somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যক্তি হতে জাতীয়

২৬ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(ছবি নেট হতে নিয়ে এডিট করা)

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: শুরুতে ধর্মীয় বিষয় যুক্ত করাটা যাদের কষ্ট দেয় তাদের কাছে আন্তরিকভাবে অনুরোধ থাকবে আমার লিখা এড়িয়ে যাবার। আমি ব্লকলিস্ট আর ভারি করতে চাইনা। আমার ভীষণ কষ্ট হয়।

প্রিয় ভাই,
জানিনা কি লিখতে কি লিখে ফেলি, সেজন্য আগেই ক্ষমা চাইছি। ভূমিকা করে আপনার মূল্যবাণ সময় ক্ষেপন না করে সরাসরি প্রসঙ্গে আসি। অদ্যবধি ব্লগ ছাড়া হওয়ার পর প্রিয় যাঁরা কন্টিনিউ করতে সুযোগ পেলেই উৎসাহ দিচ্ছেন আপনি তাদের মাঝে অন্যতম এবং অন্যরকম। অন্যরকম বললাম কারণ, অন্যদের মতো আপনার সঙ্গে আমার বিক্রিয়াটা তেমন গভীর ছিলো না। একটা গোপন কথা বলি। সত্যি বলতে আমি খুব করে চাইতাম আপনার সঙ্গেও আমার বিক্রিয়াটা সুগভীর হোক। আর এর মূল কারণ হচ্ছে আপনার ধর্মপ্রীতি। (ধর্ম বলতে ইসলাম ধর্ম। সমগ্র লিখায় দয়া করে এটা মনে রাখবেন) কিন্তু সাহস করতে পারিনি আপনার বোধ্যা টাইপের পোস্ট দেখে। তখনই বিক্রিয়ার আশাতে ছেঁদ পরতো। আপনার গুরুগম্ভীর আলোচনা-পর্যালোচনা সর্বদা মনের কোনে এক অজানা ভয় তৈরী করে দিতো। মনে হতো এমন গুরুগম্ভীর ব্যক্তির সাথে কি আমি ক্ষুদ্র জ্ঞাণে বিক্রিয়া করতে পারবো? তাছাড়া আমি যতোটা বুঝতে পেরেছি আপনি শান্তি প্রিয় নিরেট ভদ্রলোক ও ভীষণ ধার্মিক। তাই ক্যাঁচাল হতে আপনি দূরে থাকায় আমার জন্য বিক্রিয়ার সহজ পথটা আবদ্ধ ছিলো। ধর্ম বিষয়টা আমার কাছে ভীষণ সেনসিটিভ তা নিশ্চই এতোদিনে কিছুটা হলেও আঁচ করতে পারেন। আপনার মতো ধর্মবিশারদের থেকে ধর্মীয় জ্ঞাণ আহরোন করতে পারা নিঃসন্দেহে সুবর্ণ সুযোগ। কিন্তু উপর্যুক্ত কারণে তা আর হয়ে উঠেনি। কিন্তু শায়মা আপার সঙ্গে আপনার বিক্রিয়া আমার সেই ভয় অনেকটাই কাটিয়ে দেয়। তবে আর সমস্যা কি ছিলো?

হে প্রিয় ব্লগপ্রেমী,
সমস্যা ছিলো আমাদের বিক্রিয়ার মাধ্যমের কিছু উপাদান। কারণ, তাদের বৈশিষ্ট্যের কারণেই বারবার বিক্রিয়া করতে গিয়েও ফিরে এসেছি। একটা উদাহরণ দেই। সবাইতো সব জানেনা। ধরুন আপনার থেকে জানতে চাইলাম গোসলের ফরজ কয়টি। এটা তখন আর জ্ঞাণ পিপাসা না হয়ে হয়ে যাবে অপরাধ! কেনো আমি এটা জানিনা? এমন সাধারণ একটা বিষয়ে কেনো আমার জ্ঞাণ নেই? যেহুতু গোসলের ফরজ জানা নাই তাই এ পর্যন্ত আমার গোসল হয় নাই। আর গোসল যেহুতু হয় নাই তাই জীবনের কোনো ইবাদতই কবুল হয় নাই। সেই জেরে পারলে জোরপূর্বক জাহান্নামে পাঠিয়ে দেবে। নয়তো মাধ্যমের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে কথা উঠবে। বলা হবে এটা ধর্ম চর্চার স্থান নয়। নয়তো বলা হবে ক্যাঁচাল করে কেনো এখন ধর্মীয় ফতোয়া খুঁজছি? বিনা কষ্টে কাঠমোল্লার সার্টিফিকেট পেয়ে যাবো। সেইসঙ্গে আরো কতো যে উপাধি গলায় ধারণ করতে হবে তার কোনো হিসাব নেই। তারসাথেতো কত রকমের হুমকি-ধমকি যে থাকবে তা নিশ্চই আপনাকে আর বলতে হবে না। কিন্তু সবশেষ কথাটা হবে মুসলমান মানে জিহাদী। ইসলাম ভালো ধর্ম নয়। এই অপবাদ কি করে সইবো? আর এই যদি অবস্থা চলে তবে কি তাতে কোনরূপ ইহ বা পরকালীয় ফায়দা নিহিত থাকে?

হে ব্লগপ্রাণ,
আমার এই প্রশ্নের কারণে তখন আপনি আবার পরবেন গ্যাঁড়াকলে। উত্তর দিলেও বিপদে পরবেন, না দিলেও বিপদে পরবেন। উত্তর দিলে আপনাকে যাস্টিফাই করতে হবে উত্তর কতোটা সহী। রেফারেন্স দিলে সেই রেফারেন্স কতোটা সহী সেটাও আবার আপনাকে ক্লিয়ারিফাই করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি যখন ধীরে ধীরে এটা আল্লাহ্'র নির্দেশ বলা পর্যন্ত যাবেন তখনই যাস্টিফাইয়ের বিষয় হবে আল্লাহ্'র অস্তিত্বের। সেক্ষেত্রে এমনসব কথা চলে আসবে যা শুনে আমাদের মত ধর্মপ্রাণের মাথা ঠিক রাখা অসম্ভব। তখন আপনার মতো জ্ঞাণীরা যাস্টিফাইয়ের উপর যাস্টিফাই করে পাবেন মূর্খের খেতাব। আর আমার মত মাথা গরম ধার্মিকের প্রতিবাদ করে কোন খেতাব পাবো তাতো জানেনই। তখন ঘাপটি মেরে থাকা আরেক শ্রেণী আসবে আমরা বর্বর সেটা প্রমাণের জন্য। তখন কোথাকার পানি কোথায় গড়াবে সেতো বুঝতেই পারছেন। আবার উত্তর না দিলে আপনাকে শুনতে হবে আপনি যে মূর্খ এই ধারণা সঠিক। নয়তো এই সাধারণ প্রশ্নের কেনো উত্তর দিলেন না। নিশ্চই বুঝতে পারছেন বাঁশ কেনো ঝাড়ে? নয়তো যদি এই সাধারণ প্রশ্নটা শুধু আপনি-আমার মাঝে আবদ্ধ থাকতো তবে কি কোনো সমস্যা হতো? আসলে এটা ব্যক্তিগত সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা তৈরী করার একটা মেশিন কি নয়?

হে প্রিয় ধার্মিক ব্লগার,
নিশ্চই বুঝতে পারছেন এখানে ধর্ম না জানাটা কত বড় অন্যায়? আবার ধর্ম জানতে চাওয়াটাও কতো বড় অন্যায়? ধার্মিক হয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে তখন আবার ধর্মের মারপ্যাঁচে আপনাকে বাঁধার জন্য জোটবদ্ধ হবে। যদিও তারাও জানে ধর্ম আবদ্ধ নয়, মুক্ত করে। তখন আবার শুরু হবে ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করা। আমার মতো কারো কাছে ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করাটা কতোটা হৃদয় বিদারক তা নিশ্চই আপনার মতো ধর্মপ্রেমীকে বুঝিয়ে বলার অবকাশ রাখেনা। তাই এই মাধ্যম কেবল সবজান্তা প্রগতিশীলদের জন্য। বিশেষ করে ইসলাম ধর্মের প্রতি যাদের অন্ধ ভালবাসা রয়েছে তাদের জন্য দুই নৌকায় পা রেখে কতোটা আগানো সম্ভব?

হে প্রিয় বিশ্লেষক,
হয়তো বলবেন এসব বাদ-প্রতিবাদ এড়িয়ে চললেইতো হয়। যারা ছোট হতে গালাগালির মাঝে বেড়ে উঠে বা মা'য়ের পরিচয় জানেনা তারা যেভাবে মাকে নিয়ে গালি এড়িয়ে যেতে পারে সেটা কি সম্ভব হয় কোনো মাতৃভক্ত সন্তানের পক্ষে সহজে মানা? ধর্মতো আমাদের মত মূর্খের কাছে তারচেয়েও অনেক বড়। আমি মূর্খ কারণ আমি ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজি না আর খুঁজতেও চাইনা। শুধু বুঝি ধর্ম এমন এক বিশ্বাস যা অন্ধের মত চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে হয়। ধর্মের নিয়ম-কানুনে প্রশ্ন থাকলেও ধর্ম নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা যাস্টিফিকেসনের প্রয়োজন বোধ করি না। এটা কেবলই উপলব্ধির বিষয়। যেমনি বুঝতে চাইনা মা কোন সমাজের অংশ। মায়ের অপমানে যেভাবে সম্ভব নয় মাথা ঠিক রেখে তর্ক করা বা চুপ থাকা, ধর্মের অপমানেও তাই নয় কি?

হে প্রিয় প্রেষক,
তাই সংকটময় জীবনে যেচে সংকট বাড়াতে আর ভালো লাগেনা। একটা মানুষ ততোদিনই বাঁচতে চায় যতোদিন কোনো আশা থাকে। একজন লেখকও তাই। হোক সে ব্লগ লিখিয়ে, কিংবা অন্যকেউ। আর ধর্ম অভারলুক করে কি আসলে শান্তি মিলে? না। তখন দল, মত, স্থান, কাল ইত্যাদি একটা না একটা কিছু বিভেদ তৈরীর হাতিয়ার হয়ে যায়। তাই ধর্ম সব সমস্যার মূল এটা একটা ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু না। তবুও জ্ঞাণীর নীরবতায় মূর্খের আস্ফালনের শব্দ বিকট। এই শব্দ আমার মতো অধমের কান আর কত নিতে পারে?

হে প্রিয়,
আপনার মূল্যবাণ সময় এবং ধৈর্য্যের আর চ্যুতি ঘটাবো না। আপনি বহুদিন ধরে প্রেষিত করছেন নিয়মিত লিখতে। অনেক কষ্ট করে কমেন্ট করেন যার সঠিক মূল্যায়ণ আমি করতে পারিনি। তারই প্রেক্ষিতে আজকের এই পোস্ট। দয়া করে ভুল-ভ্রান্তি নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন। সেইসঙ্গে আপনার দোয়ার মাঝে এই অধমেরে একটু ঠাঁই দেবেন। আল্লাহ্ আপনার সহায় হোন।
ফিআমানিল্লাহ্।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১০:৪৪
৯টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×