♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: ধর্মীয় বিষয় কষ্ট দিলে আন্তরিকভাবে অনুরোধ থাকবে আমার লিখা এড়িয়ে যাবার।
(ছবি নেট হতে)
ব্লগে লিখার সঙ্গে ছবি সংযোজন একটা বড় ব্যাপার। কারণ, অবশ্যই লিখার চাইতে ছবি বেশি পাঠক আকর্ষণে সক্ষম। আবার বিপরীতও। তাই ছবি যেমনি পাঠক টানে, তেমনি পাঠককে লেখক হতে বিচ্ছিন্নও করে দেয়।
ব্লগে সকল শ্রেণী, পেশা, ধ্যান, ধারণার মানুষ আছে। কিন্তু লিখার ক্ষেত্রে পরিচয় শুধুই ব্লগার। অন্যকিছু এখানে ধর্তব্য নয়। ঠিক তেমনি করে যে যেই ক্ষেত্রেরই হোক, লিখার ক্ষেত্রে কোনো সীমা নেই। একজন ডাক্তার ভালো রাজনৈতিক বিষয় বুঝলে তা নিয়ে ব্লগে লিখতেই পারেন। ডাক্তার বলে শুধু মেডিকেল রিলেটেড কিছু লিখতে হবে এই ধারণা অর্থহীন। তেমনি যখন লিখার প্রসঙ্গ রাজনীতি, তখন লিখার সাথে যুক্ত ছবিটিও প্রাসঙ্গিক হওয়া দরকার। সেক্ষেত্রে যদি লেখক মেডিকেল রিলেটেড ছবি দিয়ে নিজের আইডেন্টি বুঝাতে চান তিনি সমগ্র জীবনেও এমন আইডেন্টি ক্রাইসিস হতে বের হয়ে ব্লগার হতে পারবেন না! যদি এমন বেকুবী কার্য চলমান থাকে তবে-
*একজন গাইনোকোলজিস্টের পোস্টের ছবি কি হবে?
*একজন প্যাথলজিস্টের পোস্টের ছবি কি হবে?
*একজন সেনেটারী ব্যবসায়ীর পোস্টের ছবি কি হবে?
ব্লগ কোনো ভিজিটিং কার্ড নয়। তাই ব্লগের ছবি কারো আইডেন্টির ধারক বা বাহক হতে পারে না। ব্লগের ছবি হবে পোস্টের মূল বিষয়ের ধারক এবং বাহক। এটা যিনি সফলভাবে করতে পারবেন তিনিই নিজেকে আদর্শ ব্লগার প্রমাণ করতে পারবেন। নয়তো ছবি পাঠক হতে লেখককে শুধু বিচ্ছিন্নই করতে থাকবে।
আবার কেউ যদি কোনো নির্দিষ্ট ছবি ব্যবহারের মাধ্যমে লিখাকে ট্রেডমার্ক করে ফেলতে চায় তখন সেটা হবে আরো বড় বেকুবী। তখন আর তা লিখা নয়, পণ্য হয়ে যাবে। এটা অনেকটা মুদ্রাদোষের মতো। যেমন অনেকের অনেক ধরণের মুদ্রাদোষের কারণে সমাজে সেই মুদ্রাদোষের উপর তার নামকরণ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে লেখকেরও এমন নামকরণ অমূলক নয়। তখন ঘনঘন একই ঘরণার পোস্টের আমেজ পাঠককের মনে অনীহার সৃষ্টি করতে পারে।
তাই, ছবিকে লিখাকেন্দ্রীক করতে পারাই লেখকের দূরদর্শীতার স্বাক্ষর রাখে। আপনি কে তার চেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আপনি কি লিখছেন। আর যা লিখছেন তা যেনো ছবির মাধ্যমে রিপ্রেজেন্ট হয়। তবেই ছবি যুক্ত করা সার্থক। নয়তো সর্বদা একই ঘরণার ছবির ব্যবহার সব লিখাতে একই টাইটেল ব্যবহার করার মতো।
ব্লগিং অনেক বড় একটা ব্যাপার। টাইপ করতে জানলেই ব্লগার হওয়া যায় না। এজন্যে কমনসেন্স অনেক বড় একটা বিষয়। এই পর্যায়ে জানি অনেকের মনেই আমার বিপরীতে অনেক প্রশ্ন চলে এসেছে। হাহাহাহাহা…….
কষ্ট করে মন্তব্যে জানানোর আগেই বরাবরের মতো আমি তার উত্তর দিয়ে দিই। সবসময় বলেছি আমি ব্লগার নই। সমাজে কোথাও নিজেকে ব্লগার বলে পরিচয় দেই না। ব্লগার হওয়া অনেক সাধনার বিষয় যার ইচ্ছা বা সময় কোনোটাই আমার নেই।
অনেক গুরুগম্ভীর কথা হলো। এবার একটা কৌতুক দিয়ে শেষ করি।
কথার মাঝে ‘আপনার’ এবং ‘তুমি’ ঢুকিয়ে কথা বলার বাজে মুদ্রাদোষ অনেকেরই। এর উদাহরণ হিসাবে বলতে পারি, কয়েকদিন আগে আমাদের প্রতিবেশী আবুলের সঙ্গে কথা হলো। তার হাতে একটা বড় বাজারের ব্যাগ। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই, কী ব্যাপার? এত সাতসকালে ব্যাগ নিয়ে কী বাজার করতে যাচ্ছেন?’
প্রত্যুত্তরে আবুল বললেন, “আর বলবেন না ভাই! ‘আপনার’ ভাবীর হঠাৎ শখ হয়েছে বাসায় পুডিং বানাবে। আসলে ভাই হয়েছে কী, এ মুহূর্তে বাসায় ‘আপনার’ ডিম নেই। তাই বাজারে যাচ্ছি ‘আপনার’ ডিম কিনতে। ভাই, লেট হয়ে যাচ্ছে, আজকের মতো আসি ভাই। আরেকদিন কথা হবে।”
বুঝেন তাহলে কী অবস্থা! পরের দিন গলির মুখে চায়ের দোকানে দেখা হলো আমার আরেক প্রতিবেশী বাচ্চুর সঙ্গে। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘বাচ্চু ভাই, কেমন আছেন? কোথায় যাচ্ছেন এখন?’
প্রত্যুত্তরে বাচ্চু ভাই বললেন, “এইতো ভাই ‘আপনার’ ভালো আছি। দুঃখের কথা আর কী বলব! গত রাতে আমার মামাশ্বশুর স্ট্রোক করে মারা গেছেন হঠাৎ। এখন ভাই এই একটু যাচ্ছি ‘আপনার’ কুলখানি আর চল্লিশার অনুষ্ঠানে অংশ নিতে!”