♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধর্মীয় বিষয় কষ্ট দিলে আন্তরিকভাবে অনুরোধ থাকবে আমার লিখা এড়িয়ে যাবার।
(ছবি নেট হতে নিয়ে এডিট করা)
প্রিয় ভাই,
আপনাকে লিখা ধৃষ্টতা প্রদর্শন বই কিছু নয়। কিন্তু যেহুতু আজ সেই ধৃষ্টতা দেখিয়েই ফেলেছি সেজন্যে নিজেকে আপনার চরণে শপিয়া দিলাম। জানিনা এই অপরাধ ক্ষমাযোগ্য কিনা। কিন্তু তারপরও এই লিখা লিখিতে বাধ্য হইলাম কারণ এই লিখার মাধ্যমে আমি আপনাকে হত্যা করিতে চাই। জ্বী, আমি আপনাকে খুন করিবো। আপনি না দেশের বীরসন্তান? পারলে ঠেকান।
হে বীর,
আজ আপনার মত বীরসন্তানও হয়ে থাকেন অনেকের কটাক্ষের স্বীকার! দেশ মাতার মুক্তিকামী সন্তান হয়েও কুকথার বাণ আপনাকে দিনের পর দিন ক্ষত-বিক্ষত করে চলে বাকস্বাধীনতার খোলসে! এই স্বাধীনতা আনার জন্যেই কি নয় মাস ঘর ছেড়ে ছিলেন? এই কি আপনাদের চাওয়া ছিলো? এইজন্যেই কি আমার মায়ের সারা শরীর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো লক্ষ লক্ষ প্রাণে? যদি তা না হইতো তবে কোথায় আজ আমার ছেলে ভুলানো সে আশ্বাসময় স্বাধীনতা?
হে যোদ্ধা,
আমার কাছে আপনার বীর পরিচয় অনেক পরে। তার আগে প্রথম পরিচয় আপনি মানুষ। আল্লাহ্'র সৃষ্টির সেরা সুন্দর মাখলুকাত মানুষ যারা জন্ম হতেই স্বাধীন। তবে আবার কোন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করলেন? বলেছিলেন আমাদের দাসত্ব হতে মুক্ত করবেন। আগে মানুষের দাস ছিলাম। কিন্তু আজ যে প্রযুক্তির দাস হয়ে গেছি! আজ আমাদের উন্মুক্ত জীবনে প্রযুক্তির খবরদারি চলে! বিজাতি তাড়িয়ে আজ স্বজাতিরাই একে অপরের শত্রু হয়ে গেছি! কথায় বা লিখায় স্বীকার হতে হয় নগ্ন হামলার। যে যা মুখে আসে তাই বলতে পারে। এই সেই স্বাধীনতা যার জন্য জীবন বাজী রেখেছেন?
হে মহাকথক,
মানুষ পরিচয়ের পর আপনার প্রথম পরিচয় আপনি মুসলমান যা আপনি সসম্মানে ধারণ এবং লালন করে থাকেন। একটা স্বাধীন দেশে সবাই নিজের মতো ধর্ম পালন করবে, তাই কি হবার নয়? তবে কেনো আজ ধর্ম নিয়ে লিখতে বা শব্দ চয়ন করতে বারবার ভাবতে হয়? কেনো হতে হয় অপদস্থ? কেনো পেতে হয় অর্বাচীনদের থেকে নানান তকমা? এই কি তবে সেই স্বাধীনতা?
হে সংস্কারক,
কথা ছিলো আমাদের একটি সভ্য জাতি উপহার দেবেন। কিন্তু আজ সেই নমুনাতো আর স্বপ্ন নেই, প্রকাশ্য। আজ লিখার জগতেও দেখি নূন্যতম ভদ্রতাবোধ নেই। নেই কারো প্রতি কারো নামমাত্র সম্মান! সম্বোধনে মনে হয় যেনো একে অপরের ইয়ার দোস্ত। "আপনি" শব্দটাতো বলতে গেলে বিলুপ্তপ্রায়! এই কি আমাদের শিক্ষা? এই কি আমাদের সভ্যতার নমুনা? এই কি ছিলো আপনাদের বীরত্বের উদ্দেশ্য?
হে মহাত্রাতা,
আজ আপনাদের মাঝেও ভূয়া বীরের আস্ফালন! হয়তো যারা শত্রুপক্ষের ইনফরমার ছিলো তারাই আজ আপনাদের মাঝে মিশে গেছে। নয়তো নিজেদের প্রতি নিজেদের সম্মানবোধের এতো অভাব কেনো? অনেকের আচরণেতো মনে হয় সামান্য ভাতা, নামমাত্র সুযোগ-সুবিধা, আর সুযোগ পেলে দেশ ছেড়ে বিদেশ বসে চলমান সমস্যা নিয়ে বড়-বড় বুলি আওড়ানোতেই লক্ষ লক্ষ প্রাণের দাম বিলীন! দেশ মুক্তির পর দেশ গড়ার দায়িত্ব কি ছিলো না? যদি দেশ রেখে ভিনদেশে পরে থাকাই মূল উদ্দেশ্য হয় তবে কেনো লোভ দেখিয়ে কেড়ে নিলেন তরতাজা প্রাণ?
হে মহামান্য,
আজ এসকল কারনেই আর ইচ্ছে করে না বাঁচতে। ইচ্ছে করে না অন্যের খবর জানতে, কিংবা নিজের খবর জানাতে। ইচ্ছে করেনা লিখতে। কি লাভ লিখে? কে পড়বে? কে মনে রাখবে? আমরা কি পেরেছি প্রয়াত মহামানবদের মনে রাখতে? সঠিকভাবে তাদের কর্মকে মূল্যায়ণ দিতে? পারছি কি যাঁরা বেঁচে আছেন তাদের পাশে দাঁড়াতে? একদা বিদ্রোহকবি-পল্লীকবি হবার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু আজ প্রযুক্তির দাস হয়ে তাঁদের নিয়ে চলমান ট্রল দেখে সব স্বপ্ন মরে গেছে। শুধু বাকি আছে দেহের মরণ। এই যখন অবস্থা তখন কিভাবে কলম চলবে বলুন?
প্রিয়,
আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষা শেষ করতে চাই। আজ এমন ধৃষ্টতা দেখালাম কারণ আপনার মতো মহান ব্যক্তি যখন আদেশ না করে লিখতে অনুরোধ করেন তখন অনেক কষ্টে দমিয়ে রাখা সুপ্ত বাসনা জেগে উঠে কুঁড়েকুঁড়ে খায়। তখন মন বলে চারপাশের সব ভেঙ্গে চুরমার করে দেই। হত্যা করি নিজেকে। কিন্তু যেহুতু নিজেকে হত্যা করলে পরপারে জামিনের কোনো সুযোগ নেই তাই মন বলে সেসব পূণ্য আত্মা হত্যার ব্রত গ্রহণ করি যাদের সঠিক মূল্যায়ণ করতে বা দেখতে পারছি না। মূল্যায়ণহীণভাবে অযত্নে-অবহেলায় এসব মূল্যবাণ প্রাণের বিচরণ নিজেকে ভীষণ ব্যাথিত করে। পরিশেষে আবারো মনে করিয়ে দেই, সবগুলো কথা কিন্তু নিজেকে আপনার চরণে শপিয়া দিয়া বয়ান করিলাম। এখন এই অপরাধের জন্য দয়া বা শাস্তি যাই বরাদ্দ করেন, নিতে প্রস্তুত আছি। তবুও আশা করি দয়া করে ভুল-ভ্রান্তি নিজ গুণে ক্ষমা করে দেবেন। সেইসঙ্গে আপনার দোয়ার মাঝে এই অধমেরে একটু ঠাঁই দেবেন। আল্লাহ্ আপনার সহায় হোন।
ফিআমানিল্লাহ্।