসে আয় করছে গড়ে ৫০,০০০টাকা কিংবা আরো বেশি। সবাইকে বিষয়গুলো জানানোর জন্য কয়েকমাস যাবৎ জেনেসিসব্লগসে সেই সব সাক্ষাৎকারগুলোও প্রকাশ করেছি। এইতো কিছুদিন আগে ১৩ডিসেম্বর’২০১৩ তে জাতীয় যাদুঘরে ৫০ জন এরকম ফ্রিল্যান্সার, যারা ক্রিয়েটিভ আইটি হতে কোর্স সম্পন্ন করেছে এবং এখন মাসে আয় করছে গড়ে ৩০,০০০টাকা- ৪০,০০০টাকা। তারা যদি এ বয়সে এরকম আয় করে, ভাবুনতো একবার, আমাদের বাবা-মা র বয়স হতে হতে তাদের আয়ের পরিমাণটা কোন পযায়ে যেতে পারে। এতজন যদি এ বয়সে এ পযায়ে যেতে পারে তাহলে আপনি কেন পারবেননা? কেন পারবেননা, সেটিতো উপরে উল্লেখ করলামই। আজ থেকে শুরু করুন, উপরে উল্লেখ করা স্কীলড না হওয়ার কারণগুলোর বিরুদ্ধে জীবন মরণ যুদ্ধ।